গণতন্ত্র মুক্তি দিবসে প্রধানমন্ত্রীর বাণী

ঢাকা, ২০ অগ্রহায়ণ (৫ ডিসেম্বর) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্র মুক্তি দিবস উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন : “৬ ডিসেম্বর ‘গণতন্ত্র মুক্তি দিবস’। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ইতিহাসে এক তাৎপর্যপূর্ণ দিন। ১৯৯০ সালের এই দিনে স্বৈরাচারের পতন হয়। এ মহান দিবসে গণতন্ত্রের অতন্দ্র প্রহরী সংগ্রামী দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। ’৯০ পরবর্তী দুই দশকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার রক্ষায় দায়িত্বশীল ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশের সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে অবৈধ ক্ষমতা দখলের পথ রুদ্ধ হয়েছে। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। পরবর্তীকালে অসাংবিধানিক ও অবৈধ সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়।
তারা জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে। মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে বিকৃত করে। দেশে নৈরাজ্য ও সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, জনগণের ভোট ও মৌলিক অধিকারসমূহ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমরা দীর্ঘ সংগ্রাম করি। এ আন্দোলন-সংগ্রামে দেশের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেয়। নুর হোসেন, বাবুল, ফাত্তাহ, ডাঃ মিলনসহ অগণিত গণতন্ত্রকামী মানুষ আত্মাহুতি দেন। গণআন্দোলনের চাপে স্বৈরাচারী শাসক ১৯৯০ সালে ৬ ডিসেম্বর নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয়। শহিদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয় গণতন্ত্র। দেশবাসীর এই স্বতঃপ্রণোদিত ত্যাগ ও অধিকার রক্ষায় আপোশহীনতার জন্য আমি কৃতজ্ঞতা জানাই। গণতন্ত্র ও অধিকার আদায়ের সকল আন্দোলন-সংগ্রামে জীবন উৎসর্গকারী দেশপ্রেমিক শহিদদের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করছি।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্র, সংবিধান, আইনের শাসন ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। বিচারহীনতার সংস্কৃতি বন্ধ করে আমরা দেশে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। সপরিবারে জাতির পিতার হত্যার বিচারের রায় আমরা কার্যকর করেছি। জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচার সম্পন্ন হয়েছে। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী-মানবতাবিরোধীদের বিচারের রায় কার্যকর হচ্ছে। আদালত ২১-এ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় প্রদান করেছে। কোন ষড়যন্ত্রই আমাদের সত্য ও ন্যায় এবং মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার পথ থেকে বিচ্যুত করতে পারবে না। আসুন, গণতন্ত্রের ভিত্তিকে আরো শক্তিশালী করে দেশের উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলি।