বিশ্ব বসতি দিবসে রাষ্ট্রপতির বাণী

ঢাকা, ১৮ আশ্বিন (৩ অক্টোবর) : রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ আগামীকাল ৩ অক্টোবর ‘বিশ্ব বসতি দিবস’ উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :“প্রতিবছরের ন্যায় এবছরেও বাংলাদেশে ‘বিশ্ব বসতি দিবস’ পালনের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। এবছর বিশ্ব বসতি দিবসের প্রতিপাদ্য ‘Accelerating urban action for a carbon-free world’, যার ভাবার্থ- ‘নগরীয় কর্মপন্থা প্রয়োগ করি কার্বনমুক্ত বিশ্ব গড়ি’। বিশ্বজুড়ে কার্বন নিঃসরণের ফলে ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক উষ্ণতার যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে তাতে অদূর ভবিষ্যতে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চল। তাই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে এবারের প্রতিপাদ্যটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হয়েছে বলে আমি মনে করি।
বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় পরিকল্পিত নগরায়নের পাশাপাশি গ্রিনহাউস গ্রাসসমূহের নিঃসরণ কমানো অত্যন্ত জরুরি। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের পথ ধরে বাংলাদেশ আজ সারাবিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হয়ে উঠেছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সাথে সাথে বাংলাদেশের শহরগুলোও দ্রুত বদলে যাচ্ছে। শহর এলাকায় জনঘনত্ব যেমন বেড়েই চলেছে, তেমনি বেড়ে চলেছে যানবাহন, ভবন এবং যন্ত্রপাতি থেকে কার্বন নিঃসরণের মাত্রাও। মেগা শহরের পাশাপাশি জেলা, উপজেলায় পরিকল্পিত নগরায়নের মাধ্যমে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানো সম্ভব বলে আমি মনে করি। আধুনিক যুগের বাস্তবতাকে সামনে রেখে সরকার ‘National Solar Energy Action Plan : 2021-2041’ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এছাড়াও ঢাকা শহরে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের অন্যতম প্রভাবক ‘যানজট’ নিরসনে মেট্রোরেল প্রকল্প, জেলা-উপজেলা শহরে জলবায়ু-সহিষ্ণু ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা এবং ঢাকা শহরে ‘Urban Resilience’ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। অচিরেই বাংলাদেশে বিদ্যুতের কার্বনমুক্ত উৎস হিসাবে রূপপুরে পারমাণবিক শক্তির উৎপাদন শুরু হতে যাচ্ছে।
আগামী প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ ও বাসযোগ্য দেশ গঠনে পরিকল্পিত নগরায়নের বিকল্প নেই। একই সাথে হাইড্রোকার্বন ভিত্তিক জ্বালানি ব্যবহার কমিয়ে সৌরশক্তি ও বায়ুশক্তির মতো বিকল্প উৎসের সুষ্ঠু ব্যবহারে আরো উদ্যোগী হতে হবে। আমি আশা করি, এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলো সমন্বিত উদ্যোগ অব্যাহত রাখবে।
আমি ‘বিশ্ব বসতি দিবস ২০২১’ উপলক্ষ্যে গৃহীত কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
জয় বাংলা।
খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”