সিড কংগ্রেস উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতির ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী

ঢাকা, ২৭ মাঘ (১০ ফেব্রুয়ারি) : রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ আগামীকাল ১১ ফেব্রুয়ারি ‘বাংলাদেশ সিড কংগ্রেস ২০২৩’ উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“কৃষি মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ সিড এসোসিয়েশন কর্তৃক তিন দিনব্যাপী ‘বাংলাদেশ সিড কংগ্রেস ২০২৩’ আয়োজনের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই।
কৃষি বাংলাদেশের উন্নয়নে অন্যতম প্রধান খাত। কৃষি-নির্ভর বাংলাদেশে কৃষকের কল্যাণ ছাড়া সার্বিক উন্নয়ন অসম্ভব। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও বৈষম্যহীন সোনার বাংলা নির্মাণে সরকার কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কৃষি উপকরণে ভরতুকি ও প্রণোদনা প্রদানসহ বহুমুখী উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করছে। সরকারের উদার নীতি ও কৃষিবান্ধব কার্যকর পদক্ষেপের জন্য বাংলাদেশ ইতোমধ্যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
কৃষি উৎপাদনে উন্নতজাতের বীজের ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বীজ শিল্প উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সম্মিলিত প্রচেষ্টা কৃষির আগ্রযাত্রাকে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিতে পারে। আধুনিক বীজ প্রযুক্তির যথোপযুক্ত ব্যবহারের মাধ্যমে ফসল উৎপাদন যেমন বৃদ্ধি পাবে তেমনি কৃষকগণও আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। বর্তমানে দেশে হাইব্রিড ধান ও সবজি উৎপাদন ক্রমশ বেড়ে চলছে। তবে হাইব্রিড বীজ ব্যবহারের ক্ষেত্রে পরিবেশের ভারসাম্য ও কৃষকের স্বার্থকে বিবেচনায় আনা জরুরি। আমি আশা করি, বাংলাদেশ সিড কংগ্রেস কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে কৃষকদের উৎসাহিত করবে এবং উন্নতমানের বীজ ও বীজ ভিত্তিক প্রযুক্তি কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
আমি ‘বাংলাদেশ সিড কংগ্রেস ২০২৩’ এর সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
জয় বাংলা।
খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”
ঢাকা, ২৭ মাঘ (১০ ফেব্রুয়ারি) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল ১১ ফেব্রুয়ারি ‘সিড কংগ্রেস- ২০২৩’ উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
‘‘কৃষি মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ সিড এসোসিয়েশন কর্তৃক যৌথভাবে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ‘সিড কংগ্রেস- ২০২৩’ বর্তমান প্রেক্ষাপটে একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ। এ উপলক্ষ্যে আমি বীজ শিল্প সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই ।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজন্ম লালিত স্বপ্ন ছিল অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের মাধ্যমে ‘সোনার বাংলাদেশ’ বিনির্মাণ করে দেশের মানুষের কল্যাণ নিশ্চিত করা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কৃষি ও কৃষকের সর্বাঙ্গীণ উন্নয়ন এবং স্বনির্ভরতা নিশ্চিত করতে অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তিনি কৃষি পেশার মর্যাদা ও গুরুত্ব বিবেচনা করে কৃষি কর্মকর্তাদের মর্যাদা প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করেন। কৃষি গবেষণা জোরদার করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট পুনর্গঠন করেন। এছাড়া তিনি অন্যান্য ফসলের গুরুত্ব অনুধাবন করে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ এবং উন্নয়ন বাজেটে কৃষিতে সর্বাধিক বরাদ্দসহ অনেক গণমুখী কার্যক্রম গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা কৃষি উন্নয়নে বীজকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে দেশে মানসম্পন্ন বীজ সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১৯৭৪ সালে বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কৃষি গবেষণা ও উন্নয়নকে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালে ‘রাষ্ট্রপতি কৃষি পুরস্কার’ প্রবর্তন করেন।
কিন্তু ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যসহ হত্যা করার পর এদেশের কৃষির অগ্রযাত্রা থেমে যায়। আওয়ামী লীগ সরকার বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্যকে প্রাধান্য দিয়ে কৃষি প্রধান এ দেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে রূপান্তরিত করতে কৃষিতে ভরতুকি, প্রণোদনা প্রদান ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। আমাদের সরকার দেশের কৃষক ও কৃষি খাতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে নিরলস কাজ করছে। উৎপাদন বৃদ্ধি ও কৃষকের লাভের কথা বিবেচনা করে সরকার কয়েক দফা সারের দামসহ কৃষি উপকরণের দাম কমিয়েছে। সেচের জন্য ডিজেলে ভরতুকি ও গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করেছে।
বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশ বিপর্যয়, অন্যদিকে দেশের ক্রমহ্রাসমান জমি হতে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কৃষির একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় টেকসই কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে সরকারি বীজ প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেসরকারি বীজ প্রতিষ্ঠানকেও এগিয়ে আসতে হবে। কৃষকের নিকট ভাল মানের বীজ সরবরাহ করে এবং কৃষির নতুন নতুন কৌশল প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকদের নিকট পৌঁছে দিতে হবে। দেশের এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদী না থাকে । তাহলেই কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় রাখা সম্ভব হবে।
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার সাথে সাথে এ অঞ্চলের খাদ্য নিরাপত্তা শক্তিশালী করতে চায়। এবারের সিড কংগ্রেস আমাদের এ ভিশন বাস্তবায়নে গতি সঞ্চার করবে বলে আমি মনে করি।
আমি ‘সিড কংগ্রেস- ২০২৩’ এর সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”