বাংলা ভাষা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদের শত্রুদের রুখে দেয়াই হোক একুশের প্রতিজ্ঞা — মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

ঢাকা, ৮ ফাল্গুন (২১ ফেব্রুয়ারি) : বাংলা ভাষা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদের শত্রুদের রুখে দেয়া মহান একুশের প্রতিজ্ঞা হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
আজ মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২২ উপলক্ষ্যে পিরোজপুর জেলা প্রশাসন আয়োজিত আলোচনা সভায় রাজধানীর বেইলি রোডের সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান ও পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হাকিম হাওলাদার। পিরোজপুরের সিভিল সার্জন ডা. হাসনাত ইউসুফ জাকি, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেবেকা খানসহ জেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, যারা আমাদের ভাষা কেড়ে নিতে চেয়েছিল, আমাদের পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ রাখতে চেয়েছিল, যারা শাসনের নামে শোষণ করেছিল সেই পাকিস্তানিদের প্রেতাত্মা এখনো বিভিন্ন সময়ে দেশে মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। কখনো জামায়াত ইসলামের নামে, কখনো হেফাজতের নামে, কখনো জঙ্গি হিসেবে তাদের উত্থান হয়। এরা দেশে ও দেশের বাইরে এখনো ষড়যন্ত্র করছে। যে বাংলা ভাষার ভিত্তিতে বাঙালি জাতীয়তাবাদ সৃষ্টি হয়েছে, যে বাঙালি জাতীয়তাবাদ ঘিরে বাংলাদেশে স্বাধিকার আন্দোলন এবং স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে, সে বাংলাদেশ যেন আবার স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুদের খপ্পরে না পড়ে সে জন্য মাতৃভাষা দিবসের প্রতিজ্ঞা নিতে হবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাষা আন্দোলনের সূচনা সময়ে সম্পৃক্ত হয়ে বারবার গ্রেফতার হন ও কারাবরণ করেন। তিনি মাতৃভাষা বাংলা রক্ষার জন্য ভাষা সংগ্রামীদের সাথে নিয়ে অসীম সাহসী ভূমিকা রেখেছিলেন। তিনি বলেন, আপাদমস্তক বাঙালিত্ব ধারণ করা বঙ্গবন্ধু বাঙালিদের জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ করে অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য একক ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছিলেন।
প্রধান অতিথি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য উত্তরসূরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টায় একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে পরিণত হয়েছে। আজ বাংলা ভাষাকে জাতিসংঘের অন্যতম দাপ্তরিক ভাষা করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে। বাংলা ভাষায় পৃথিবীর অনেক স্থান ও দপ্তরের নামকরণ করা হয়েছে। বাঙালি জাতি বিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সৃষ্টির পাথেয় হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ প্রদান অব্যাহত রেখেছেন। আমাদের বাংলা ভাষা আজ বিদেশিরা শিখছে ও চর্চা করছে।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, শুদ্ধ বাংলা উচ্চারণ আমাদের অনিবার্য প্রয়োজন। অর্ধেক বাংলা, অর্ধেক ইংরেজি অথবা বাংলাকে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করে উচ্চারণ বন্ধ করতে হবে। সন্তানদের পরিমার্জিত ও পরিশীলিত বাংলা শেখাতে হবে। আমাদের বাঙালিত্ব, ঐতিহ্য ও কৃষ্টি ধরে রাখতে হবে। তবেই আমাদের ভাষা শহিদদের ত্যাগ স্বীকার ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন সার্থক হবে।