প্রধান মেনু

সুপ্রীমকোর্ট দিবসে প্রধানমন্ত্রীর ও রাষ্ট্রপতির বাণী

প্রধানমন্ত্রীর বাণী :  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৮ ডিসেম্বর ‘সুপ্রীমকোর্ট দিবস’ উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন : “বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট ১৮ ডিসেম্বর ‘সুপ্রীমকোর্ট দিবস’ পালন করতে যাচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষে আমি সংশ্লিষ্ট সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। সকল নাগরিকের জন্য মৌলিক মানবাধিকার, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য এবং বাক-স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত করাই ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম লক্ষ্য। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর পরই দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭২ সালে জাতিকে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, সাম্য ও ন্যায় বিচারের এক অনন্য দলিল হিসেবে মহান সংবিধান উপহার দেন। জাতির পিতা ১৯৭২ সালের ১৮ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট উদ্বোধন করেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করার পর দেশে আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত হয়। হত্যাকারীদের দায়মুক্তি দিয়ে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ প্রণয়ন করে। ’৭৫ পরবর্তী সামরিক সরকার এবং বিএনপি-জামাত জোট সরকারের হত্যা, দমন, নির্যাতন ও নিপীড়নের কারণেই সুবিচারের পথ রুদ্ধ হয়। দেশের জনগণ আইনগত সহায়তা ও অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়।দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে জাতির পিতার হত্যার বিচারের দ্বার উন্মোচন করে। বিচার বিভাগের কার্যকর ও সাহসী পদক্ষেপের কারণে জাতির পিতার হত্যাকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করা সম্ভব হয়েছে। আমরা আইনের শাসন নিশ্চিত করতে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত অপরাধসমূহের বিচার করে যাচ্ছি। এক্ষেত্রে যথাযথ ভূমিকা রাখায় আমাদের বিচার বিভাগ প্রশংসার দাবি রাখে। জনগণের ন্যায় বিচার পাওয়ার সর্বশেষ প্রতিষ্ঠান হল সুপ্রীমকোর্ট। সুপ্রীমকোর্ট দেশের নাগরিকদের আইনগত অধিকার ও মৌলিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। অনেক সংগ্রাম ও ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি। আইনের শাসন ও গণতন্ত্র একে অপরের পরিপূরক। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় স্বাধীন বিচার বিভাগের কোন বিকল্প নেই। একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও আধুনিক বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় বর্তমান সরকার কাজ করছে। মামলার দীর্ঘসূত্রিতা ও মামলাজট নিরসনের লক্ষ্যে এবং বিচারকদের কাজের গতিশীলতা বৃদ্ধির জন্য আমরা তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহারসহ নানাবিধ আইনি সংস্কারমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। আমরা বিচার বিভাগসহ সবক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চাই। শোষণ-বঞ্চনামুক্ত ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করে আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার ও সুবিচার নিশ্চিত করা আমাদের লক্ষ্য। আমি আশা করি, সরকারি, বেসরকারি সকল সংস্থা, বিজ্ঞ বিচারক, আইনজীবী, নাগরিক সমাজসহ সকলের প্রচেষ্টায় আমরা উন্নত-সমৃদ্ধ জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে সক্ষম হব। আমি বাংলাদেশের সুপ্রীমকোর্ট দিবস ২০১৮ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সাফল্য কামনা করছি। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”

রাষ্ট্রপতির বাণী : 

রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ১৮ ডিসেম্বর সুপ্রীমকোর্ট দিবস ২০১৮ উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন : “সুপ্রীমকোর্ট দিবস ২০১৮’ উপলক্ষে আমি বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের সকল সম্মানিত বিচারপতি, বিজ্ঞ আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরপরই একটি সংবিধান প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ১৯৭২ সালের ৪ঠা নভেম্বর গণপরিষদে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান গৃহীত হয় এবং ১৬ ডিসেম্বর কার্যকর হয়। ১৯৭২ সালের ১৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট এর যাত্রা শুরু। গণতন্ত্রের বিকাশ ও আইনের শাসন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট প্রতিবছর ১৮ ডিসেম্বরকে ‘সুপ্রীমকোর্ট দিবস’ পালন করছে। এ উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাচ্ছি। উন্নয়নের জন্য গণতন্ত্র ও সুশাসনের বিকল্প নেই। আর গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাহী, আইন ও বিচার বিভাগের মধ্যে সম্পর্ক ও সমন্বয় খুবই জরুরি। আইনের শাসন, জনগণের মৌলিক অধিকার, মানবাধিকার রক্ষা এবং অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বিচার বিভাগের ভূমিকা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে একটি স্বাধীন ও শক্তিশালী বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠার সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা রয়েছে। এতে বিচারকদের দায়িত্ব পালনে স্বাধীনতা দেয়ার পাশাপাশি জনগণের মৌলিক অধিকার সুরক্ষা এবং সংবিধানের শ্রেষ্ঠত্ব সমুন্নত রাখতে বিচার বিভাগকে স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) অন্যতম লক্ষ্য ‘ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার’। এ লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে হলে সকলের জন্য আইনের আশ্রয় লাভসহ ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। আইনের আশ্রয়লাভ এবং ন্যায়বিচার পাওয়া দেশের প্রতিটি মানুষের সাংবিধানিক অধিকার। শোষণ ও বঞ্চনামুক্ত ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বার ও বেঞ্চ নিজ নিজ অবস্থান থেকে নির্মোহভাবে দায়িত্ব পালন করবেন এ প্রত্যাশা করি। আমি ‘সুপ্রীমকোর্ট দিবস ২০১৮’ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সফলতা কামনা করছি। খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”