প্রধান মেনু

ডেঙ্গু মোকাবিলায় সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে — স্থানীয় সরকার মন্ত্রী

ঢাকা, ৩ ভাদ্র (১৮ আগস্ট) : স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেছেন, সমাজের সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে ডেঙ্গু নির্মূল করতে হবে। জনসম্পৃক্ততাই ডেঙ্গু মোকাবিলার উত্তম উপায়। জনসাধারণের অংশগ্রহণ ছাড়া ডেঙ্গু প্রতিরোধ সহজ হবে না বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী।

আজ রাজধানীর উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নগরভবনে আয়োজিত ‘সুস্থতার জন্য সামাজিক আন্দোলন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, মন্ত্রী, মেয়র, কাউন্সিলর এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীর পাশাপাশি ঢাকাকে মশামুক্ত করতে জনগণের অংশগ্রহণে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা যেমন সিটি কর্পোরেশনের মৌলিক দায়িত্ব তেমনি নাগরিকদেরও নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব অবহেলা না করে সুনাগরিকের ভূমিকা পালন করতে হবে।

মন্ত্রী জানান, এডিস মশা কিভাবে এবং কোথায় জন্ম নেয় এসব বিষয়ে নগরবাসীকে বিভিন্নভাবে সচেতন করা হয়েছে। মানুষ যদি সচেতন হয়ে এই বিষয়গুলোতে নজর দেয় তাহলে এডিস মশা নির্মূল করা সম্ভব না হলেও নিয়ন্ত্রণ করে সহনীয় পর্যায়ে আনা সম্ভব।

নির্মাণাধীন বাসাবাড়িতে এডিস মশার প্রজনন বেশি হচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বাসাবাড়ির ছাদে, বেজমেন্টে ও ফুলের টবে জমানো স্বচ্ছ পানি নিয়মিত পরিষ্কার করতে বা ফেলে দিতে না পারলে সেখানে লার্ভিসাইড অথবা কেরোসিন তেল ঢেলে বা স্প্রে করে নগরবাসীকে এডিস মশার লার্ভা নষ্ট করার পরামর্শ দেন মন্ত্রী।

বিশ্বের অনেক দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব রয়েছে এবং প্রতিবছর প্রায় একশো থেকে চার শো মিলিয়ন মানুষ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয় জানিয়ে মন্ত্রী সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশের ডেঙ্গুর পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর মশার প্রভাব বেশি একথা সত্য। কিন্তু কেউ বসে নেই, সবাই সর্বাত্মকভাবে যার যার অবস্থান থেকে নিরলসভাবে কাজ করছে।

তিনি বলেন, গতবছর শুধু জলবায়ুর প্রভাবে ডেঙ্গু কম ছিল বলে অনেকে বলে থাকেন কিন্তু একথা সত্য নয়। মন্ত্রণালয়, সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর, নগরবাসী সবার সমন্বিত উদ্যোগ ছিল বলেই সম্ভব হয়েছে। এবারও আমরা সফল হবো বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী। পার্শ্ববর্তী দেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ যারা ডেঙ্গু মোকাবেলায় সফল হয়েছে তাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েও কাজ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সেখানে এডিসের লার্ভা প্রজনন হচ্ছে। এছাড়া, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও এডিস মশার প্রজনন হচ্ছে। তাই সংশ্লিষ্ট সকলকে নিজ উদ্যোগে এসব স্থাপনায় মশক নিধন অভিযান চালানোর নির্দেশনা দেন। মশা মারতে গিয়ে এমন কীটনাশক ব্যবহার করা যাবে না যার জন্য পরিবেশ ও মানুষের ক্ষতি হয়। সেদিকেও নজর রাখতে হবে।

ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, সিভিল এভিয়েশন এবং রেলওয়েসহ অন্যান্য সরকারি আবাসন ও প্রতিষ্ঠানসমূহকে সিটি কর্পোরেশনের সাথে সমন্বয় করে মশা নিধনের উদ্যোগ নিতে বলেন মন্ত্রী।

উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় মন্ত্রণালয় ও ডিএনসিসি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, কাউন্সিলরগণ, নগর পরিকল্পনাবিদ, বিভিন্ন সোসাইটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং সামাজিক সংগঠনের ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।