লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮৩ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে বোরোর আবাদ সফলভাবে ঘরে তুলতে পারলে খাদ্য নিয়ে ঝুঁকি থাকবে না– কৃষিমন্ত্রী

ঢাকা, ১৮ চৈত্র (১ এপ্রিল) : সারা দেশের বোরো ধান সফলভাবে ঘরে তুলতে পারলে করোনাকালেও দেশে খাদ্য নিয়ে ঝুঁকি থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, মহামারি করোনাকালে খাদ্য নিয়ে মানুষকে যাতে আতঙ্কে থাকতে না হয়, খাদ্যের যাতে কোনো অভাব না হয় সরকার সেটি নিশ্চিত করতে দৃঢ়ভাবে কাজ করছে।
মন্ত্রী আজ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষ থেকে অনলাইনে সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের আস্তনা গ্রামে বোরো ধান কর্তন উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, বোরো মৌসুমে দেশে সবচেয়ে বেশি ধান চাল উৎপাদন হয়। সেজন্য হাওরসহ সারা দেশের ধান কাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আনুষ্ঠানিকভাবে আজ ধান কাটা উদ্বোধন করা হচ্ছে যাতে মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি পায়।
মন্ত্রী বলেন, এবছর প্রায় ৪৮ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এই লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে সারা দেশে ৪৮ লাখ ৮৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮৩ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এছাড়া উৎপাদনশীলতা বেশি হওয়ায় হাইব্রিড জাতের ধানের চাষ বৃদ্ধিতে এবছর জোর দেয়া হয়। সেজন্য, গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩ লাখ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড জাতের আবাদ বেড়েছে। গড়ে হেক্টর প্রতি ১ টন করে বেশি ফলন হলেও কমপক্ষে ৩ লাখ টন উৎপাদন বাড়বে। এ বছর বোরোতে ২ কোটি ৫ লাখ টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দেশে চালের চাহিদা ও ব্যবহার বেড়েছে। দেশে সাড়ে ১৬ কোটি মানুষ। প্রতি বছর ২২ লাখ নতুন মুখ যোগ হচ্ছে। সে সঙ্গে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাদের খাবার জোগান দিতে হচ্ছে। ডব্লিউএফপি বাংলাদেশ থেকে খাদ্য কিনেই রোহিঙ্গাদের দেয়। তিনি আরো বলেন, গত মৌসুমে বন্যার কারণে ধান চালের দাম কিছুটা বেশি ছিল। সেজন্য বছরের শুরুতেই পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল যেকোনো মূল্যে ধানের উৎপাদন বাড়াতে হবে। বোরো ধানের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সরকার এ বছর বেশি করে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজসহ বিভিন্ন কৃষি উপকরণ প্রণোদনা দিয়েছে। শুধু হাইব্রিড জাতের ধানের চাষ বৃদ্ধিতে দেয়া হয়েছে প্রায় ৭৩ কোটি টাকার প্রণোদনা। এতে করে কৃষকেরা উৎসাহিত হয়েছে।
এ সময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মেসবাহুল ইসলাম, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক উপস্থিত ছিলেন। সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানটিতে সভাপতিত্ব করেন।