প্রধান মেনু

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের উপযোগী করে শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করার আহ্বান শিক্ষামন্ত্রীর

ঢাকা, ৩০ চৈত্র (১৩ এপ্রিল): চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রতিযোগিতা মোকাবিলায় ভবিষ্যৎ কর্মজগতের উপযুক্ত করে শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, বর্তমানে যেসব পেশা বিদ্যমান রয়েছে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের ফলে  সেসব পেশার ৬৫ শতাংশই থাকবে না।  মানে আরো নতুন নতুন কাজ আমাদের সামনে আসতে থাকবে। তাই কী কাজ থাকবে সেটি বুঝে নিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করতে হবে।

মন্ত্রী আজ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি হিসেবে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের সামনে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের বিশাল সম্ভাবনা। আজকে যারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে পড়ছে, তারা যখন কর্মজগতে প্রবেশ করবে, তখন  বর্তমানে বিদ্যমান  শতকরা ৬৫ ভাগ পেশা আর থাকবে না।  বিশ্ববিদ্যালয়ের উচিত শিক্ষার্থীদের কর্মজগতের জন্য প্রস্তুত করে দেওয়া। শুধু ডিগ্রি দেওয়াই যথেষ্ট নয়। চাকরিদাতা আর চাকরিপ্রার্থীর মধ্যে কোথায় যেন ফারাক থেকে যায়। আর সে কারণে পার্শ্ববর্তী কোনো দেশের সার্টিফিকেট কোর্স বা ডিপ্লোমাধারীরা চাকরি পেয়ে যাচ্ছেন। কারণ কিছু বিশেষ দক্ষতা অর্জন করতে পারছেন তারা। তাদের শিক্ষা ব্যবস্থা সে দক্ষতাগুলো দিচ্ছে। আমরাও যেন শিক্ষার প্রতিটি স্তরে শিক্ষার্থীদের সেই দক্ষতায় দক্ষ করতে পারি, সেজন্য শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন আনা হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ঢেলে সাজানোর পরামর্শ দিয়ে দীপু মনি বলেন, আমাদের শিল্পকারখানা ও  কর্মজগতে যে চাহিদা রয়েছে, তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে কারিকুলাম নির্ধারণ করতে হবে। এক্ষেত্রে ইউজিসি বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। অনেক সার্টিফিকেট কোর্স নেওয়ার সুবিধা থাকতে হবে। নানান মেয়াদী ডিপ্লোমা দেওয়ার সুবিধা থাকতে হবে। কাজের জগতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই ধাপে ধাপে সেগুলোকে বদলাতে হবে। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা ও নতুন নতুন উদ্ভাবন করতে হবে।

গ্রাজুয়েটদের উদ্দেশে দীপু মনি বলেন, ‘লেগে থাকলে সফলতা আসবেই। কিন্তু সংক্ষিপ্ত পথে সাফল্যের জায়গায় পৌঁছানোর জন্য কেউ এমন কিছু করবেন না, যাতে আপনার সাফল্য কলুষতায় আক্রান্ত হয়। নিজের পাশাপাশি আপনার পরিবার, সমাজ, দেশ এমনকি বিশ্বের প্রতি আপনাদের দায় রয়েছে। আশা করি আপনারা সেই বিষয়ে সচেতন হবেন।’ অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তার বক্তব্য রাখেন শিক্ষাবিদ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল।

চিত্রনায়ক ফেরদৌস ও চিত্রনায়িকা পূর্ণিমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক ড. দিল আফরোজ বেগম, বাংলাদেশ এক্রিডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মেসবাহউদ্দিন আহমেদ, সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা ও ভাইস চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আবদুল আজিজ, সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আবুল বাশার, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক শামীম আরা হাসান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোঃ আল-আমিন মোল্লা।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টের সদস্য ঢাকা-৮ আসনের এমপি রাশেদ খান মেনন। সমাপনী বক্তব্য রাখেন সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টের চেয়ারম্যান নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের এমপি মোঃ নজরুল ইসলাম বাবু।

অনুষ্ঠানে ৬৬ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে গোল্ড মেডেল দেওয়া হয়। এর মধ্যে চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল পেয়েছেন ৩ জন এবং ভাইস চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল পেয়েছেন ৬৩ জন।