প্রধান মেনু

কলেজছাত্রী তানিয়াকে হত্যা করেছে তার মা, ছোট বোনের জবানবন্দি,

নিজস্ব প্রতিনিধি: নোয়াখালীর মাইজদী শহরে কলেজছাত্রী তাবাসসুম তানিয়া চমক (২২) কে তার মা শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে ছোট বোন তাসনিম তাহসিন চাঁদনী। জেলা পুলিশের এক প্রেসব্রিফিংয়ে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। এক সহপাঠির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের কারণেই তানিয়ার মা মেয়েকে হত্যা করে রাতের আধাঁরে লাশ বাড়ির পাশের ডোবায় ফেলে রাখেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, গত ১১ নভেম্বর নোয়াখালী পৌরবাজার সংলগ্ন এলাকায় এই হত্যাকান্ড ঘটে। পরে ১৫ নভেম্বর বাড়ির পাশের ডোবা থেকে তানিয়ার অর্ধগলিত মৃতদেহ উদ্ধার করে সুধারাম থানা পুলিশ। ওই দিনই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তানিয়ার বন্ধু তাপসকে আটক করে পুলিশ। পরে জেলা পুলিশ সুপার মোঃ ইলিয়াছ শরীফের নির্দেশে হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচনের দায়িত্ব দেওয়া হয় জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি)। পরে বৃহস্পতিবার রাতে ডিবির ওসি আবুল খায়ের তানিয়ার মা সাজেদা আক্তার নিপু (৫৫), বোন চাঁদনি (১৯) ও মামা সোহেলকে পৌরসভার বাড়ি থেকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ করে হত্যাকান্ডের কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়।

শনিবার পুলিশ সুপার মো: ইলিয়াছ শরীফ নিজ সভাক্ষে আয়োজিত প্রেসব্রিফিংয়ে জানান, গত ১২ নভেম্বর মাইজদী শহরের জয়কৃষ্ণপুর এলাকার শাহজাদা এনামুল হক হিমেলের স্ত্রী সাজেদা আক্তার নিপু তার মেয়ে তানিয়াকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না উল্লেখ করে সুধারাম মডেল থানায় সাধারণ ডায়রি করেন। এরপর ১৫ নভেম্বর তাদের বসত ঘরের পাশে ডোবা থেকে পুলিশ তানিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে। তানিয়ার মা সাজেদা আক্তার নিপু(৪০), ছোট বোন তাসনিম তাহসিন চাঁদনী(১৯) ও মামা জাহিদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ তানিয়ার ছোট বোন তাসনিম তাহসিন চাঁদনী পুলিশকে জানায়, তার মা তানিয়াকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ গুম করে। শুক্রবার জেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো: শয়েব উদ্দিন খাঁন এই ঘটনায় চাঁদনীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন।

মা ও মামাকে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছে পুলিশ। যে কারণে হত্যা করা হয় তানিয়াকে: পুলিশ জানায়, নোয়াখালীর সোনাপুর ডিগ্রি কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী তাবাস্ধসঢ়;সুম তানিয়া সহপাঠি হিন্দু সম্প্রদায়ের ছেলে তাপসের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জাড়িয়ে পড়েন। তানিয়ার মা ঢাকা থেকে নোয়াখালীতে বাসায় ফেরার পর তাকে তার অনুপস্থিতিতে তাপস-তানিয়ার ঘনিষ্ট সম্পর্কের কথা বলে দেন চাঁদনী। এতে তার মা ক্ষিপ্ত হয়ে তানিয়াকে এলোপাথাড়ি মারধর ও লাথি মারেন। এ সময় তানিয়া অচেতন হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে মা, মামা ও বোন মিলে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তানিয়াকে শ্বাসরোধে হত্যা করে গভীর রাতে লাশ বাড়ির পাশের ডোবায় ফেলে দেন। পরে থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করেন তানিয়ার মা।

স্থানীয়রা জানান, তানিয়ার বাবা শাহাজাদা ব্যবসায়ীক কাজে ঢাকায় থাকেন। ৮-১০ দিন আগে সাজেদা আক্তার নিপু মেয়ে তানিয়া ও চাঁদনিকে বাসায় রেখে ঢাকায় যান। গত ১১ নভেম্বর হত্যাকান্ডের দিন তানিয়ার মা উপকূল এক্সপ্রেস যোগে মাইজদী ফেরেন। ফিরে তিনি তানিয়া তাকে মাইজদী কোর্ট রেলস্টেশনে এগিয়ে আনতে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়েছেন জানিয়ে থানায় জিডি করেন। পরে ১৫ নভেম্বর দুপুরে বাড়ির পাশের একটি ডোবায় তানিয়ার অর্ধগলিত লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।