সরকারি হাসপাতালের নার্স ও কর্মচারীদের ঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে—স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ঢাকা, ১৯ আষাঢ় (৩ জুলাই): স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশের সব সরকারি হাসপাতালের নার্সদের ঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে। সরকারি হাসপাতালের কর্মচারীদের কাজে অবহেলার জন্যই হাসপাতাল পরিপূর্ণ পরিচ্ছন্ন হচ্ছে না, রোগীদের সাথে থাকা লোকদের ভিড় থামানো যাচ্ছে না, দালালদের দৌরাত্ব কমানো যাচ্ছে না। ফলে হাসপাতালের সেবার মানও কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে নেয়া যাচ্ছে না। সরকারি হাসপাতালগুলো সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, প্রতিটি রোগীর সাথে তিন থেকে পাঁচ জন করে ভিজিটর দিনের বেলা এমনকি রাতেও হাসপাতালে অবস্থান করে থাকে। এতে হাসপাতালে রোগীদের সেবা পাওয়া বিঘ্নিত হয়। মন্ত্রী বলেন, সরকারি হাসপাতালে সাধারণ মানুষ কাঙ্ক্ষিত সরকারি সেবা পাবে না, এটা চলতে পারে না। হাসপাতালে যার যা ডিউটি তাকেই সেটি করতে হবে। তা না হলে হাসপাতালের দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আজ রাজধানীর মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে দেশের সকল জেলার সিভিল সার্জন ও হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়কদের সাথে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক একটি বিশেষ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় কর্মকর্তাদের উদ্দেশে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এ সময় দেশের সব সরকারি হাসপাতালে সেবামূলক কাজের মান আরো কীভাবে বৃদ্ধি করা যায়, কীভাবে হাসপাতালগুলো মানসম্পন্ন ও পরিচ্ছন্ন রাখা যায়, কর্মচারী ও নার্সদের ডিউটি বাড়িয়ে দিয়ে কীভাবে রোগীর সাথে অতিরিক্ত ভিজিটর কমানো যায়, নার্স ও ডাক্তারদের চলমান ডিউটি কতটা কার্যকর হচ্ছে ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ করণীয় বিষয়গুলো তুলে ধরে কর্মশালায় উপস্থিত ও জুম লাইভে যুক্ত কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেন মন্ত্রী।
রোগীর সেবা মান বাড়ানোর গুরুত্ব তুলে ধরে মন্ত্রী জানান, প্রতিদিন সারা দেশে অন্তত ১০ লাখ সাধারণ মানুষ সরকারি হাসপাতালে সেবা নিতে আসে। ১০ লাখ মানুষকে সেবা দেবার জন্য সরকারি হাসপাতালও করা হয়েছে জেলা শহর থেকে একেবারে ইউনিয়ন পর্যায়ে। তিনি বলেন, লোকবল আমাদের ঘাটতি আছে ঠিকই, তবে আমাদের যতটুকু সম্পদ আছে সেটি দিয়েই দেশের মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিতে হবে। এজন্য যারা হাসপাতালে কর্মরত আছে তাদেরকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে। সরকারি সেবা পাওয়ার ঘাটতি নিয়ে মানুষের অভিযোগগুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে। মন্ত্রী বলেন, দেশের সাধারণ মানুষের সঠিক সেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও স্বাস্থ্যখাতের দিকে বিশেষ মনোযোগ দিয়েছেন। মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবায় অবহেলা কোনোভাবেই মেনে নেয়া হবে না।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. মুহ. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত সচিব (হাসপাতাল) নাজমুল হক খান, অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রশাসন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক পরিকল্পনাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আগত সিভিল সার্জন ও হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়কগণ উপস্থিত ছিলেন।