ক্যাশলেস সোসাইটির দিকে দ্রুত ধাবিত হচ্ছে বাংলাদেশ — টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী

ঢাকা, ১৯ আষাঢ় (৩ জুলাই) : ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাল কানেক্টিভিটি সম্প্রসারণের ফলে দেশে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) অভাবনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে। আমাদের তুলনায় এমএফএস পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশও সম্প্রসারণ করতে পারেনি। এমএফএস এর মাধ্যমে ক্যাশলেস সোসাইটির দিকে বাংলাদেশ দ্রুত ধাবিত হচ্ছে। তিনি বিদ্যমান এমএফএস প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে ইন্টারঅপারেবিলিটি পদ্ধতি চালুর মাধ্যমে এই সেবাকে আরো জনপ্রিয় করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
মন্ত্রী আজ ঢাকায় টেলিকম খাতের রিপোর্টারদের সংগঠন টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ (টিআরএনটি) আয়োজিত ‘ভাতা বিতরণে ডিজিটাল প্রযুক্তি : স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার নিশ্চয়তা’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
টিআরএনবি সভাপতি রাশেদ মেহেদির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শেখ রফিকুল ইসলাম, প্রাথমিক শিক্ষার উপবৃত্তি প্রদান প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোঃ ইউসুফ আলী, বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির, অ্যামটবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক টিআইএম নূরুল কবির এবং নগদ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক আলোচনা সভায় বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টিআরএনবি সাধারণ সম্পাদক সমীর কুমার দে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ২০২০ সালে দেশে কোভিড অতিমারি শুরু হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত মানুষের জীবনযাত্রায় ডিজিটাল সেবা বিস্ময়কর বন্ধু হিসেবে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ফলে করোনাকালেও জীবনযাত্রাসহ দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রয়েছে।
করোনাকালে থ্রিজি নেটওয়ার্ককে দেশের প্রায় শতভাগ অঞ্চলে ফোরজি নেটওয়ার্কে রূপান্তরিত করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। ডেটার বর্ধিত চাহিদা পূরণ করা হয়েছে, ডেটার স্পিড সম্প্রসারণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বেতার তরঙ্গ নিলাম করে নেটওয়ার্ক উন্নত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দুর্গম চর, দ্বীপ ও হাওর অঞ্চলসহ দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে অপটিক্যাল ফাইভার নেটওয়ার্ক পৌঁছে দেয়ার কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এবছরের মধ্যে দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ সম্পন্ন হবে বলে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় আজ দেশের শতকরা ৯৮ ভাগ এলাকা মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায় এবং দেশের মোট চাহিদার শতকরা সত্তর ভাগ মোবাইল সেট বাংলাদেশ থেকে উৎপাদিত হচ্ছে। আমরা ফাইভ জি মোবাইল রপ্তানি করছি।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী চেয়েছিলেন জনগণ সেবা নিতে আসবে না, জনগণকে সেবা পৌঁছে দিতে হবে। ইতোমধ্যে তিনশ’ ডিজিটাল সেবা জনগণকে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। খুব সহসাই জনগণের দোরগোড়ায় তিন হাজার ডিজিটাল সেবা পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে দ্বিতীয়বার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলেন, স্বাধীনতাবিরোধীরা তাঁকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবে রূপান্তর করে দেখিয়েছেন।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, অসহায় মানুষের কল্যাণে প্রধানমন্ত্রীর যে প্রত্যাশা তা পূরণে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। প্রধানমন্ত্রী দরিদ্র ও অসহায় মানুষের কল্যাণে যে কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন সেগুলো সফল করতে হবে।