সাবেক স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর জন্মবার্ষিকীতে রাষ্ট্রপতির বাণী

ঢাকা, ২৫ কার্তিক (১০ নভেম্বর) : রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ সাবেক স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন : “সাবেক স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর ৯২তম জন্মবার্ষিকীতে আমি মরহুমের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। এ উপলক্ষ্যে হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী স্মৃতি পরিষদ কর্তৃক স্মরণিকা প্রকাশের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই।
মরহুম হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী ছিলেন একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বরেণ্য কুটনীতিক। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি নয়াদিল্লীস্থ পাকিস্তান দূতাবাসে কর্মরত অবস্থায় পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশের মিশন প্রধান হিসেবে বলিষ্ঠ কুটনৈতিক তৎপরতা চালান। এর ফলে ভারত, ভুটানসহ বিশ্বের ৩৪টিরও অধিক দেশের নিকট হতে যুদ্ধবিদ্ধস্ত স্বাধীন বাংলাদেশের পক্ষে স্বীকৃতি আদায় সহজতর হয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর ছিল অগাধ শ্রদ্ধা। তিনি জার্মানিতে রাষ্ট্রদূত থাকাকালে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকচক্রের নৃশংসতায় বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের অধিকাংশ সদস্য শাহাদত বরণ করেন। জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের নৃশংস-নির্মম হত্যাকান্ডের সংবাদ পেয়ে তিনি পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থানরত বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানাকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাঁর বাসভবনে নিরাপদে রাখেন এবং তাঁদের জীবনের নিরাপত্তা বিধানের উদ্যোগ নেন।
হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী কর্মজীবনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বপালনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিশ্বদরবারে তুলে ধরেন। তিনি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৪১তম অধিবেশনে প্রথম বাঙালি হিসেবে সভাপতিত্ব করার বিরল গৌরব অর্জন করেন। পরে তিনি ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে মহান জাতীয় সংসদের স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এসময় তিনি জাতির পিতার খুনীদের বিচারের আওতায় আনতে কুখ্যাত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল, জাতীয় সংসদকে শক্তিশালীকরণ এবং সংসদে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্ব প্রচলনসহ বেশ কিছু যুগান্তকারী কার্যক্রম গ্রহণ করেন। হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের শিক্ষার মানোন্নয়নে বিশেষ করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। আধুনিক সিলেটের উন্নয়নের রূপকার হিসেবে তিনি সিলেটবাসীর কাছে আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
সপ্তম জাতীয় সংসদের সহকর্মী হিসেবে মরহুম হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর সাথে আমার অসংখ্য স্মৃতি রয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সংস্কার ও আধুনিকায়নে তাঁর ভূমিকা ছিল অনন্য। তাঁর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার বিভিন্ন স্মৃতি আজও আমাকে উৎসাহ ও সাহস জোগায়। আমি মরহুম হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
জয় বাংলা।খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”