প্রধান মেনু

ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুর বৃদ্ধাশ্রমের অসহায় মায়েদের পাশে জননেতা সাইদুল করিম মিন্টু

শামীমুল ইসলাম শামীম, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি, ২২ এপ্রিল ২০২১ঃ চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে মানুষের আয়ু বাড়ছে৷ বাড়ছে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের সংখ্যা৷ বাড়ছে তাঁদের সমস্যাও৷ সমাজের পরিবর্তিত মূল্যবোধ, পারিবারিক অবহেলা, কোনও কোনও ক্ষেত্রে সাংসারিক অশান্তিও হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রবীণ-প্রবীণাদের বাড়িতে থাকার পথে বাধা৷সন্তানদেকে জায়গা-জমি বাড়ি লিখে দেওয়ার পর অনেক ছেলেরা তাদের পিতা-মাতাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়৷ তাই অনেকেই বৃদ্ধাশ্রম বেছে নিয়েছেন স্বেচ্ছায়৷ এইসব ক্ষেত্রেই বৃদ্ধাশ্রমের ঠিকানাটা তাঁদের বেঁচে থাকার সহায়ক হয়ে উঠেছিল৷

‘‘বাকিরা একাকিত্ব দূর করতেই আসেন’’ নিপীড়িত নির্যাতিত হয়ে বাড়িছাড়া নন আজ শহরের অধিকাংশ বৃদ্ধ- বৃদ্ধা বরং এসবের থেকেও আজ বৃদ্ধাশ্রমগুলোতে প্রবীণ-প্রবীণাদের সংখ্যা বাড়ছে স্রেফ নিজের মতো করে থাকার প্রবল ইচ্ছে থেকে৷ সংসারে অবাঞ্ছিত না হয়েও অনেকে নিজের মতো করে বাঁচতে চানঁ বলে বেছে নিচ্ছেন বৃদ্ধাশ্রম৷তাই শুধু অবহেলায় নয়, বৃদ্ধাশ্রমে প্রবীণরা আসছেন একাকিত্ব ঘোচাতে। ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুু বৃদ্ধাশ্রমের অসহায় নারীদের মাঝে বুধবার দুপুরে খাদ্যসামগ্রী ও আর্থিক সহায়তা দেন ঝিনাইদহ ও হরিণাকুন্ডুর গণমানুষের নেতা ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ঝিনাইদহ পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব সাইদুল করিম মিন্টু।

এসময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারমান মোঃ জাহাঙ্গীর হোসাইন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা নাফিস সুলতানা, হরিণাকুন্ডু পৌরসভার মেয়র ফারুক হোসেন,সহকারি কমিশনার (ভূমি )এসিল্যান্ড রাজিয়া আক্তার চৌধুরী, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জামাল হুসাইন প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।এছাড়াও করোনা ভাইরাস মহামারিতে ঝিনাইদহে প্রায় ২ হাজার দুস্থ পরিবারের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। বিকেলে শহরের ব্যাপারী পাড়ায় পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উদ্যোগে এ ইফতার বিতরণ করা হয়। সেসময় দুস্থদের হাতে ইফতার তুলে দেন জেলা প্রশাসক মোঃ মজিবর রহমান, পৌর মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম শাহিন।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যাপারী পাড়ার নতুন মসজিদ মোড় ছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে এই ইফতার সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়।এসময় পৌর মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু বলেন, করোনা মহামারির এই সময় নিম্ন আয়ের মানুষের চরম অভাবের মধ্যে দিন যাচ্ছে। অনেকেই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভালোভাবে ইফতারও করতে পারছে না। এই চরম দুরবস্থার মাঝে দুস্থ কিছু মানুষের মাঝে ইফতার সামগ্রী তুলে দিতে পেরে আমি খুশি। পুরো রমজান মাস এই ইফতার বিতরণ করা হবে। মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু বললেন, ‘‘বৃদ্ধাশ্রম মানেই পারিবারিক অশান্তিতে সবাই বাড়ি ছেড়ে আসেন, এমনটা নয়৷

মাত্র ২০ থেকে ২৫ শতাংশ লোক পারিবারিক অশান্তিতে আসেন৷ বাকিরা একাকিত্ব দূর করতেই আসেন৷ আজকালকার ইঁদুরদৌড়ের জীবনে আর নিউক্লিয়াস পরিবারে সুপ্রতিষ্ঠিত চাকুরে সন্তান থাকা সত্বেও বৃদ্ধ বাবা-মাকে দেখার মতো কেউ থাকে না, কেননা, বেশিরভাগ সন্তানকে চাকরির জন্য শহরের বাইরে থাকতে হয়৷ এই ধরনের নিঃসঙ্গ বাবা-মায়েদের পরিষেবা দেওয়ার জন্য বৃদ্ধাশ্রম দরকার৷ মেয়রের মতে, ‘‘পাশাপাশি যারা বিবাহ করেননি ঠিক সময়ে, এক কথায় ব্যাচেলর, তাঁদের একটা সময় পরে বিশেষত অবসরের পর বৃদ্ধাশ্রম প্রয়োজন৷ মেয়ে সন্তনকে বিয়ে দিলে বা ছেলে বিদেশে থাকলে, বৃদ্ধদের সঙ্গ দেওয়ার দরকার হয়৷ আগের কনসেপ্ট এখন মিলবে না৷

আগে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসা মানেই আমরা আমাদের মা বাবাকে ফেলে রেখে এসেছি- এই ভাবনা ছিল৷ কিন্তু এখন বৃদ্ধাশ্রম একটা স্ট্যান্ডার্ড হোটেলের মতো৷ একটা অ্যাসোসিয়েশন পাওয়া যায় এখানে৷ পারস্পরিক ভাবের আদান প্রদানের জন্য মানসিক শান্তি বা নিরাপত্তার জন্য বৃদ্ধাশ্রমে থাকাই শ্রেয়৷ নিঃসন্তান দম্পতিরা অবসরের পরে বৃদ্ধাশ্রমে থাকবেন বলে খোঁজ নিয়ে যান আগেই৷স্বাভাবিকভাবেই প্রবীণদের একা একটা বাড়িতে থাকা মোটেও নিরাপদ নয়৷

সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা বলছে, শহরে রাতের বেলায় নিঃসঙ্গ বৃদ্ধদেরই দুর্ঘটনা ঘটে বেশি৷ দরজা ভেঙে মৃতদেহ বের করতে হয়৷ মিন্টু বলেন, বৃদ্ধাশ্রমের চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে৷ আরও বেশি বৃদ্ধাশ্রম গড়ে তোলা উচিত৷ তাহলে নিরাপদ হবে ওখানকার বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের জীবন যাপন৷

তবে, শুধু ব্যবসার তাগিদে বৃদ্ধাশ্রম করলে সেখানে প্রবীণদের ঠিকমতো পরিষেবা না-ও দেওয়া হতে পারে