জনগণ আওয়ামী লীগের সাথে, শেখ হাসিনার সাথে — তথ্যমন্ত্রী

‘জনগণ আওয়ামী লীগের সাথে, শেখ হাসিনার সাথে, আর বিএনপি জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে’ বলেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্মুদ। আজ দুপুরে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি মেহেরুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত প্রধানমন্ত্রীর সাবেক সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মুহাম্মদ জয়নুল আবেদীন বীর বিক্রম-এর নাগরিক শোকসভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় সমসাময়িক রাজনীতি বিষয়ে তিনি একথা বলেন। প্রয়াতের বড় ভাই ইসমাইল হোসেন মানিকের সভাপতিত্বে শোকসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, চট্টগ্রাম-৮ আসনে নাকি যারা বিদেশে থাকতেন, যারা মৃত, এ ধরনের অনেক মানুষ ভোট দিয়েছেন। আমি প্রশ্ন করতে চাই, চট্টগ্রাম মহানগর এলাকায় ভোটারের সংখ্যা প্রায় পৌনে ৪ লাখ। সেই পৌনে ৪ লাখ ভোটারের মধ্যে মাত্র ৩৬ হাজার ভোট পেয়েছেন। যদি ভোটকেন্দ্র দখল হতো, আর তার ভাষ্য অনুযায়ী এ ধরনের ভোটাররা যদি ভোট দিত তাহলে মোছলেম উদ্দিন এক-দেড় লাখ ভোট পেত।’
মন্ত্রী বলেন, ‘সুতরাং বলা যায়, এখানে পরিপূর্ণ সুষ্ঠু ভোটের মাধ্যমে মোছলেম উদ্দিন জয়ী হয়েছেন। সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে বিধায় ভোট প্রদানের হার ২৫ শতাংশের নিচে। অন্যথায় ভোট প্রদানের হার আরো অনেক বেশি হতো। এই ধরনের মিথ্যা ভাষণ দিয়ে তারা জনগণকে বিভ্রান্ত না করতে তাদের প্রতি অনুরোধ জানাবো। জনগণ আওয়ামী লীগের সাথে, শেখ হাসিনার সাথে রয়েছে।’
মানুষের জন্য নিভৃতে কাজ করেছেন জয়নুল আবেদীন — তথ্যমন্ত্রীঃ তথ্যমন্ত্রী এ সময় প্রয়াত জয়নুল আবেদীনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘তিনি মানুষের জন্য নিভৃতে কাজ করেছেন, সেকারণে তিনি আজকে এত জনপ্রিয়। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য আজ হাজার হাজার মানুষের সমাগত হয়েছে।’ ড. হাছান মাহ্মুদ বলেন, ‘মেজর জেনারেল জয়নুল আবেদীন রাজনীতি করতেন না। কিন্তু তার গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকার বাসায় কেউ গেলে দেখতে পেতেন, একজন রাজনীতিবিদের বাড়িতে যেভাবে সকাল বেলা প্রচুর মানুষ দেখা করতে যায়, সে রকম মানুষের যাতায়াত। তার গ্রামের বাড়িতেও একইভাবে গণমানুষের যাতায়াত ছিল। রাজনীতি না করেও সারাজীবন তিনি দেশের মানুষের জন্য কাজ করেছেন।
জয়নুল আবেদীনের হাত ধরে বহুজনের জীবনে পরিবর্তন এসেছে, বহুজন জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন, অনেকের জীবনে আমূল পরিবর্তন এসেছে’। ‘কোনো কথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে কেউ যখন সাহস করে বলতে পারতেন না, তখন জননেত্রী শেখ হাসিনার শতভাগ বিশ্বস্ত জয়নুল আবেদীনের সহায়তা নিতেন, কারণ তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এমনভাবে পরিবেশন করতেন, তাতে সম্মতি আদায় করা যেত’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামের বে টার্মিনাল প্রকল্প হাতে নেওয়ার জন্য আমি প্রচণ্ড পীড়াপীড়ি করছিলাম, পরে মেজর জেনারেল জয়নুল আবেদীনের সঙ্গে কথা বললাম। গত নির্বাচনের আগে তাঁকে আমি বললাম, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমি বলেছি, আপনিও একটু বলুন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি এই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন, তাহলে প্রকল্পটি গতি পাবে। যে কোন ভাবেই নির্বাচনের আগে যেন এই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয় এটির ব্যবস্থা করতে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামে আসার সুযোগ না পেলেও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন জয়নুল আবেদীনের উদ্যোগের কারণে। আজকে বে টার্মিনালের কাজ শুরু হয়েছে। শুধু চট্টগ্রামের নয়, বাংলাদেশের বহু উন্নয়ন প্রকল্প মেজর জেনারেল জয়নুল আবেদীনের কারণে গতি পেয়েছে।’ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি মোসলেম উদ্দিন আহমেদ এমপি, চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী এমপি, ওয়াসিকা আয়েশা খানম এমপি, কানিজ ফাতেমা এমপি, সাইমুম সারওয়ার কমল এমপি, আশেক উল্লাহ রফিক এমপি, আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান প্রমুখ শোকসভায় বক্তব্য রাখেন।