প্রধান মেনু

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবিলায় তহবিল বৃদ্ধির আহ্বান ডেপুটি স্পিকারের

ঢাকা, ২৫ অগ্রহায়ণ (১০ ডিসেম্বর) : ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া বলেছেন, পরিবেশের অবক্ষয় প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে যা সমাজের জন্য উচ্চ ব্যয় আরোপ করে। টেকসই উন্নয়নের জন্য পরিবেশগত টেকসই একটি মৌলিক বিষয়। আজ দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে অনুষ্ঠেয় ‘Climate Change and International Collective Action’ শীর্ষক পরিবেশ ও বিকাশ বিষয়ক ১৯ তম এশিয়া প্যাসিফিক সংসদ সদস্যদের সম্মেলনে বাংলাদেশ সংসদীয় প্রতিনিধিদলনেতার বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।

ডেপুটি স্পিকার বলেন, ২০১৫ সালে জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনে উন্নত দেশসমূহ ২০২০ সালের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন ও প্রশমন সংক্রান্ত পদক্ষেপের জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তা হিসাবে যৌথভাবে প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তায় সম্মত হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবিলায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তহবিল বৃদ্ধি না করলে কয়েক মিলিয়ন মানুষের জীবন ও জীবিকা ঝুঁকির মধ্যে থাকবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এসময় তিনি জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবিলায় আরো বেশি অন্তর্জাতিক তহবিল বৃদ্ধির আহ্বান জানান।

গ্লোবাল জলবায়ু ঝুঁকি সূচকে বাংলাদেশকে বিশ্বের ষষ্ঠ জলবায়ু বিপর্যয়ের দেশ উল্লেখ করে ডেপুটি স্পিকার বলেন, অনেক চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে অন্যতম দীর্ঘমেয়াদী হুমকি যা বাংলাদেশের অর্থনীতি, জীবিকা, খাদ্য সুরক্ষা, পরিবেশ এবং সামাজিক পরিকল্পনার সমস্ত দিককে প্রভাবিত করতে পারে। প্রতিবছর জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাবের ফলে বাংলাদেশ জিডিপির ২-৩ শতাংশ হারানোর ঝুঁকি নিয়ে থাকে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় ৩০ মিলিয়ন মানুষ শরণার্থী হতে পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাস্তববাদী ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশের উদ্যোগের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতিসংঘ কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘চ্যাম্পিয়ন অভ দ্য আর্থ’ সম্মানে ভূষিত হয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছেন যে জলবায়ু পরিবর্তনে বিনিয়োগ সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জনে সহায়ক। উপকূলীয় অঞ্চলগুলো বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো জলবায়ু সম্পর্কিত বিপর্যয়ের অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যেও বাংলাদেশ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সাফল্য অর্জন করেছে।

ডেপুটি বলেন, সংসদ সদস্যরা জলবায়ু চ্যালেঞ্জগুলি কাটিয়ে ওঠার মাধ্যমে আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদার করতে নেতৃত্ব নিতে পারেন। টেকসই উন্নয়ন কেবল তখনই বাস্তবে পরিণত হতে পারে যখন জীববৈচিত্র্য এবং বাস্তুতন্ত্র স্বাস্থ্যকর এবং স্থিতিস্থাপক হয়। এ সময় তিনি কার্যকর পানি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নিরাপদ পানীয় জল এবং স্যানিটেশন নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। জলবায়ু দ্বারা পরিচালিত অভিবাসীদের চ্যালেঞ্জকে যথাযথভাবে সমাধান না করা গেলে টেকসই বিকাশের লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ফজলে রাব্বী আরো বলেন, এশিয়া প্যাসিফিক দেশগুলো বিভিন্ন দূষণের মুখোমুখি হচ্ছে বিশেষত বর্জ্য অব্যবস্থাপনা, বায়ুদূষণ, পানিদূষণ, জনসংখ্যার আধিক্য, অপরিকল্পিত নগরায়ন ও ব্যাপক শিল্পায়নের কারণে। এসময় বিভিন্ন দূষণের প্রভাব হ্রাস করতে এবং জাতিসমূহের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ (এসডিজি) অর্জনে পারস্পরিক আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন ডেপুটি স্পিকার।