‘রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার ২০২০’ পেলো ২০ শিল্প প্রতিষ্ঠান

ঢাকা, ২১ পৌষ (৫ জানুয়ারি) : বর্তমান সরকার উন্নয়নের যে গতিতে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে স্বাধীনতা বিরোধীরা তা বাধাগ্রস্ত করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের অবদানের ফলে রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন তথা দেশের উন্নয়ন হয়েছে এবং সামনেও এ উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে বর্তমান সরকারের বিকল্প নেই।
আজ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার ২০২০’ প্রদান উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী এসব কথা বলেন। শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এবং এফবিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট মোঃ জসিম উদ্দিন।
শিল্পমন্ত্রী মর্যাদাপূর্ণ এ পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত প্রতিষ্ঠান ও উদ্যোক্তাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, জাতীয় পর্যায়ে এই স্বীকৃতি দেশে শিল্পখাত বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি বলেন, বাঙালি জাতিকে আত্মনির্ভরশীল ও শিল্পসমৃদ্ধ জাতিতে পরিণত করতে বঙ্গবন্ধু দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। তিনি সব সময় বাঙালি জাতির অর্থনৈতিক ও সামাজিক মুক্তির লক্ষ্যে সংগ্রাম করেছেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে একটি মহল বাংলাদেশের উন্নয়নের চাকা পেছনের দিকে ঘুরিয়ে দিতে চেয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়তায় তাদের এ ষড়যন্ত্র সফল হয়নি।
মন্ত্রী বলেন, গত এক দশকে দেশে অভূতপূর্ব অবকাঠামোগত উন্নয়ন সাধিত হয়েছে, যার সুফল দেশবাসী পাচ্ছেন। এছাড়া পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেলের সুবিধা মানুষ ভোগ করছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী নদীতে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানার মতো স্থাপনার সুফল অচিরেই মানুষ ভোগ করবে। রপ্তানি বাণিজ্যে গতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে সরকার পায়রা বন্দর ও মাতারবাড়ি সংলগ্ন এলাকায় গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ কাজ দ্রুততার সাথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন সম্পন্ন হলে আমাদের জিডিপি ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকবে।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় শিল্প প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে উন্নয়নের মহাসড়কে অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার বাংলাদেশ এখন সমগ্র বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে সকলকে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে।
উল্লেখ্য, শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী ছয় ক্যাটেগরির জন্য মোট ২০টি শিল্প প্রতিষ্ঠান/উদ্যোক্তাকে ‘রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার ২০২০’ প্রদান করা হয়েছে।
বৃহৎ শিল্প ক্যাটেগরিতে যৌথভাবে ১ম হয়েছে রানার অটোমোবাইলস লিমিটেড এবং ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, যৌথভাবে ২য় হয়েছে বিআরবি কেব্ল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং ফারিহা স্পিনিং মিলস্ লিমিটেড, ৩য় হয়েছে এনভয় টেক্সটাইল লিমিটেড। মাঝারি শিল্প ক্যাটেগরিতে ১ম হয়েছে নোমান টেরি টাওয়াল মিলস্ লিমিটেড, যৌথভাবে ২য় হয়েছে মাসকোটেক্স লিমিটেড এবং এপিএস ডিজাইন ওয়ার্কস লিমিটেড, যৌথভাবে ৩য় হয়েছে বেঙ্গল পলিমার ওয়্যারস্ লিমিটেড এবং অকোটেক্স লিমিটেড। ক্ষুদ্র শিল্প ক্যাটেগরিতে ১ম হয়েছে মাসকো ওভারসিজ লিমিটেড, যৌথভাবে ২য় হয়েছে আব্দুল জলিল লিমিটেড এবং প্যাসিফিক সী ফুডস লিমিটেড, ৩য় হয়েছে মাধবদী ডাইং ফিনিশিং মিলস্ লিমিটেড। মাইক্রো শিল্প ক্যাটেগরিতে শুধুমাত্র ১টি প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত হয়েছে, মাসকো ডেইরি এন্টারপ্রাইজ। কুটির শিল্প ক্যাটেগরিতে ১ম হয়েছে ইন্টেলিজেন্ট কার্ড লিমিটেড এবং ২য় হয়েছে রং মেলা নারী কল্যাণ সংস্থা (আর এন কে এস)। হাইটেক শিল্প ক্যাটেগরিতে ১ম হয়েছে ফেয়ার ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড, ২য় হয়েছে মীর টেলিকম লিমিটেড এবং ৩য় হয়েছে সার্ভিস ইঞ্জিন লিমিটেড।
‘রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার প্রদান সংক্রান্ত নির্দেশনাবলী ২০১৩’ অনুযায়ী শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক ২০১৪ সালে ১ম বারের মতো ‘রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার’ প্রদান শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছর ৬ষ্ঠ বারের মতো ‘রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার ২০২০’ প্রদান করা হলো।