স্বামীর নির্মম নির্যাতন থেকে স্ত্রীকে উদ্ধার করেছে শ্রীপুর থানার পুলিশ।
ইব্রাহিম মাহমুদ, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি।। গাজীপুরের শ্রীপুরে ২৮ দিন পর স্বামীর নির্যাতন থেকে গৃহবধূ রহিমা আক্তারকে (২৫) উদ্ধার করেছে শ্রীপুর থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে শ্রীপুর পৌরসভার উজিলাব গ্রামের স্বামীর বাড়ী থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। পরে শ্রীপুর থানা পুলিশের সহায়তায় আহত গৃহবধূকে তার স্বজনেরা শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রাখে।
নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ রহিমা আক্তার ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার জাঙ্গাইল গ্রামের মিয়া আলীর মেয়ে। গত ৯ বছর আগে শ্রীপুর পৌরসভার উজিলাব গ্রামের সব্বত আলীর ছেলে জহিরুল ইসলামের সাথে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁদের সংসারে ৭বছর বয়সী এক ছেলে সন্তান রয়েছে।
গৃহবধু রহিমা আক্তার জানান, গত ছয় মাস ধরে পরকীয়া সন্দেহে স্বামী জহিরুল নির্যাতন করে আসছে। অপর এক স্বজনের সাথে পরকীয়া সন্দেহে তাঁর স্বামী তাকে নির্যাতন করে। সম্প্রতি ২৮দিন যাবত ঘরে আটক করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে সিরিঞ্জ ও লোহার পেড়েক গরম করে ছ্যাঁকা দেয়। মাথায়, ওরু ও নখের ভিতর গরম সিরিঞ্জ ঢুকিয়ে দিয়ে নির্যাতন করতো। ছেলের ভবিষ্যতের কথা ভেবে তিনি এসব নির্যাতন সহ্য করেছেন। এতে ক্ষত হলেও তাকে চিকিৎসার কোন সুযোগ না দিয়ে ঘরে আটকে নিয়মিত নির্যাতন করতো। পরে বৃহস্পতিবার সকালে ঘরের দরজা খোলা পেয়ে দৌড়ে ঘর থেকে বের হয়ে তার পাশের (ন্যাশনাল পোল্ট্রি সংলগ্ন) তার বোনের বাড়িতে গিয়ে গলা ফাটিয়ে কান্না করতে থাকে। পরে তার স্বজনেরা পুলিশকে জানালে পুলিশের সহায়তায় রহিমাকে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রাখে।
গৃহবধুর স্বামী রফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে বিভিন্ন সময় স্ত্রীকে মারধোরের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তার স্ত্রীর সাথে কারো পরকীয়ার সন্দেহ রয়েছে। এ ঘটনায় উভয়ের মধ্যে ধাক্কা-ধাক্কি হয়। এতে তার স্ত্রী কপালে ও তিনি হাতে আঘাত পান। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের অভিযোগ তিনি এড়িয়ে যান।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদুল ইসলাম জানান, গৃহবধূকে নির্যাতনের খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে। নির্যাতনের ঘটনায় গৃহবধুকে থানায় অভিযোগ দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক জয়নব আক্তার জানান, নির্যাতিতা রহিমার কপালে গরম ধাতব বস্তুর ছেঁকা রয়েছে, এছাড়াও সারা শরীরেও বিভিন্ন স্থানে আঘাতেরও চিহ্ন রয়েছে।