প্রধান মেনু

আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর জাতীয় সমাবেশ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী

ঢাকা, ২৯ মাঘ (১১ ফেব্রুয়ারি) : রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর জাতীয় সমাবেশ উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন : “বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৩৭তম জাতীয় সমাবেশ উপলক্ষে আমি এ বাহিনীর সকল সদস্যকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। ১৯৪৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি আনসার বাহিনী প্রতিষ্ঠা লাভের পর থেকে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।

১৯৫২-এর মহান ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ইতিহাসের প্রতিটি বাঁকেই আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিল। মহান মুক্তিযুদ্ধে এ বাহিনীর অবদান দেশের ইতিহাসকে মহিমান্বিত করেছে। আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী দেশের একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান। দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং জননিরাপত্তা বিধানে এ বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। রাজধানী শহর ঢাকা থেকে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এ বাহিনীর সদস্যরা ছড়িয়ে রয়েছেন।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তাকারী হিসেবে আনসার ভিডিপি’র সদস্যগণ প্রথম এগিয়ে আসেন। সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন কলকারখানা ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় মোতায়েন থেকে এ বাহিনীর সদস্যরা দক্ষতার সাথে সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে। অপরাধ দমনে বাংলাদেশ পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীকে সহায়তা প্রদান, জাতীয় নির্বাচন ও বৃহৎ জনসমাবেশে নিরাপত্তা প্রদানসহ সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নে এ বাহিনীর কার্যক্রম প্রশংসনীয়।

জনগোষ্ঠীকে জনসম্পদে রূপান্তরিত করে দেশের অর্থনীতির চাকাকে গতিশীল করতে আমাদের আরো এগিয়ে যেতে হবে। সামাজিক উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, নেতৃত্ব ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর আরো কাজ করার সুযোগ রয়েছে বলে আমি মনে করি। দেশের ক্রীড়াঙ্গনে আনসার ভিডিপির সদস্যদের উজ্জ্বল বিচরণসহ জাতীয় অনুষ্ঠানে এ বাহিনীর চৌকস ব্যান্ড ও অর্কেস্ট্রাদলের বর্ণাঢ্য বাদ্য সবার নজর কেড়েছে।

আমি আশা করি মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এ বাহিনীর প্রতিটি সদস্য জতিগঠনে অব্যাহত প্রয়াস চালাবে। আমি আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর জাতীয় সমাবেশ-২০১৭ এর সার্বিক সফলতা এবং এ বাহিনীর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করি। খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।’’

প্রধানমন্ত্রীর বাণীঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে বাণী প্রদান করেছেন : “বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং জাতীয় সমাবেশ উপলক্ষে আমি এই বাহিনীর সকল সদস্যকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত আনসার বাহিনীর রয়েছে গৌরবময় ইতিহাস।

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এ বাহিনী ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। আনসার সদস্যগণ মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে অস্ত্রাগারের চল্লিশ হাজার রাইফেল মুক্তিযোদ্ধাদের বিতরণ করেন। ’৭১-এর ১৭ই এপ্রিল মেহেরপুরের আকাননে বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার প্রধানকে ১২ জন আনসার সদস্য গার্ড অভ্ অনার প্রদান করেন। ৬৭০ জন আনসার সদস্য মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ হন। তাঁদের আমি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। স্মরণ করছি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের এ মাসে ভাষা শহীদ আনসার কমান্ডার আব্দুল জব্বারকে।

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী দেশের জনগণের এবং সম্পদের নিরাপত্তা বিধানে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে এ বাহিনীর সদস্যরা যথাযথ দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। নির্বাচন, ঈদ, পূজা-পার্বণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা রক্ষাসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দক্ষতার সাথে কর্তব্য পালন করছে এ বাহিনী। আয় বৃদ্ধিমূলক কারিগরি প্রশিক্ষণ ও ঋণ প্রদানের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে এই বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বাহিনীর হতাহত সদস্য এবং তাঁদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি জানাচ্ছি আমার আন্তরিক সমবেদনা।

আমি আশা করি, সরকারের রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ বিনির্মাণে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। আমি বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৩৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী এবং জাতীয় সমাবেশ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”