প্রধান মেনু

বজ্রপাতের আতংকেই প্রান গেলো জান্নাত একাডেমী হাই স্কুলের শিক্ষিকা  ” শিমু “

শামীমা আক্তারঃ রাজধানী মিরপুর পল্লবীতে গত  ০৫ জুন ২০২১ ইং তারিখ শনি বার বেলা  ১ টা ৪৫ মিঃ মিরপুর ১১ নাম্বার জান্নাত একাডেমী হাই স্কুলের মরহুম সাবেক প্রধান শিক্ষক ওসমান গনীর ছোট মেয়ে বাংলা বিষয়ের সিনিয়র শিক্ষিকা ফৌজিয়া বেগম শিমু (৪২)  বজ্রপাতের বিকট শব্দ শুনতে পেরে আতংকে যায়গায় স্টোক করে ইন্তেকাল করেছেন ( ইন্না-লিল্লাহ ওয়া ইন্না লিল্লাহি রাজিউন )।  মৃত্যু কালে তার স্বামী সহ, তিন ছেলে এক মেয়ে ও সাজানো সংসার রেখে গিয়েছেন।
তথ্য চিত্রে জানা যায়,  শিক্ষিকা ফৌজিয়া বেগম শিমু এবং তার স্বামী মোঃ আলমগীর হোসেন জান্নাত একাডেমী হাইস্কুল (এমপিও ভু্ক্ত ) দু”জনেই একই সাথে প্রভাতী শাখায় সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।
মরহুমা শিমু বাংলা বিষয়ে শিক্ষিকা এবং তার স্বামী আলমগীর হোসেন হিসাব বিজ্ঞান / ব্যবসা শাখায় – শিক্ষার্থীদের পড়াতেন।
জরিপ করে জানায়ায় – জান্নাত একাডেমী হাইস্কুলের শিক্ষিকা শিমু ৫ জুন বেলা ১টা ৩০ মিঃ এর সময় যোহরের নামাজ শেষ করে তার দুই ছেলে আদিত্য-১২ ও আরাদ্য-০৬ বছরের, মিরপুর ১১ নাম্বার নান্নু মার্কেটের পাশে আল কোরআন কওমি মাদ্রাসা কোচিং এ আনতে যায়।  ছেলেদেরকে নিয়ে তার নীজ বাড়ী ব্লক-এ,রোড-২১,বাসা-১৬,মিরপুর – ১১, পল্লবী,ঢাকা-১২১৬  কিন্ত বাসায় তার আর যাওয়া হলোনা ! মাঝ পথেই ভাষানীর রোডে ওয়ালটন এর সামনে আসা মাত্রই বজ্রপাত সৃষ্টি হলে বিধাতার লিখন , বিধাতার ডাকে দুই ছেলে সন্তানকে রেখে তাকে একাই চলে যেতে হলো পরোকালে।
আরো জানাযায়, বজ্রপাতের বিকট শব্দেই আতংকে ফিকস্ট হয়ে যায়গায় দাড়িয়ে থাকে।  ( ছোট ছেলে আদিত্য – ০৬) ভাস্য মতে,  এলাকার লোকজন এগিয়ে এসে তাকে লড়াচড়া দিলেও কোন সাড়া শব্দ নাপেয়ে ১বার,২ বার  ৩ বার গায়ে স্পর্শ করিলে ৪র্থ বারে মাটিতে লুটে পড়ে যায়।
সাথে থাকা ২ ছেলেকে এলাকার লোকজন বাসায় দিয়ে যায় এবং স্কুল শিক্ষিকা শিমুকে তার বড় ছেলে দ্বীপ-১৭ বছর ও এলাকার লোকজন সহ  ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে নিয়ে গেলেও কর্তব্য চিকিৎসকরত (ডাক্তার)  মৃত্যু বলে ঘোষনা দিলেন। শিক্ষিকা শিমুর আর বাসায় ফেরা হলোনা !  সে সময়ে তার স্বামী আলমগীর মাস্টার উত্তরায় এক বিশেষ কাজে ছিলেন। এলাকার লোকজন মাস্টার আলমগীরকে তার স্ত্রীর মৃত্যু সংবাদ দিলেন। পরে মরহুমার স্বামী আলমগীর মাস্টার এসে কাফন / জানাজা শেষ করে গ্রামের বাড়ী শরিয়ত পুর জেলার পূর্ব ডামুডিয়া ০৬ /০৬ / ২০২১ইং তারিখ সকাল ০৮ টা ৩০ মিঃ এর সময়  পারিবারিক গোরস্থানে দাফন সম্পূর্ণ করেন এবং মরহুমার বিদেহী আত্নার মাগফেরাত কামনা করা হয়।
এ বিষয়ে মরহুমা শিক্ষিকা শিমুর,  স্বামী আলমগীর মাস্টার এর নিকট দৈনিক খবরের আলো প্রতিবেদক জানতে চাইলে তিনি উত্তরে গভীর শোক কন্ঠে বলেন  ” মৃত্যু চিরন্তন সত্য ” তবে এ মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না ?
যে লোক পাঁচ মিনিট আগে আমার সাথে ফোনে কথা বলেছে সেই লোকের মৃত্যু কি ভাবে মেনে নিতে পাড়ি ? আমি এসে আমার প্রিয় সহধর্মিনী ফৌজিয়া বেগম শিমুকে আর জিবীত পাইনি।  যদি বজ্রপাতের আঘাতে মারা যেতো তাহলে তার শরীরে কিছু নমুনা দেখা যেতো এবং তার সাথে থাকা আমার দুুুই বাচ্চার কিছুনা কিছু ক্ষতি হতো।  ” ইনশাআল্লাহ ”  আমার বাচ্চারা ভালো আছে। তবে আমার মনে হয় বজ্রপাতের বিকট আওয়াজ হওয়াতে ভয়তে হয়তো স্টোক করেছে।
আমি এসে তাকে জিবীত পাইনী। আমাদের বিয়ের বয়স প্রায় ১৮/১৯ বছর, আমরা একই স্কুলে প্রভাতী শাখার শিক্ষক ছিলাম, আজ আমার সাজানো গোছানো সংসারটি তছ নছ হয়ে গেলো। আপনারা আমার ছেলে মেয়ে ও মরহুমার জন্য দোয়া করবেন ।
জান্নাত একাডেমী হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সদস্য সচিব এ,টি,এম দেলোয়ার হোসেন খাঁন  এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন মরহুমা শিক্ষিকা ফৌজিয়া বেগম শিমু, আমাদের এই স্কুলে শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োযিত ছিলেন প্রায় ১৫/১৬ বছর তার মধ্যে আমি কোন দিন দেখি নাই যে ,  কাহারো সাথে কোন দিন একটু মন মানিল্য হয়েছে। সে অত্যন্ত ভালো প্রকৃতির লোক ছিলেন। তার অকাল মৃত্যুতে আমরা গভীর শোক বেদনা জানাচ্ছি  অত্র স্কুলের সমস্ত শিক্ষক, শিক্ষিকা / শিক্ষার্থীরা গভীর শোক প্রকাশ করছি।
স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সম্মানিত সভাপতি জনাব, আঃ রউফ নান্নু এবং ম্যানেজিং কমিটির সদস্য শামীমা আক্তার   ‘র’ নিকট জানতে চাইলে তারা বলেন ফৌজিয়া বেগম শিমু একজন নর্ম ভদ্র প্রকৃতির লোক ছিলেন, কোন দিন কাহারো সাথে উচ্চ  স্বরে কথা বলেনী। মরহুমার এই অকাল মৃত্যতে আমাদের এই জান্নাত একাডেমী হাই স্কুলের সকল ম্যানেজিং কমিটির সদস্য,  শিক্ষক, শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীরা গভীর শোক প্রকাশ করছি। আল্লাহু তায়ালা  যেন মরহুমার জীবনের সমস্ত গুনাহ্ মাফ করে দিয়ে তাকে জান্নাতের সর্বোচ্চ স্হানে অবস্থান করে দেন । আমরা তার বিদেহী আত্নার মাগফেরাত কামনা করছি- আমিন।