প্রধান মেনু

বাংলাদেশের জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে বিনিয়োগে আগ্রহী সুইজারল্যান্ড

ঢাকা, ২২ আষাঢ় (৬ জুলাই) : বাংলাদেশের জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী সুইজারল্যান্ড। আজ সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের সাথে তাঁর দপ্তর কক্ষে সাক্ষাৎকালে এ আগ্রহের কথা জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড।

এ সময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, সুইজারল্যান্ডের সাথে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ড দ্বিপাক্ষিক যেকোনো বিষয়ে অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারে। একইসাথে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করে দুই দেশের সহযোগিতার ক্ষেত্র আরো সম্প্রসারণ করা যেতে পারে।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধিসহ অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রাকৃতিক সম্পদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের একশ বছরের উন্নয়ন পরিকল্পনা মাথায় রেখে ব-দ্বীপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন এবং ইতোমধ্যে ডেল্টা গভর্ন্যান্স কাউন্সিল গঠন করেছেন। দেশের উন্নয়নে প্রাকৃতিক সম্পদ আমরা কাজে লাগাচ্ছি, জনসাধারণের খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা পূরণ করছি। সরকারের নানা পদক্ষেপে কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে অভাবনীয় পরিবর্তন হয়েছে।

মন্ত্রী  আরো বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী না হলেও বিশ্বের অন্যতম জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে জলবায়ুর ক্ষতিগ্রস্ত দেশসমূহের জন্য তহবিল গঠনে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব রেখেছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিপূরণে উন্নত দেশসমূহের এগিয়ে আসা উচিত। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিপূর্ণ দেশও বাংলাদেশ। বন্যাসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে দেশের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। সরকার ক্ষতি কাটিয়ে জলাবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার জন্য সরকার বিশেষ প্রণোদনা ও অন্যান্য সহায়তা দিয়ে থাকে।

রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড বলেন, দুই দেশের সহযোগিতার ৫০ বছর পূর্তিতে ২০২২ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রসহ নতুন সহযোগিতার কর্মসূচি নিয়ে সুইজারল্যান্ড কাজ করতে চায়। এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলা সংক্রান্ত কার্যক্রম বৃদ্ধি করা। এর মধ্যে অন্যতম জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিযোজন ও জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি হ্রাস বিষয়ক কার্যক্রমে অর্থায়ন।

বাংলাদেশের মতো অন্য কোনো দেশে একশ বছরের পরিকল্পনা দেখিনি উল্লেখ করে নাথালি চুয়ার্ড আরো বলেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের মাইলফলক অর্জন করেছে। এক্ষেত্রে সুইজারল্যান্ড অবদান রাখতে চায়। বাংলাদেশের জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ চরাঞ্চলে প্রাণিসম্পদ খাতে সুইজারল্যান্ডের বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। সুইজারল্যান্ডের সরকারি ও বেসরকারি খাতের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানও এক্ষেত্রে কাজ করতে আগ্রহী।

শ ম রেজাউল করিম যোগ করেন, বর্তমানে আমরা মাংস উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ঈদুল আজহায় কোরবানির জন্য চাহিদার অতিরিক্ত গবাদিপশু আমাদের রয়েছে। দেশের সব মানুষের চাহিদা পূরণ করে মাংস রপ্তানির লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। বিশ্বের অনেক দেশ আমাদের কাছ থেকে মাংস আমদানি করতে চায়। সে সব দেশের চাহিদা অনুযায়ী আন্তর্জাতিক মানের মাংস সরবরাহ আমাদের লক্ষ্য। এজন্য দেশে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন মাননিয়ন্ত্রণ ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ বৈদেশিক বিনিয়োগের জন্য অত্যন্ত অনুকূল ও বন্ধুত্বপূর্ণ একটি দেশ। সুইজারল্যান্ডের সরকারি ও বেসরকারি খাত বাংলাদেশের কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে সহজেই বিনিয়োগ করতে পারে। সুইজারল্যান্ডের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের দুগ্ধ শিল্পসহ খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে বিনিয়োগ করতে পারে। সরকার সবধরনের সুবিধা প্রদান করবে।