সৈয়দপুরে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রাণ নাশের হুমকি প্রদানের অভিযোগে গৃহবধুর সংবাদ সম্মেলন

শাহজাহান আলী মনন, নীলফামারী প্রতিনিধি ॥ নীলফামারীর সৈয়দপুরে এক ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রাণ নাশের হুমকি প্রদানের অভিযোগ করেছেন এক বিধবা গৃহবধু। এতিম ও নাবালকের জমি দখলে বাধা দেওয়ায় ও হয়রানীর প্রতিবাদ করায় ওই গৃহবধুকে প্রাণ নাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। ৯ ডিসেম্বর সোমবার দুপুরে শহরের নয়াটোলা এলাকায় নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিধবা গৃহবধু মোছাঃ মাহমুদা আলম তৃপ্তি (৪৮)। এ সময় তার সাথে ছিল নাবালিকা মেয়ে রিয়া (১৩)।
উপস্থিত সংবাদকর্মীদের উদ্দেশ্যে লিখিত বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে মাহমুদা আলম তৃপ্তি বলেন, একই এলাকার ঠিকাদার মোঃ নজরুল ইসলাম লিটন দীর্ঘ দিন থেকে তার নাবালক ও এতিম শিশুদের নামে বাবার হেবা করে দেওয়া ২০ শতক জমি দখলের পায়তারা করছেন। লিটনের দাবি গৃহবধুর মৃত. স্বামী মনজের আলম রোমেল বিগত ২০০৯ ইং সালে শহরের জসিম বাজার এলাকার ওই জমি তার কাছে সহ আরও ২ জনের কাছে বিক্রি করেছেন। অন্য দুইজন ক্রেতা হলেন সোনাখুলি মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মনসুর আলী ও নুর তাজ। কিন্তু এতিম ও নাবালক সন্তানদের উক্ত জমি হেবা দলিল করে দেওয়া হয়েছে বিগত ২০০৬ ইং সালে। নাবালক সন্তানদের নামের জমির অভিভাবক ছিল তার স্বামীর প্রথম স্ত্রী আফরোজা বেগম।
বিগত ২০১২ ইং সালে তার সাথে মনজের আলমের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটলে তিনি অন্যত্র চলে যান। এমতাবস্থায় নাবালকদের জমি তার বাবা বিক্রি করতে পারেন না। বিক্রি করতে হলে আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে সন্তানদের লেখাপড়া, বিবাহ বা চিকিৎসার জন্য বিক্রি করা যায়। কিন্তু এমন কোন ঘটনাই ঘটেনি আমাদের ক্ষেত্রে। তারপরও যদি আমার স্বামী মনজের আলম রোমেল জমি বিক্রি করে থাকে তাহলে সে জমির মূল্য প্রদান করে জমিটি নাবালক সন্তানদের নামেই রেখে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ ফেরত দিতে আমি প্রস্তুত। কিন্তু মাওলানা মনসুর ও নুর তাজ এ ব্যাপারে রাজি হলেও নজরুল ইসলাম লিটন না মানায় বিষয়টি স্থানীয়ভাবে শালিস বৈঠক করেও সমাধান হয়নি।
এমতাবস্থায় বিষয়টি সুরাহার জন্য সন্তানদের বর্তমানে একমাত্র অভিভাবক হিসেবে আমি বাদি হয়ে আদালতে মামলা করি। মামলা নং ১১০/১২। যা বিচারাধিন রয়েছে। অথচ মামলা চলাকালিন নজরুল ইসলাম লিটন বার বার ওই জমিটি দখলের অপচেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু সফল হতে না পেরে মিথ্যে জিডি দিয়ে হয়রানী করে চলেছে। উক্ত জিডি এখন মামলায় পরিনত হয়েছে। যা বিচারাধিন। তারপরও ঠিকাদার নজরুল ইসলাম লিটন থেমে থাকেনি। তিনি প্রায়ই জমিতে গিয়ে হট্টগোলের সৃষ্টি করেন। জমিটিতে লাগানো প্রায় ১ হাজার বিভিন্ন গাছ কেটে ফেলেছেন। এমনকি এলাকার বখাটেদের লেলিয়ে দিয়ে আমার ও সন্তানদের নানাভাবে হুমকি প্রদর্শন করে চলেছেন।
বিশেষ করে চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারী আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে নজরুল ইসলাম তার ক্যাডার বাহিনী নিয়ে উপদ্রব বাড়িয়ে দিয়েছে। তারা প্রায়ই আমার বাড়ির সামনে এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করাসহ মেয়ে স্কুলে যাওয়ার সময় উত্যক্ত করছে। এতে আমি চরমভাবে অসহায় হয়ে পড়েছি। এমনিতে আমি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন। প্রায় সময়ই আমাকে ক্যামো থ্যারাপি দিতে হয়। এই পরিস্থিতিতে তাদের উপদ্রব ও হয়রানির ফলে মানসিক ও শারীরিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছি। প্রায়ই আতংকে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে। জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। যে কোন সময় নজরুল ইসলাম লিটনের বাহিনী অনাকাঙ্কিত কোন ঘটনা ঘটাতে পারে। এতে আমার ও আমার সন্তানদের জীবনে ভয়াবহ দূর্ভোগের সৃষ্টি হতে পারে। এথেকে পরিত্রাণের জন্য প্রশাসন, মানবাধিকার সংগঠন ও সংবাদকর্মীদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।