প্রধান মেনু

আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবসে প্রধানমন্ত্রীর বাণী

ঢাকা, ১১ মাঘ (২৫ জানুয়ারি) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবসে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন : “বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের উদ্যোগে ‘আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস ২০২০’ পালন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষে আমি বাংলাদেশ কাস্টমসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী, সেবাগ্রহীতা ও অংশীজন-সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। ১৯৫২ সালের ২৬ জানুয়ারি General Agreement on Tariffs and Trade (GATT)- এর মূলনীতির উপর ভিত্তি করে বিশ্ব কাস্টমস সংস্থা (WCO) আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে।

প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই সংস্থাটি আধুনিক ও সহজতর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে এর সদস্যভুক্ত দেশগুলোকে নেতৃত্ব, পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান-সহ বর্তমান ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে। এ বছর সংস্থাটি সামাজিক, অর্থনৈতিক, স্বাস্থ্য এবং পরিবেশগত দিকসমূহকে প্রাধান্য দিয়ে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে সদস্যভুক্ত ১৮৩টি দেশের টেকসই ভবিষ্যৎ অর্জনে কাস্টমস এর সক্রিয় ভূমিকার উপর গুরত্বারোপ করেছে। তাছাড়া, জলবায়ু পরিবর্তন ও বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ উন্নয়নের উপরেও জোর দিয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে, বিশ্ব কাস্টমস সংস্থা’র এ বছরের মূল প্রতিপাদ্য ‘Customs Fostering Sustainability for People, Prosperity and the Planet’- যা অত্যন্ত সময়োপযোগী বলে আমি মনে করি। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ও শিল্পায়নের উপর ব্যাপক গুরুত্ব দিয়েছিলেন। যার ফলে দেশে রাজস্ব আদায়ের বহুমুখী খাত সৃষ্টি হয়েছিলো।

জাতির পিতার সুযোগ্য নেতৃত্ব ও সুদূরপ্রসারী কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে মাত্র সাড়ে তিন বছরেই যুদ্ধবিদ্ধস্ত বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশে রূপান্তরিত হয়েছিলো। আমরা ২০০৯ সাল থেকে পরপর তিনদফা সরকার গঠন করে সমগ্র দেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বিভিন্নমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। আমরা কাস্টমস আইন, ১৯৬৯ রহিত করে যুগোপযোগী, সহজ, সমন্বিত ও সুসংহত নতুন কাস্টমস আইন, ২০১৪ প্রণয়ন করেছি, যা ২০১৬ সালের ১ জুলাই হতে কার্যকর হয়েছে। আমাদের সরকার ‘Customs Modernization Strategic Action Plan, 2019-2022’ শীর্ষক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ২০২১ সালের মধ্যে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ লক্ষ্য অর্জনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে অতি সংবেদনশীল তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়াকে আরো সহজতর করেছি।

ইতোমধ্যে আমরা ৩৮টি ভিন্ন মন্ত্রণালয়/সংস্থার সমন্বিত সেবা কার্যক্রম ‘National Single Window’ বাস্তবায়ন শুরু করেছি। ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরের তুলনায় আমদানি শুল্ক থেকে রাজস্ব আহরণ তিনগুণের অধিক বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ৬৩,৩৮২ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। আমাদের গৃহীত এসকল পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশ আজ অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে; বিশ্বে ‘উন্নয়নের বিস্ময়’ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। আমরা আগামী ১৭ই মার্চ ২০২০ থেকে ১৭ই মার্চ ২০২১ সময়কে মুজিববর্ষ  ঘোষণা করেছি। এ সময়ে বাংলাদেশ এবং ইউনেস্কো যৌথভাবে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদ্‌যাপন করবে।

আমরা ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যমআয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তোলার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। বাংলাদেশ কাস্টমস তাদের পেশাগত উৎকর্ষতা অর্জনের মাধ্যমে দেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে- আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবসে এই আমার প্রত্যাশা। আমি ‘আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস ২০২০’ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সাফল্য কামনা করছি।

জয় বাংলা, জয়
বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী
হোক।”