আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবসে রাষ্ট্রপতির বাণী

ঢাকা, ১৫ আশ্বিন (৩০ সেপ্টেম্বর) : রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন আগামীকাল ‘আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস ২০২৩’ উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন: “সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও ‘আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস ২০২৩’ উদ্যাপনের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘Fulfilling the Promises of the Universal Declaration of human Rights for Older Persons: Across Generations’ অর্থাৎ ‘সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণায় প্রবীণদের জন্যে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি পূরণে প্রজন্মের ভূমিকা’ যথার্থ ও সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।
তারুণ্যের উদ্যম ও প্রবীণের অভিজ্ঞতার সমন্বয়ে দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়। সভ্যতার অগ্রযাত্রায়ও প্রবীণদের অবদান অনস্বীকার্য। চিকিৎসা বিজ্ঞানের উৎকর্ষ ও আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতির কারণে বাংলাদেশে প্রবীণের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রবীণদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে সংবিধানের রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে সামাজিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত ১৫(ঘ) অনুচ্ছেদ সংযুক্ত করেন। প্রবীণদের মর্যাদাসম্পন্ন, দারিদ্র্যমুক্ত, কর্মময়, সুস্থ ও নিরাপদ পারিবারিক ও সামাজিক জীবন নিশ্চিত করতে সরকার ‘জাতীয় প্রবীণ নীতিমালা, ২০১৩’ ও ‘পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ আইন, ২০১৩’ প্রণয়ন করেছে। প্রবীণদের সামাজিক নিরাপত্তা বিধানে সরকার ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে বয়স্ক ভাতা প্রবর্তন করে। বয়স্ক ভাতা প্রদান কার্যক্রমের আওতায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট ৫৮ লাখ ১ হাজার জন প্রবীণ ব্যক্তিকে বয়স্ক ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। বয়স্ক ভাতার সুবিধাভোগীর সাথে ভাতার পরিমাণও ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি করা হচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তির অপার সম্ভাবনার যুগে বাংলাদেশ ডিজিটালাইজেশনের পথে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। প্রবীণদের কল্যাণে উন্নত ও আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের প্রবীণ নাগরিকগণ যাতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সকল সুযোগ-সুবিধা ও প্রযুক্তিগত সাম্যতা অর্জন করতে পারেন, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করার আহ্বান জানাই।
বার্ধক্যে নিঃসঙ্গতা ও একাকীত্বসহ বয়সজনিত বহুবিধ শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। সমাজের সম্মানিত ও শ্রদ্ধেয় এই জনগোষ্ঠী যেন শেষ বয়সে সুন্দরভাবে জীবনযাপন করতে পারে সে জন্য সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি জনহিতৈষী সংগঠন ও বিত্তবান ব্যক্তিদের এগিয়ে আসা অত্যন্ত জরুরি। পাশাপাশি প্রবীণবান্ধব সমাজ গঠনে পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধেও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আমি বিশ্বের প্রবীণদের সুস্বাস্থ্য, শান্তিময় ও মর্যাদাপূর্ণ জীবন কামনা করছি।
আমি ‘আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস ২০২৩’ উদ্যাপনের সফলতা কামনা করি।
জয় বাংলা।
খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”