বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিনের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতির বাণী

ঢাকা, ১২ আশ্বিন (২৭ সেপ্টেম্বর) : রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন আজ প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিনের ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন : “প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিনের ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকীতে আমি তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।
শহিদ মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিন ১৯৩০ সালের ১৭ মার্চ গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বড়হরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একাধারে একজন রাজনীতিবিদ, আইনজীবী ও সমাজকর্মী। মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিন মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন এবং মুক্তিযুদ্ধে তিনি সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও তিনি ঐতিহাসিক আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা ‘পরিচালনা কমিটি’ এবং মামলা পরিচালনার জন্য গঠিত ‘মুজিব তহবিল’ এর আহ্বায়ক ছিলেন। ১৯৭০ এবং ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিন যথাক্রমে প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য এবং জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিন দীর্ঘদিন বৃহত্তর ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পরবর্তীতে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশ রেডক্রস সোসাইটিসহ বিভিন্ন জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে গৌরবময় ভূমিকার জন্য তাঁকে ‘স্বাধীনতা পদক’ প্রদান করা হয়।
১৯৮৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তৎকালীন স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে সারা দেশব্যাপী আহূত সকাল-সন্ধ্যা হরতালের সমর্থনে কালীগঞ্জে একটি মিছিলে নেতৃত্ব দেয়ার সময় সন্ত্রাসীদের হাতে ময়েজউদ্দিন নির্মমভাবে নিহত হন। বর্বরোচিত এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আগুনের স্ফুলিঙ্গের মতো সারাদেশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর এ আত্মদানের মধ্য দিয়ে দেশব্যাপী আন্দোলন আরো জোরালো হয়ে ওঠে এবং স্বৈরাচারের পতন ত্বরান্বিত হয়।
শহিদ ময়েজউদ্দিন ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ ও পরীক্ষিত সহচর। সাদামাটা জীবনযাপনে অভ্যস্ত শহিদ ময়েজউদ্দিন আজীবন মাটি ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করে গেছেন। তাঁর জীবন ও কর্ম তরুণ প্রজন্মের জন্য অনুগ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
আমি শহিদ মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিনের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
জয় বাংলা।
খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”