২১ আগস্টের কুশীলবরা এখনও ষড়যন্ত্র করছে : সিলেটে তথ্যমন্ত্রী
সিলেট, ২০ আগস্ট ২০২০ : তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট যারা গ্রেনেড ছুঁড়ে শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিল, সেই কুশীলবরা এখনও ষড়যন্ত্র করছে। তাদের ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
মন্ত্রী আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে সিলেট বিভাগের চারজেলার সাংবাদিকদের মাঝে করোনাকালীন আর্থিক সহায়তার চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
ড. হাছান বলেন, যারা দেশের স্বাধীনতা চায়নি, বঙ্গবন্ধুকে যারা রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়েছিলো, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তারা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল।
মন্ত্রী বলেন, আজকেও যারা শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হচ্ছে তারাও ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। ২১ শে আগস্ট বঙ্গবন্ধুর মতো তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যা করার জন্য বৃষ্টির মতো গ্রেনেড ছোঁড়া হয়েছিল। সেই কুশীলবরা এখনও ষড়যন্ত্র করছে। সুতরাং, আমাদেরকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
সাংবাদিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যারা দেশের বিরুদ্ধে, অর্থনীতির বিরুদ্ধে, স্বাধীনতার চেতনার বিরুদ্ধে অসম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আঘাত হানতে চায়, ষড়যন্ত্র করে, তাদের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের আরও সোচ্চার হতে হবে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে জাদুকরী নেতৃত্বের পরিচয় দিয়েছেন। করোনাভাইরাস মোকাবেলার ক্ষেত্রেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে সক্ষমতা দেখিয়েছেন, এটা অতুলনীয়।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী ৭৪ বছর বয়স, এই সময়ে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় গত সাড়ে পাঁচ মাসে একদিনও বিশ্রাম নেননি। একই সময়ে বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করেছেন।
মন্ত্রী বলেন, অনেকেই বলেছিলো করোনার সময়ে দেশে হাজার হাজার মানুষ মরে যাবে। বলা হয়েছিলো, রাস্তায় লাশ পড়ে থাকবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো- একজন মানুষও অনাহারে মরেনি। করোনাভাইরাসে মৃত্যুর হার পৃথিবীতে যে ক’টি দেশে সবচেয়ে কম তাদের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। আমাদের দেশে করোনয় মৃত্যুর হার ১.২৫ থেকে ১.৩০ শতাংশ। যা ভারত-পাকিস্তানের চেয়েও কম।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, শেখ হাসিনার জাদুকরী নেতৃত্বে এসব সংকট মোকাবেলা করা সম্ভব হয়েছে বলে করোনাকালীন সময়েও গত জুলাই মাসের রপ্তানী বিগত ২০১৯ সালের জুলাই মাসের চেয়ে ১৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সঠিক নেতৃত্ব ও সঠিক সিদ্ধান্তের কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে।
দলমত নির্বিশেষে সকল সাংবাদিককে প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। এই স্তম্ভ তৈরি করেন সাংবাদিকরা। বর্তমান সরকার সাংবাদিকদের কল্যাণে কাজ করছে। যারা সরকারের ঘোর সমালোচক তাদেরকেও প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার।
করোনাকালে গণমাধ্যমের ভূমিকা প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, দু’একটি ব্যতিক্রম ছাড়া করোনা সংকটকালে গণমাধ্যম সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেছে। তিনি বলেন, সমালোচনা থাকবে। না হলে বহুমাত্রিক সমাজব্যবস্থা নষ্ট হয়ে যাবে। সরকার মনে করে, সমালোচনা পথচলাকালে শাণিত করে। কিন্তু সমালোচনা হতে হবে বস্তুনিষ্ট। সমাজককে সঠিকভাবে পরিচালনা করার জন্য। অন্ধের মতো একপেশে সমালোচনা গ্রহণযোগ্য নয়।
সিলেটের জেলা প্রশাসক এম. কাজী এমদাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও জেলা তথ্য অফিসের উপ পরিচালক জুলিয়া জেসমিন মিলির সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোল্লা জালাল, মহাসচিব শাবান মাহমুদ, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি তাপস দাশ পুরকায়স্থ, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী প্রমুখ। আলোচনা পর্ব শেষে সিলেট বিভাগের শতাধিক সাংবাদিকের মধ্যে প্রণোদনার চেক বিতরণ করেন মন্ত্রী।
এর আগে মন্ত্রী দুপুরে বিমানযোগে সিলেটে পৌঁছে সিলেট বেতার কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। পরে হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার জিয়ারত করেন মন্ত্রী।
« জনগণের সাথে দুর্ব্যবহার দুর্নীতির শামিল — জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী (পূর্বের খবর)