ভেঙ্গে পড়ার ৪ বছরেও নির্মাণ হয়নি নতুন ভবন, দুর্ভোগে শিক্ষার্থীরা

মজনুর রহমান আকাশ, গাংনীঃ নির্মানাধিন ভবনের সিঁড়ি ধ্বসে পড়ায় চার বছর যাবত বন্ধ রয়েছে মেহেরপুরের গাংনী নবীণপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামো নির্মানের কাজ। সেই থেকেই নতুন ভবনের কাজ শুরু না হওয়ায় টিনের ছাউনি বিশিষ্ট ছোট্ট তিনটি কক্ষ নিয়ে কোন রকমেই চলছে পাঠদান। আর জরাজীর্ণ ভবনে শিক্ষকদের বসার যায়গা। বেড়েছে শিক্ষার্থীদের নানা দুর্ভোগ। তবে দ্রুত ভবন নির্মানের ব্যবস্থা করা হবে বলছে জেলা প্রশাসক।
গাংনী উপজেলার নবীনপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নতুন অবকাঠামো নির্মানের জন্য ২০১৬ সালে এলজিইডি’র তত্বাবধায়নে ৫৭ লাখ টাকা ব্যায়ে অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শুরু হয়। কাজ চলাকালিন সময়ে ২০১৭ সালে ধ্বসে পড়ে সিঁড়ির ছাদ। সে সময় অভিযোগ উঠে নিম্ন মানের কাজের। তদন্তে আসে ঢাকার একটি দল। নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যান বুয়েটে। পরিক্ষা শেষে প্রমান মেলে নিম্ন মানের কাজের। বিল্ডিং ভেঙ্গে নতুন করে অবকাঠামো তৈরির নির্দেশও দেন দলটি। তারপর থেকেই বন্ধ রয়েছে কাজ।
আশে পাশের সব বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মান হয়েছে কিন্তুু এই বিদ্যালয়টিতে ভবন না থাকায় তিন কক্ষ বিশিষ্ট টিনের ছাউনির মধ্যে চলছে পাঠদান কার্যক্রম। গাদাগাদি বসে কোন রকমেই ক্লাস করছে ছাত্র-ছাত্রীরা। এভাবেই গেল কয়েক বছর ধরে চলছে এমন কার্যক্রম। পাশে জরাজীর্ণ বাঁশের বেড়া দিয়ে তৈরী ঝুপড়ি ঘরে বসেন শিক্ষকরা। তবে নতুন ভবন নির্মানের ব্যাপারে কোন অফিসই দায় নিতে চাই না বলে জানান শিক্ষকরা।
শিক্ষার্থীরা জানায়, স্কুলে বিলডিং না হওয়া ছোট বেঞ্চে ২ জন বসার জায়গা কিন্তুু চারজনও বসতে হয়। অফিসও ভালো না বৃষ্টি হলেই ভিজে যায়।শীতের সময় ঠান্ডা লাগে গরমের সময় গরম লাগে থাকা যায় না পড়াশুনা হয় না। বৃষ্টির সময় বৃষ্টি পড়ে ঘর ঠান্ডা লাগে। প্রধান শিক্ষক তামজিদুর রহমান জানান, কাজ চলাকালীন সময়ে ভবনটি ধ্বসে পড়ে অদ্যবদি এই ভবনের কোন সুরাহা হয়নি। উপজেলা এলজিইডি অফিস, শিক্ষা অফিস কেউ এর দায় নিতে চাই না। এর মধ্যেই রোদ বৃষ্টিকে ভিজে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করতে হয়।
গাংনী উপজেলা প্রকৌশলী গোলাপ আলী শেখ জানান, বর্তমানে একটি টিনের ঘরের মধ্যে ছাত্রছাত্রী নিয়ে শিক্ষকরা ক্লাস করছেন। এখানে একটি নতুন ভবনের জন্য শিক্ষা কমিটির মিটিংয়ে নতুন ভবনের প্রস্তাব করবো। আমাদের ডিপার্টমেন্ট প্রধানের সাথে কথা হয়েছে প্রস্তাব দিলে এখানে তিনি একটি নতুন ভবন দিবেন। নতুন ভবন দিলে টেন্ডার করে বাস্তবায়ন করলে শিক্ষার্থীদেরর দুর্ভোগ থাকবে না। মেহেরপুর জেলা প্রশাসক আতাউল গণি আমাদের শিক্ষার্থীরা এটার জন্য দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। বিদ্যালয়ে পড়ার কোন পরিবেশ নাই, কোন অবকাঠামো নাই।
এভাবে সরকারী একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় বাংলাদেশে চলতে পারে না। এ বিষয়ে এলজিইডির সাথে কথা বলেছি। সরকারের কাছে এ বিষয়ে লিখেছি আবারো তাগিদ দেব। যাতে নবীনপুরে নতুন একটি ভবন নির্মান করে দেওয়া যায়।