প্রধান মেনু

ব্রাজিলের সাও পাওলোয় মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন

যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে ব্রাজিলের বৃহত্তম নগরী এবং প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র সাও পাওলোয় ২২ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয়বারের মতো শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করা হয়েছে। এবারেই প্রথম বাংলাদেশ সময় অনুসারে ব্রাজিলে একুশের প্রথম প্রহরে ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। ব্রাজিলে বাংলাদেশ দূতাবাস এ আয়োজন করে। সাও পাওলোর বাংলাদেশি অধ্যুষিত ব্রাস শহরের কার্লোস দো কাম্পোস খেলার মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী শহিদ মিনারে রাষ্ট্রদূতের শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের মধ্য দিয়ে বিকেল পাঁচটায় অনুষ্ঠান শুরু হয়।

এরপর বাংলাদেশ কমিউনিটির বিভিন্ন সংগঠন ও প্রবাসী বাঙালিরা শহিদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। মূল অনুষ্ঠানের শুরুতে ভাষা শহিদদের সম্মানে নীরবতা পালন করা হয় এবং তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। এরপর শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম রাষ্ট্র ব্রাজিলের নানা শহরে বাংলাদেশের নাগরিকরা ছড়িয়ে থাকলেও সাও পাওলো শহরেই সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশির বসবাস।

২০১৮ সালে প্রথমবারের মত বাংলাদেশ দূতাবাস ব্রাসিলিয়ায় সাও পাওলো-তে প্রবাসী বাংলাদেশের নাগরিকদের সাথে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করেছিল। এ বছরও দূতাবাসের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তিন শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশের নাগরিক বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। রাষ্ট্রদূত মোঃ জুলফিকার রহমান তাঁর শুভেচ্ছা বক্তব্যে বাংলাদেশ দুতাবাসের এ আয়োজনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণের জন্য সাও পাওলো প্রবাসীদের ধন্যবাদ জানান এবং তাদের ঐক্যবদ্ধভাবে একে অন্যকে বিপদে সহায়তার অনুরোধ জানান।

১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারিতেই যে বাঙলি জাতির স্বাধীনতাযুদ্ধের বীজ রোপিত হয়েছিল, তা উল্লেখ করে তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত মাতৃভাষা বাংলা রক্ষার আন্দোলনই পরবর্তীতে বাঙালি জাতিকে স্বাধিকার আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করে। যার ফলশ্রুতিতে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। ১৯৯৯ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের ভাষা শহিদ দিবস পায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি।

২০১৭ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় সেখানে একটি শহিদ মিনার স্থাপনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি সাও পাওলো-তে একটি শহিদ মিনার নির্মাণের পরিকল্পনার কথা জানান। এ বিষয়ে তিনি প্রবাসীদের সহযোগিতা কামনা করেন। সাও পাওলো প্রবাসী ব্রাজিল-বাংলা ব্যান্ডের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ব্রাসিলিয়াতে অবস্থিত ব্রাজিলের জাতীয় গ্রন্থাগারের অডিটরিয়ামে ১৩টি ভিন্ন ভাষাভাষী শিল্পীদের পরিবেশনায় একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ব্রাসিলিয়াতে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্ধসঢ়;যাপন করা হবে ।