জ্বালানি সাশ্রয়ী ভবন ব্যবস্থাপনায় প্রাথমিকভাবে স্রেডা সহযোগিতা করতে পারে—-বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী

ঢাকা, ২৫ শ্রাবণ (৯ আগস্ট) : বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, জ্বালানি সাশ্রয়ী ভবন ব্যবস্থাপনায় প্রাথমিকভাবে স্রেডা সহযোগিতা করতে পারে। বাংলাদেশের জমি স্বল্পতার জন্য রুপটপ সোলার ব্যবস্থাকে কাজে লাগানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা আবশ্যক। নেট মিটারিং সিস্টেম রুপটপ সোলার ব্যবস্থাকে জনপ্রিয় করতে সহায়তা করবে। এ বিষয়ে প্রচারণা বাড়ানো প্রয়োজন।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আজ অনলাইনে জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষ্যে ‘স্টাডি অন এনার্জি এফিশিয়েন্সি ইন পাবলিক বিল্ডিংস ইন বাংলাদেশ (ইইপিবি)’ -প্রকল্পের চূড়ান্ত কর্মশালা প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন। তিনি বলেন, জ্বালানি দক্ষতা ব্যবস্থার নিয়মতান্ত্রিক প্রবর্তন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে দৃশ্যমান পরিবর্তন প্রয়োজন। টেকসই ও পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন সম্মিলিত উদ্যোগেই করতে হবে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ী কার্যক্রম আরো বাড়ানো হবে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং জার্মান ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন (জিআইজেড) এর সহায়তায় এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা)। প্রকল্পটির উদ্দেশ্য ছিল সমীক্ষার মাধ্যমে সরকারি ভবনগুলোতে জ্বালানি সাশ্রয়ের সম্ভাবনা নির্ধারণ করা। এ বিষয়ে বাংলাদেশে এটি প্রথম বিস্তারিত সমীক্ষা। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক জ্বালানি নিরীক্ষা বিশেষজ্ঞদের একটি দল ১২টি নির্বাচিত সরকারি ভবনে ২ ধাপের জ্বালানি নিরীক্ষা পরিচালনা করেন, এবং ভবনগুলোর জ্বালানি দক্ষতা সর্বোচ্চ বৃদ্ধি করার জন্য কিছু সুপারিশ প্রদান করেন। সমীক্ষায় দেখা গেছে যে আরও ভাল ইনসুলেশন, রেট্রোফিটিং, অদক্ষ সরঞ্জামকে প্রতিস্থাপন এবং রুফটপ সোলার চালু করার মাধ্যমে শুধু এই ১২টি ভবনেই প্রতি বছর ১মিলিয়ন কিলোওয়াট-ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ সঞ্চয় করা যেতে পারে। এজন্য প্রয়োজন হবে মাত্র ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ,যা ৫ থেকে ১২ বছরের মাঝে উঠে আসবে। এধরনের পদক্ষেপ যদি পিডব্লইডির অধীনে ঢাকায় অবস্থিত ২৫০টির অধিক ভবনে নেয়া যায়, তবে প্রতি বছর ১১ থেকে ১৫ মিলিয়ন কিলোওয়াট-ঘণ্টা বিদ্যুৎ সংরক্ষণ করা যেতে পারে। এই বিদ্যুৎ এক বছরে এক হাজার বাড়ি দ্বারা ব্যবহৃত বিদ্যুতের সমতুল্য। দেশ জুড়ে পিডব্লিউডির অধীনে ১৩০০০ টিরও বেশি সরকারি ভবন রয়েছে, এছাড়াও রয়েছে অন্যান্য সরকারি সংস্থার অধীনস্থ অসংখ্য ভবন। সম্পূর্ণ চিত্রটি বিবেচনা করে বলা যায়, যথাযথ পদক্ষেপ নিলে দেশব্যাপী এই খাতে অঢেল জ্বালানি সাশ্রয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
স্রেডার চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলাউদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং জিআইজেড বাংলাদেশের রিনিউয়েবল এনার্জি এন্ড এনার্জি এফিশিয়েন্সি প্রোগ্রামের কোঅর্ডিনেটর আল মুদাব্বির বিন আনাম সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মাঝে আবাসন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ শহীদ উল্লাহ খন্দকার, বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মোঃ হাবিবুর রহমান, জিআইজেড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. অ্যাঞ্জেলিকা ফ্লেডারম্যান, কে-সেপ’র এসোসিয়েট ডিরেক্টর আকজুম টেফেরা, এআইআইবি’র ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট বিভাগের মহাপরিচালক রজত মিশরা সংযুক্ত থেকে বক্তব্য দেন।