প্রধান মেনু

নব অঙ্গীকার ও অংশীদারিত্বের মাধ্যমে কোভিড পরবর্তী পূন:বিনির্মাণে এগিয়ে আসার আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

নিউইয়র্ক, ৮ সেপ্টেম্বর : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, কোভিড অতিমারি থেকে পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টার একটি অপরিহার্য উপাদান হিসেবে অবশ্যই এমন একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করতে হবে যেখানে জাতি, গোত্র, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলে অর্থবহভাবে অবদান রাখতে পারে। পূর্বের থেকেও ভালো অবস্থায় ফিরে যাওয়ার লক্ষ্যে কোভিড পরবর্তী পুনরুদ্ধার কার্যক্রমে শান্তির সংস্কৃতিকে ধারণ ও লালন করার কোনো বিকল্প নেই।

গতকাল জাতিসংঘ সদরদপ্তরে অনুষ্ঠিত শান্তির সংস্কৃতি বিষয়ক জাতিসংঘের উচ্চতর ফোরামে প্রদত্ত স্বাগত বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। কোভিড পরবর্তী পুনরুদ্ধার কার্যক্রমসমূহের অন্তর্ভুক্তি এবং প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়ানোর সামর্থ্য অর্জনের বিষয়টি আরো এগিয়ে নিতে শান্তির সংস্কৃতি যে রূপান্তরধর্মী ভূমিকা পালন করতে পারে তা তুলে ধরা হয় উচ্চ পর্যায়ের এই ফোরামে।

দিনব্যাপী আয়োজিত কর্মসূচির মধ্যে উদ্বোধনী পর্ব ছাড়াও একটি প্লেনারি সেশন এবং ভার্চুয়াল প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। উদ্বোধনী পর্বে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি, ইউএন অ্যালায়েন্স ফর সিভিলাইজেশন এর উচ্চ প্রতিনিধি, জাতিসংঘ মহাসচিবের শেফ দ্যা ক্যাবিনেট এবং ইউনেসকো’র প্রতিনিধি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ ধারণাটি উপস্থাপন এবং ১৯৯৯ সাল থেকে  প্রতিবছর সর্বসম্মতিক্রমে তা রেজুলেশন হিসেবে গৃহীত হওয়া এবং ২০১২ সাল থেকে উচ্চ পর্যায়ের ফোরাম আয়োজন করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রণী ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। এছাড়া শান্তি ও উন্নয়নের পারস্পরিক গভীর আন্ত:সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে যথাসময়ে এজেন্ডা ২০৩০ এর বাস্তবায়নের প্রতিও আহ্বান ও জানান তিনি।

ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, অতিমারি থেকে সফল পুনরুদ্ধারের জন্য অবশ্যই বৈশ্বিকভাবে টিকাদান কর্মসূচির বাস্তবায়ন প্রয়োজন। এক্ষেত্রে তিনি ভ্যাকসিনের জাতীয়করণকে দুর্ভাগ্যজনক বলে অভিহিত করেন এবং বিশ্বকে এধরণের ভ্যাকসিন বৈষম্যের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

এদিকে বিকেলে ‘শান্তির সংস্কৃতিতে সিভিল সোসাইটি সংস্থাসমূহের অংশগ্রহণ’ বিষয়ক একটি ভার্চুয়াল প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় যা সঞ্চালনা করেন জাতিসংঘের সাবেক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ও জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত আনোয়ারুল করিম চৌধুরী। জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা এতে প্যানেলিস্ট হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।

প্যানেলিস্ট হিসেবে প্রদত্ত বক্তব্য রাষ্ট্রদূত ফাতিমা ডিজিটাল বিভাজন দূর করা এবং প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার পুনর্গঠনের ওপর জোর দেন যাতে শিক্ষায় সকল শিশুর নিরবচ্ছিন্ন প্রবেশাধিকার নিশ্চিত হয়। সমাজে অসমতা উদ্বেগজনকহারে বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। সামগ্রিকভাবে অসমতা দূর করতে তিনি বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের রেজুলেশন-‘ডিক্লারেশন অন দ্যা কালচার অভ্ পিস এন্ড প্রোগাম অভ্ অ্যাকশন’ অনুযায়ী প্রতিবছর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতির আহ্বান শান্তির সংস্কৃতি বিষয়ক জাতিসংঘ উচ্চ পর্যায়ের ফোরাম অনুষ্ঠিত হয় যার আয়োজন করে বাংলাদেশ। প্রতিবছর বাংলাদেশ আনীত এই রেজুলেশনটিতে বিপুল সংখ্যক দেশ সহ-পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করে এবং এটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানে সদস্য দেশসমূহের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রাষ্ট্রদূত, মন্ত্রী ও সিভিল সোসাইটি প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতিনিধিবর্গ অংশগ্রহণ করেন।