প্রধান মেনু

বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলন দিবস পালিত হলো কলকাতায়

কলকাতা, ১৮ এপ্রিল : বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের পতাকা প্রথম উত্তোলিত হয়েছিল ভারতের কলকাতায় বাংলাদেশ মিশনে ১৯৭১ সালের ১৮ এপ্রিল দুপুর ১২ টা ৪১ মিনিটে। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল কুষ্টিয়ার বৈদ্যনাথ তলায় – বর্তমান মুজিবনগর- বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ নেয়ার পরদিনই কলকাতায় পাকিস্তানের মিশন ‘বাংলাদেশ মিশন’ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

সেই দিনটিকে স্মরণ করে আজ সকালে কলকাতায় উপ-হাইকমিশনের কর্মকর্তাবৃন্দ বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নিয়ে কলকাতা উপ-হাইকমিশন ভবনের চারদিকে প্রদক্ষিণ করেন। পতাকার চার প্রান্তে চার উইং প্রধান কাউন্সেলর (শিক্ষা ও ক্রীড়া) রিয়াজুল ইসলাম, কাউন্সেলর (কনস্যুলার) মোঃ বশির উদ্দিন, প্রথম সচিব (প্রেস) ড. মোঃ মোফাকখারুল ইকবাল, প্রথম সচিব (বাণিজ্যিক) মোঃ শামছুল আরিফ ও মাঝে উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান এবং মিনিস্টার (রাজনৈতিক) ও দূতালয় প্রধান বি এম জামাল হোসেন পতাকা ধরে উপ-হাইকমিশন প্রাঙ্গণ ঘুরেন। পরে পতাকা উত্তোলনের নিয়ম যথাযথভাবে মেনে জাতীয় সঙ্গীতের সাথে উত্তোলন করা হয়। পতাকা উত্তোলন করেন উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান।

পতাকা উত্তোলনের ব্যাপারে তৌফিক হাসান বলেন, আজকের দিনটি বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস ডে হিসেবে উদযাপিত হচ্ছে। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর দিক নির্দেশনায় দেশের মানুষ এক হয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে দেশকে স্বাধীন করে পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশের স্থান করে নিয়েছে এবং এক্ষেত্রে বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনগুলোর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।

১৯৭১ সালের ১৮ এপ্রিল কলকাতায় পাকিস্তানের উপ-দূতাবাসে কর্মরত ৭০ জন বাঙালি কর্মকর্তা-কর্মচারি বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করে পাকিস্তানের পতাকা নামিয়ে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেছিলেন। এ পতাকা উত্তোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তৎকালীন মিশন প্রধান এম হোসেন আলী। পতাকা উত্তোলনের পর তাৎক্ষণিকভাবে দূতাবাসে কর্মরত পাঁচজন পাকিস্তানী কর্মকর্তাসহ তাদের অনুগত ১৫ জন কর্মচারি ব্যতীত ৭০ জন বাঙালি কর্মকর্তা-কর্মচারি নিয়ে এম হোসেন আলী মুজিবনগর সরকারের নির্দেশনায় মিশন পরিচালনা করেছিলেন। ১৯৭১ সালের ১৮ এপ্রিলের পতাকা উত্তোলনের এ ঘটনার পর বিশ্ববাসীর দৃষ্টি পড়েছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ওপর। কলকাতা মিশনের পতাকা উত্তোলন বহির্বিশ্বে আরও কয়েকটি মিশন অনুসরন করেন। এ সংবাদটি ১৯৭১ সালের ১৯ এপ্রিল কলকাতার সকল পত্রিকায় সচিত্র প্রতিবেদন আকারে প্রকাশিত হয় যা সারাবিশ্বে আলোড়ন তোলে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে বিশ্বনেতৃবৃন্দের সমীহ আদায় করতে সহায়তা করেছিল।