প্রধান মেনু

পাইকগাছায় সরকারি সম্পত্তির উপর নীতিমালা উপেক্ষা করে ইট ভাটা স্থাপন : ভাটা বন্ধের দাবীতে জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ

পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি ॥ খুলনার পাইকগাছার বোয়ালিয়াস্থ হিতামপুর মৌজার খাস সম্পত্তির উপর ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন আইন অমান্য করে এসবি ব্রিকস মালিক নদীর কুল থেকে মাটি কেটে ও বালু তুলে মজুদ করছে। শুরু করেছে যাবতীয় কাযক্রম। সম্প্রতি এলাকাবাসী ভাটা মালিকের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবর গণস্বাক্ষরিত অভিযোগ দিয়েছে। অভিযোগ ও সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বোাায়ালিয়াস্থ হিতামপুর মৌজায় কপোতাক্ষ নদের এসবি ব্রিকস ভাটা স্থাপিত। সরকারি নিয়ম-নীতি অমান্য করে বছরের পর বছর ভাটা মালিক সমীরণ সাধু যথেচ্ছা ভাটার কাযক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন আইন ২০১৩ ও সংশোধনী আইন ২০১৯ এর বিধান অমান্য করে ভাটার কাযক্রম চলছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২/৩ বিঘা জমির উপর ভাটা ও ঘর নির্মাণ করে ব্যবহার করছে।

কপোতাক্ষ নদের কুল থেকে মাটি কেটে, বালু তুলে ভাটার কাজে লাগাচ্ছে। এর ফলে প্রতি বছর ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। গত বছর এ এলাকায় প্রায় আধা কিলোমিটার জুড়ে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়। ৬০/৭০ বিঘা জমি বাদ রেখে বিকল্প বাঁধ দেয়া হয়। যাতে সরকারের প্রায় কোটি টাকা খরচ হয় বলে উপজেলা পাউবো সুত্রে জানা যায়। কয়েক মাস সমস্ত এলাকা পানিতে তলিয়ে থাকায় লাখ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। ভাটার পাশে ওয়াপদার রাস্তা। যার পাশে হাজার হাজার বিঘা কৃষি জমি। যেখানে প্রতি বছর ধান ও চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রকার মাছ চাষ হয়ে আসছে। এছাড়া ভাটার পাশে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, মন্দির, ৩শ বিঘার বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)’র বীজ উৎপাদন খামার। ভাটার পাশেই মুসলিম, জেলে, সাধু, পাল সহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ঘনবসতি এলাকা। এলাকা জুড়ে আছে বনভুমি।

বৃক্ষ-নার্সারী বাগান, আম,জাম, কলা, কাঁঠাল, নারকেল মেহগনি সহ বিভিন্ন প্রকার বনজ ফলজ প্রজাতির গাছ। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসবি ব্রিকস এর নামে কয়েক বছর ধরে লাইসেন্স নেই, নেই পরিবেশ ছাড়পত্র। এ ব্যাপারে ভাটা মালিক সমীরন সাধু কাছে জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, আমি প্রতি বছর ৪/৫ লাখ টাকা খরচ করে ভাটা চালাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, আমি সমীরন সাধু আমাকে কেউ কিছু করার ক্ষমতা রাখে না। আমি আমার কাজ চালিয়ে যাব। উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও ফরিদ উদ্দীন বলেন, আমাদের জায়গার ব্যাপারে ভাটা মালিককে চিঠিও দিয়েছি।

কিন্তু তাতে তিনি কোন গুরুত্ব দেননি। স্থানীয় শেখ সুজনসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, ভাটার কারণে এক কথায় পরিবেশ মারাত্মক ভাবে নষ্ট হচ্ছে। ভাটা মালিক প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পায় না। আমরা ভাটা বন্ধের দাবীতে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। ৬ মাস আগে স্থানীয় শেখ রাজিবের মেয়ে ও বোয়ালিয়া হিতামপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেনীর ছাত্রী রিয়া খাতুন ভাটার ব্যবহৃত গাড়ীতে দুর্ঘটনায় একটি পা ভেঙ্গে যায়। দ্রুত ভাটা বন্ধের দাবীতে এলাকাবাসী ফুঁসে উঠেছে।