প্রধান মেনু

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে সিউলে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন

সিউল (দক্ষিণ কোরিয়া), ২১ ফেব্রুয়ারি :বাংলাদেশ দূতাবাস, সিউল আজ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করেছে।

এ উপলক্ষ্যে দূতাবাস ইউনেস্কো সম্পর্কিত কোরিয়ান জাতীয় কমিশনের সাথে যৌথভাবে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। উক্ত অনুষ্ঠানে দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ইউনেস্কো সম্পর্কিত কোরিয়ান জাতীয় কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, মেক্সিকো, ভারত, রুয়ান্ডা, সুইজারল্যান্ড, বুলগেরিয়া ও ডোমিনিকান রিপাবলিক-এর রাষ্ট্রদূতগণ ও বিভিন্ন দূতাবাসের কূটনৈতিকবৃন্দ, কোরিয়ার সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ, শিক্ষাবিদ, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমসমূহের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত দেলওয়ার হোসেন প্রারম্ভিক বক্তব্য এবং ইউনেস্কো সম্পর্কিত কোরিয়ান জাতীয় কমিশনের সহকারী মহাসচিব স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। রাষ্ট্রদূত দেলওয়ার হোসেন তাঁর প্রারম্ভিক বক্তব্যে ভাষা শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। এছাড়া তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন যিনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করেন এবং  বাঙ্গালি জাতিকে স্বাধীনতার পথে এগিয়ে নিয়ে যান। রাষ্ট্রদূত দেলওয়ার হোসেন তাঁর বক্তব্যে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের পটভূমি ও তাৎপর্য এবং মাতৃভাষা ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি সংরক্ষণ ও উন্নয়নে বর্তমান সরকারের গৃহীত উদ্যোগসমূহ তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় ব্যুরোর উপমহাপরিচালক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ হতে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা (ইউনেস্কো)-এর মহাপরিচালকের বাণী পাঠ করা হয়। এরপর, মেক্সিকো, ভারত, রুয়ান্ডা ও সুইজারল্যান্ড-এর রাষ্ট্রদূতগণ  মাতৃভাষা উন্নয়ন ও সুরক্ষায় স্ব স্ব দেশের সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন  উদ্যোগসমূহের উপর বিস্তারিত বক্তব্য প্রদান করেন।

আলোচনা শেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ, ভারত, কলম্বিয়া ও  শ্রীলঙ্কার শিল্পীরা বর্ণিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে স্ব স্ব দেশের ভাষা ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরেন।

এদিন সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও প্রবাসী বাংলাদেশীদের উপস্থিতিতে রাষ্ট্রদূত দেলওয়ার হোসেন দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন। ভাষা শহিদদের আত্মার মাগফেরাত এবং দেশ ও জাতির সার্বিক উন্নতি ও মঙ্গল কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয় এবং ভাষা শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অতঃপর দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন। অনুষ্ঠানে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-এর উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। অতঃপর দিবসের পটভূমি ও তাৎপর্য নিয়ে এক আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এর পূর্বে, একুশের প্রথম প্রহরে, রাষ্ট্রদূত দেলওয়ার হোসেন আনসান শহরের মাল্টিকালচারাল পার্কে অবস্থিত স্থায়ী শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ভাষা শহিদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।