নাগরিক সেবায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করা হবে– আইসিটি প্রতিমন্ত্রী

ঢাকা, ৬ আষাঢ় (২০ জুন): তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, স্বাস্থ্য-সহ নাগরিক সেবাকে আরো স্বচ্ছ, দ্রুত ও জবাবদিহিতার আওতায় আনতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহারের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সমাজকে বদলে দিতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের সেবা, পরিবহন, শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য এবং পরিবেশ উন্নয়নে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের জন্য ইত্যোমধ্যেই একটি গাইডলাইন ও টাইমফ্রেম প্রস্তুত করা হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী আজ চট্টগ্রাম সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত জুম প্লাটফর্মে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেবায় আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স’ বিষয়ক দু’দিনের প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বজুড়েই এআই প্রয়োগের ঢেউ লেগেছে। বিভিন্ন শিল্প কারখানায় নিয়ন্ত্রিত প্রযুক্তির পাশাপাশি এআই ব্যবহার শুরু হয়েছে। অতিসম্প্রতি ইন্টারনেট অভ্ থিংকস এর সঙ্গে আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স, বিগ ডেটা, ব্লক চেইন শব্দগুলো জোরালোভাবে উচ্চারিত হচ্ছে। এই টার্মগুলো ইতোমধ্যেই বাংলাদেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রযুক্তি বিপ্লবে অনেক আগেই এআই নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এর প্রভাব আমাদের দেশেও আত্মপ্রকাশ করতে শুরু করেছে। বিশেষ কয়েকটি খাত, যেমন- সেবা, পরিবহন, শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য এবং পরিবেশ খাতে এআই এর ফলপ্রসূ প্রায়োগিক দিক চিহ্নিত করা হয়েছে। সর্বোপরি ইতোম্যধ্যে রাইড শেয়ারিং, বাংলা চ্যাট বটের ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং, বিমান ও হোটেল বুকিং, রিয়েল টাইম ম্যাপিং-সহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যবহার শুরু হয়েছে।
পলক আরো বলেন, জনগণকে সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে এআই অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার যাথার্থতা, গতিময়তা ও দক্ষতা বাড়ায়। অবশ্য এআই ব্যবহারের সফলতা নির্ভর করে ডেটার যথাযথ ব্যবস্থাপনা ও ডিজিটাল অবকাঠামোর ওপর। এছাড়া নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ, স্কিল রিসোর্স, পর্যাপ্ত বিনিয়োগ, গবেষণা ও উন্নয়ন সুবিধা থাকা দরকার। এ কারণে সরকার ইতোমধ্যেই ২৮টি হাইটেক পার্ক, ৬৪টি শেখ কামাল আইটি ইনকিউবেশন সেন্টার তৈরি করেছে। চট্টগ্রাম প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে দেশের প্রথম বিজনেস ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন করা হচ্ছে। আশা করছি, এই উদ্যোগ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের এআই এর মতো কাটিং এজ প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্বদানের সুযোগ তৈরি করবে।
চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ডঃ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেন। চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মালয়েশিয়ার মাল্টিমিডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাষ্ট্রের মালটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রধানগণ এবং দেশি-বিদেশি প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞগণ জুম অনলাইনে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন। পরে প্রতিমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।