ঢাকা, ৩০ বৈশাখ (১৩ মে) : করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ও কর্মহীন হয়ে পড়া চট্টগ্রাম বিভাগে বিভিন্ন প্রান্তিক ও হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে সরকারি অর্থ সহায়তা ও ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলায় জিআর (ক্যাশ) নগদ অর্থ সহায়তা, ভিজিএফ আর্থিক সহায়তা, শিশু খাদ্য ও গো-খাদ্য ক্রয় বাবদ নগদ অর্থ সহায়তা, ৩৩৩ হেল্পলাইনের মাধ্যমে ত্রাণ সহায়তা প্রভৃতি কর্মসূচির আওতায় গরিব, অসহায়, দুস্থ দিনমজুর জনগোষ্ঠীর মাঝে এসব ত্রাণ বিতরণ করা হয়।

চট্টগ্রাম জেলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় হতে কোভিড-১৯ দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় জিআর (ক্যাশ) নগদ খাতে বরাদ্দকৃত ৬ কোটি ৩৩ লক্ষ ২৫ হাজার টাকার মধ্যে এ পর্যন্ত ৫ কোটি ৩২ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে, যার সুফল ভোগ করেছে ৫ লক্ষ ১৮ হাজার ১৯০ জন প্রান্তিক কর্মহীন মানুষ। ভিজিএফ আর্থিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় এ জেলায় বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৮ কোটি ২৩ লক্ষ ৬৩ হাজার ৯৫০ টাকা যার মধ্যে এ পর্যন্ত ১ লক্ষ ৭০ হাজার ৫৯১ দুস্থ পরিবারের মাঝে ৭ কোটি ৬৭ লক্ষ ৬৫ হাজার ৯৫০ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। তাছাড়া এ জেলায় শিশু খাদ্য ক্রয় বাবদ বরাদ্দকৃত ৬৫ লক্ষ টাকার মধ্যে এ পর্যন্ত  ৫ হাজার ৩২৫ প্রান্তিক পরিবারের মাঝে ৪২ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। গো-খাদ্য ক্রয় বাবদ চট্টগ্রাম জেলায় বরাদ্দকৃত ১৫ লক্ষ টাকার মধ্যে এ পর্যন্ত ৬০টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ২ লক্ষ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। ৩৩৩ হেল্পলাইনের মাধ্যমে এ জেলায় এ পর্যন্ত ত্রাণ সহায়তা পেয়েছে আরো ২ হাজার ৩৭১টি পরিবার।

কক্সবাজার জেলায় জিআর (ক্যাশ) নগদ খাতে বরাদ্দকৃত ২ কোটি ২৮ লক্ষ ৫২ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে এ পর্যন্ত ২ কোটি ১৩ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা ৪১ হাজার ২১৮ টি হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। ভিজিএফ আর্থিক সহায়তা খাতে বরাদ্দকৃত ৭ কোটি ৮৬ লক্ষ ২৭ হাজার ১৫০ টাকার মধ্যে এ পর্যন্ত ৭ কোটি ৮৩ লক্ষ ৭৮ হাজার ৩০০ টাকা বিতরণ করা হয়েছে, যার ফলে উপকৃত হয়েছে এক লক্ষ ৭৪ হাজার ১৭৪ টি প্রান্তিক পরিবার ও ৮ লক্ষ ৩ হাজার ৭৭৯ জন মানুষ। তাছাড়া এ জেলায় ৩৩৩ হেল্পলাইনের মাধ্যমে ত্রাণ পেয়েছে আরো ১ হাজার ২৮৯টি পরিবার। জেলাটিতে শিশু খাদ্য ক্রয় বাবদ বরাদ্দকৃত ৮ লক্ষ টাকার মধ্যে আজ পর্যন্ত ৮২২টি হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। গো-খাদ্য ক্রয় বাবদ বরাদ্দকৃত ৮ লক্ষ টাকার মধ্যে এ পর্যন্ত ৭৬৩টি দুস্থ পরিবারের মাঝে ৪ লক্ষ ২৬ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

রাঙ্গামাটি জেলায় জিআর (ক্যাশ) নগদ খাতে বরাদ্দকৃত এক কোটি ৫৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার মধ্যে এ পর্যন্ত এক কোটি ৩৪ লক্ষ টাকা বিতরণ করা হয়েছে, যার ফলে উপকৃত হয়েছে ২৬ হাজার ৮০০ পরিবার ও ৮৯ হাজার ৬০০ জন প্রান্তিক কর্মহীন মানুষ। ভিজিএফ আর্থিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় জেলায় বরাদ্দকৃত এক কোটি ৪১ লক্ষ ৭৫ হাজার ৯০০ টাকার মধ্যে এ যাবৎ ২৬ হাজার হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে ১ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। তাছাড়া জেলায় শিশু খাদ্য ক্রয় বাবদ ১০ লক্ষ টাকা ও গো-খাদ্য ক্রয় বাবদ আরো ১০ লক্ষ টাকা নগদ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে যার বিতরণ প্রক্রিয়া অচিরেই শুরু হবে।

খাগড়াছড়ি জেলায় নগদ অর্থ সহায়তা (জিআর ক্যাশ) খাতে বরাদ্দকৃত এক কোটি ২৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার মধ্যে এ পর্যন্ত ১৯ হাজার ৮০১টি কর্মহীন পরিবারের মাঝে এক কোটি ৩ লক্ষ ১০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। ভিজিএফ আর্থিক সহায়তা খাতে বরাদ্দকৃত এক কোটি ৪৯ লক্ষ ২৫ হাজার ১৫০ টাকার পুরোটাই ৩৩ হাজার ২৬৭ টি দুস্থ অসহায় পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। তাছাড়া জেলাটিতে শিশু খাদ্য ক্রয় বাবদ ৯ লক্ষ টাকা ও গো-খাদ্য ক্রয় বাবদ আরো ৯ লক্ষ টাকা নগদ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ৩৩৩ হেল্পলাইনের মাধ্যমে জেলায় ত্রাণ সহায়তা পেয়েছে আরো ৬৫টি পরিবার।

বান্দরবান জেলায় জিআর (ক্যাশ) নগদ অর্থ সহায়তা খাতে বরাদ্দকৃত ৯৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার মধ্যে আজ পর্যন্ত ৭৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ১৪ হাজার ৯১৪টি হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। ভিজিএফ আর্থিক সহায়তা খাতে জেলাটিতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২ কোটি ৬৫ লক্ষ ৮৬ হাজার ৯০০ টাকা যার মধ্যে এ যাবৎ ৫৮ হাজার ৩০৭টি দুস্থ পরিবারের মাঝে ২ কোটি ৬২ লক্ষ ৩৮ হাজার ১৫০ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এ জেলায় শিশু খাদ্য ক্রয় বাবদ ৭ লক্ষ টাকা ও গো-খাদ্য ক্রয় বাবদ আরো ৭ লক্ষ টাকা নগদ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ৩৩৩ হেল্পলাইনের মাধ্যমে ইতোমধ্যে জেলায় ত্রাণ সহায়তা পেয়েছে ১৩২টি পরিবার। তাছাড়া জেলাটিতে এক হাজার ৪২৮টি অসহায় দরিদ্র পরিবারের মাঝে এক হাজার ৪২৮ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

লক্ষ্মীপুর জেলায় করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় সরকার কর্তৃক মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় জিআর (ক্যাশ) নগদ খাতে এক কোটি ৭৯ লক্ষ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে যার মধ্যে অদ্যাবধি ৩১ হাজার ৫০০টি হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে এক কোটি ৫৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। জেলায় ভিজিএফ সহায়তা (নগদ) অর্থ খাতে বরাদ্দকৃত ৩ কোটি ৩৭ লক্ষ ৭৬ হাজার ৫৫০ টাকার পুরোটাই ইতোমধ্যে ৭৫ হাজার ৫৯ টি দুস্থ, অসহায় পরিবারের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে যার ফলে উপকৃত হয়েছে ৩ লক্ষ ৭৫ হাজার ২৯৫ জন প্রান্তিক মানুষ। তাছাড়া এ জেলায় শিশু খাদ্য ক্রয় বাবদ ৯ লক্ষ টাকা ও গো-খাদ্য ক্রয় বাবদ ১৩ লক্ষ টাকা নগদ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে যা শীঘ্রই বিতরণ করা হবে।

নোয়াখালী জেলায় জিআর (ক্যাশ) নগদ খাতে বরাদ্দকৃত ২ কোটি ৮১ লক্ষ টাকার মধ্যে এ পর্যন্ত ৩৭ হাজার প্রান্তিক অসহায় পরিবারের মাঝে এক কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। ভিজিএফ আর্থিক সহায়তা খাতে এ জেলায় বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৭ কোটি ৫৪ লক্ষ ৮৮ হাজার ৮৫০ টাকা যার মধ্যে এ পর্যন্ত ৯১ হাজার ৬৯৫টি দুস্থ পরিবারের মাঝে ৪ কোটি ১২ লক্ষ ৬২ হাজার ৭৫০ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। ৩৩৩ হেল্পলাইনের মাধ্যমে ত্রাণ সহায়তা পেয়েছে আরো ৩০১টি পরিবার। তাছাড়া জেলায় শিশু খাদ্য ক্রয় বাবদ ৯ লক্ষ টাকা ও গো-খাদ্য ক্রয় বাবদ আরো ৯ লক্ষ টাকা নগদ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

ফেনী জেলায় জিআর (ক্যাশ) নগদ অর্থ সহায়তা খাতে বরাদ্দকৃত এক কোটি ৪১ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকার মধ্যে এক কোটি ১৯ লক্ষ টাকা ১৯ হাজার ৬৫৪ টি দুস্থ ও অসহায় পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। তাছাড়া জেলায় ভিজিএফ আর্থিক সহায়তা খাতে বরাদ্দকৃত এক কোটি ৬৫ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার পুরোটাই ৩৬ হাজার ৮০০টি প্রান্তিক হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। ফেনী জেলায় শিশু খাদ্য ক্রয় বাবদ বরাদ্দকৃত ৬ লক্ষ টাকা ইতোমধ্যে ৬০০ দুস্থ পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। গো-খাদ্য ক্রয় বাবদ জেলায় বরাদ্দকৃত ৬ লক্ষ টাকার বিতরণ প্রক্রিয়া অচিরেই শুরু হবে। তাছাড়া ৩৩৩ হেল্পলাইনের মাধ্যমে জেলায় ত্রাণ সহায়তা পেয়েছে আরো ৩০০টি পরিবার।

কুমিল্লা জেলায় জিআর (ক্যাশ) নগদ খাতে বরাদ্দকৃত ৫ কোটি ৮৬ লক্ষ ২৫ হাজার টাকার মধ্যে এ পর্যন্ত ৫ কোটি ২২ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা এক লক্ষ ৩ হাজার ৪২০টি হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। ভিজিএফ আর্থিক সহায়তা খাতে বরাদ্দকৃত ৮ কোটি ৬০ লক্ষ ১৩ হাজার টাকার পুরোটাই এক লক্ষ ৯১ হাজার ১৪০টি প্রান্তিক অসহায় পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। জেলায় শিশু খাদ্য ক্রয় বাবদ বরাদ্দকৃত ৪২ লক্ষ টাকার মধ্যে ইতোমধ্যে ২৫ লক্ষ টাকা ৫ হাজার দুস্থ পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। গো-খাদ্য ক্রয় বাবদ আরো ১৭ লক্ষ টাকা নগদ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে যার বিতরণ প্রক্রিয়া শীঘ্রই শুরু হবে। কুমিল্লা জেলায় শুকনো খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এক হাজার বস্তা। তাছাড়া ৩৩৩ হেল্পলাইনের মাধ্যমে জেলায় ত্রাণ সহায়তা পেয়েছে আরো ২ হাজার ৮২০টি পরিবার।

চাঁদপুর জেলায় জিআর (ক্যাশ) নগদ অর্থ সহায়তা খাতে ২ কোটি ৭২ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে যার মধ্যে এ পর্যন্ত ২ কোটি ৬০ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা ৫২ হাজার ৫০টি প্রান্তিক দরিদ্র পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। অন্যদিকে জেলায় ভিজিএফ আর্থিক সহায়তা খাতে বরাদ্দকৃত ৪ কোটি ৫৫ লক্ষ ৫১ হাজার ২৫০ টাকা এক লক্ষ এক হাজার ২২৫ টি দুস্থ ও অসহায় পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। তাছাড়া এ জেলায় শিশু খাদ্য ক্রয় খাতে ৮ লক্ষ টাকা ও গো-খাদ্য ক্রয় খাতে আরো ৮ লক্ষ টাকা নগদ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় জিআর (ক্যাশ) নগদ খাতে বরাদ্দকৃত ৩ কোটি ১৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার মধ্যে ২ কোটি ৬৩ লক্ষ ৬২ হাজার ৫০০ টাকা এবং ভিজিএফ আর্থিক সহায়তা খাতে বরাদ্দকৃত ৬ কোটি ১১ লক্ষ ১৯ হাজার ৯০০ টাকার মধ্যে এ পর্যন্ত ৬ কোটি ২ লক্ষ ৮০ হাজার ২০০ টাকা বিতরণ করা হয়েছে যার ফলে উপকৃত হয়েছে মোট এক লক্ষ ৮৯ হাজার ০৯৯টি প্রান্তিক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার। ৩৩৩ হেল্পলাইনের মাধ্যমে জেলায় ত্রাণ সহায়তা পেয়েছে আরো ১১৩টি পরিবার। তাছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় শিশু খাদ্য ক্রয় বাবদ ৯ লক্ষ টাকা ও গো-খাদ্য ক্রয় বাবদ আরো ৯ লক্ষ টাকা নগদ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, সংশ্লিষ্ট জেলা তথ্য অফিসারদের মাধ্যমে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস হতে প্রাপ্ত তথ্যসূত্রে এসব জানা গেছে।