নোয়াখালীতে সহোদর ভাইয়ের দু’চোখ নষ্ট করে দেয়ারপর, এবার বাড়ি থেকে উচ্ছেদের হুমকি

গাজী রুবেল, নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়নের বড়রামদেবপুর গ্রামের বড় বাড়িতে গত বুধবার গভীর রাতে সন্ত্রাসী হামলা, লুটপাট ও জায়গা দখলের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়াগেছে। সরজমিনে জানাযায়, বড়রামদেব পুর কান্দির পাড় বড় বাড়ির শরিয়ত উল্যাহ’র ৩ ছেলে অলি উল্যাহ, জাহাঙ্গীর আলম ও সালাউদ্দিন। এ তিন সহোদরের মধ্যে সম্পত্তি বিরোধের জের ধরে ২০০৩ সালে সহোদর জাহাঙ্গীর আলম ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে অলি উল্যাহ’র দু’টি চোখ নষ্ট করে দেয়।
২০০৯ সালে আবারও তার সহোদর ভাই সালাউদ্দিন অলি উল্যার উপর হামলা করে তাকে আহত করে। এ নিয়ে কোর্টে একটি মামলা হয়। গত কিছু দিন যাবত অলি উল্যাহ’র ছোট ভাই জাহাঙ্গীর আলম তার নিকট তার অতীত ভুলের জন্য ক্ষমা প্রর্থনা করে। অলি উল্যা আবেগে পড়ে তাকে ক্ষমা করে বুকে জড়িয়ে নেয়। এরপর থেকে সহোদর জাহাঙ্গীর আলম অলি উল্যার ঘরে আসা-যাওয়া, খাওয়া দাওয়া করে সুকৌশলে অলি উল্যার পরিবারের সদস্যদের মন জয় করে নেয়।
দুষ্ট ফন্দিবাজ জাহাঙ্গীর আলম সু-সর্ম্পকের আড়ালে সহোদর সালাউদ্দিনকে নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করে। জাহাঙ্গীর আলমের এক শতাংশ সম্পত্তি অলি উল্যাহ’র নিকট বিক্রি করার মর্মে একটা বায়না চুক্তি করেন নোটারী পাবলিক নোয়াখালী’র মাধ্যমে। নোটারী রেজিং: ২০, তারিখ: ২০.০৭.২০২০ ইং। বায়না চুক্তি করার পর সম্পত্তির দখল ও বুঝিয়ে দেয়। গত কয়েক দিন
আগে জাহাঙ্গীর আলম একই বাড়ির আমেরিকা প্রবাসী সুমন গংদের নিকট বায়না চুক্তিকৃত সম্পত্তি বিক্রি করে দেয়।
এ নিয়ে পুনরায় অলিউল্যাহ’র সাথে দুই সহোদর এবং আমেরিকা প্রবাসী সুমনগংদের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে উভয় পক্ষ কবির হাট থানায় পাল্টাপাল্টি জিডি করেন। জিডির আলোকে কবির হাট থানার এসআই (নিরস্ত্র ) মো. ফাত্তার মিয়া এবং এসআই (নিরস্ত্র ) রোবেল মিয়া গত ২ সেপ্টেম্বর উভয় পক্ষকে থানায় ডেকে নিয়ে আপোস নামা করেন। বিরোধপূর্ণ সম্পত্তিতে কোনো পক্ষই আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত কোনো স্থাপনা নির্মাণ, দখল বা পরিবর্তন করা যাবেনা। যে অবস্থায় আছে সে অবস্থায় থাকবে এবং আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে এ বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান করা হবে মর্মে উভয় পক্ষ আপোস নামায় স্বাক্ষর করে।
অলি উল্যার সহোদর জাহাঙ্গীর আলম, সালাউদ্দিন, আমেরিকা প্রবাসী সুমন, রুমোন, মো. ইসমাইল, সুরজ মিয়া, নিশান মিয়া ও রহিমা বেগমের হুকুমে গত ৯ সেপ্টম্বর বুধবার গভীর রাতে ভাড়া করা সন্ত্রাসী ওমর ফারুক রানা, সুজন, দুলাল, অন্তর, রাজু, রাসেল, দিদার, নাহিদ, সবুজ, বাবুসহ ৮০ থেকে ৯০ জন অলি উল্যাহ’র বসত ঘরে হামলা চালিয়েছে বলে অন্ধ অলি উল্যাহ ও তার পরিবারের সদস্যরা জানান। তারা আরো জানান, এ সময় অলি উল্যা ঘর থেকে বের হলে তাকে আঘাত করে মাটিতে পেলে দেয় এবং ঘরে ঢুকে স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা লুটপাট করে নিয়ে যায়।
কয়েকজন সন্ত্রাসী অলি উল্যার বসত ঘর ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে থাকে এবং কয়েক জন সন্ত্রাসী বিরোধপূর্ণ সম্পত্তিতে ঘর নির্মাণের চেষ্টা করে। অলি উল্যাহর ছেলে ইয়াসিন আরাফাত কবিরহাট থানায় ফোনে বিষয়টি অবগত করলে ঘটনাস্থলে কবিরহাট থানার এসআই মোহাম্মদ ফাত্তার মিয়া তার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে আসেন। পুলিশের সামনে দিয়ে সন্ত্রসীরা পালিয়ে যায়। পর দিন কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মির্জা মোহাম্মদ হাসান ঘটনাস্থলে এসে দেখে যান।
এ ব্যাপারে একইবাড়ির সাবেক ইউপি সদস্য বিটু বলেন- ”গভীর রাতে সন্ত্রসীরা বাড়িতে হামলা করলে আমি এবং বাড়ির লোক এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীদেরকে দেশিয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত দেখলে বাড়ির লোকজন ঘরে ঢুকে পড়ে। আমি দাড়িয়ে থাকলে আমাকে সন্ত্রসীরা হুমকী দেয়। পরবর্তীতে আমিও ঘরে ঢুকে পড়ি।” এ ব্যাপারে অলি উল্যার ছেলে ইয়াসিন আরাফাত বলেন- ”আমার কাকা জাহাঙ্গীর আলম আমার বাবাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে দু’টি চোখ নষ্ট করে দেয়।
২০০৯ সালে আমার জেঠা সালাউদ্দীন চোখ নষ্ট করার মামলা প্রত্যাহার করার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। কিন্তু আমরা মামলা প্রত্যাহার না করায় আমার বাবার উপর আবারো হামলা চালায় সালা উদ্দিন। আমার বাবার মত আমাকেও হত্যার পরিকল্পনা করে। আমাকে বিভিন্ন সময় আমার চাচা-জেঠা ও আমাদের একই বাড়ির সুমনগংরা সন্ত্রাসী দিয়ে বিভিন্ন প্রকার হুমকি প্রদান করে আসছে। আমাদেরকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদের হুমকি প্রদান করে। আমি এবং আমার পরিবার বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। স্থানীয় প্রশাসন, সদর সুবর্ণচর আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি ও প্রধানন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এ সন্ত্রাসীদের বিচারের দাবি জানাই।” এ ব্যাপারে কবিরহাট থানার এসআই নিরস্ত্র ফাত্তার মিযা বলেন- “আমি বিষয়টি শুনার পর তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পাইনি। কেউ আমার নিকট এ ব্যাপারে বাদী হয়নি। কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মির্জা মোহাম্মদ হাসান বলেন, আমি ঘটনা শুনে পরের দিন দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এসেছি।