প্রধান মেনু

ঘুষ ছাড়াই পুলিশ বাহিনীতে আলোচিত নিয়োগ এবার স্বচ্ছতার নজির স্থাপন করলেন ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি ০৫জুলাই ২০১৯ঃ ঘুষ ছাড়াই পুলিশ বাহিনীতে আলোচিত নিয়োগ পর্বে ,এবার স্বচ্ছতার নজির স্থাপন করলেন ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মোঃ হাসানুজ্জামান পিপিএম। ঘুষ ছাড়া পুলিশ বাহিনীতে চাকরি পাওয়া যায় ঝিনাইদহের বাস্তবতায় মোটামুটি অবিশ্বাস্য একটি বিষয়। অতীতে ঝিনাইদহে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের সময় টাকা আদায় মুখরোচক বিষয়ে পরিণত হত। তবে এবার ঝিনাইদহ জেলা পুলিশ ব্যতিক্রমী একটি নজির স্থাপন করতে পেরেছে। যা নিয়ে তুমুল আলোচনা চলছে। ঘুষ লেনদেনের তেমন কোন অভিযোগ ছাড়াই জেলা পুলিশ ৫৯ জনকে কনস্টেবল পদে নিয়োগ চূড়ান্ত করেছে। এবার নিয়োগে কোনো বাণিজ্য হয়নি।

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ছাড়াই ঝিনাইদহ জেলা পুলিশের কনস্টেবল পদে ৫৯ জনকে নিয়োগ প্রশংসিত হয়েছে পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহলেও। এতে পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি বেড়েছে। কলঙ্কমুক্ত একটি নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য পুলিশের উপরমহল আন্তরিক ছিল এবার। এর মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়েছে, আন্তরিকতা থাকলে দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ে তোলা সম্ভব। ঝিনাইদহের পুলিশ বিভাগে কনস্টেবল নিয়োগে ‘স্বচ্ছতার নজির স্থাপিত হয়েছে’।

সরকারি নিয়ম অনুুযায়ী, ১০০ টাকার ব্যাংক ড্রাফট নিয়েআবেদনপত্রসহ চাকরি প্রার্থীদের ঝিনাইদহ পুলিশ লাইনে হাজির হতে হয়েছে। সেখানেই শারীরিক উপযুক্ততার পরীক্ষা শেষে লিখিত, মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষার পর সত্যিকারের যোগ্য প্রার্থীরা মনোনীত হয়েছেন। নিকট অতীতের ধারাবাহিকতায় এবার নিয়োগে কারো তদবির ধরতে হয়নি। টাকা দেওয়ার জন্য বিক্রি করতে হয়নি জমিজমা। আমরা নিকট অতীতে কনস্টেবল পদে নিয়োগে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা লেনদেনের কাহিনিও শুনেছি। নিয়োগ বিষয়টি যেকোনো ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। এখানে যোগ্য লোককে বঞ্চিত করে তদবির, সুপারিশ বা টাকা পয়সার বিনিময়ে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হলে তার চাকরি জীবনের সূচনাই হয় কালিমালিপ্ত। আমাদের সমাজে পুলিশ প্রসঙ্গে একটি কথা চালু রয়েছে। কথাটা হলো পুলিশ চাইলে সবই পারে।

এবারই প্রথম ঝিনাইদহে কনস্টেবল পদে নিয়োগে দীর্ঘদিনের দুর্নামে ভাটা পড়ল। ঝিনাইদহবাসি চাই এই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে অন্য প্রতিষ্ঠানও অগ্রসর হতে থাক। ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মোঃ হাসানুজ্জামান পিপিএম জেলার পুলিশ বিভাগের যে কোন অন্যায়, অনিয়ম, দুর্নীতি সাথে সাথে পদক্ষেপ গ্রহনে সর্বদা তৎপরের জন্য প্রশংসিত জেলাবাসির কাছে। উল্লেখ্য-এবার চাকরি প্রাপ্তদের মধ্যে অধিকাংকশরই পিতা দিনমজুর। কারো পিতা মৎস্যজীবী, কেউ রাজমিস্ত্রি, কেউ রিকসা ভ্যান চালক, কেউ এতিম কেউবা কৃষক। অর্থ বিত্তের জোরে এবার চাকরী হয়নি কারো।

দালাল চক্র ভিড়তে পারেনি ধারে কাছে। মেধা ও যোগ্যতার বলে বিনা ঘুষে পুলিশে চাকরি পেয়েছেন ৫৯ জন। চাকরি পাওয়ার ঘোষনা শুনে খুশিতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন অনেকের পিতা-মাতা। আর পরিচ্ছন্ন নিয়োগের কারিগর হচ্ছে ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার মো: হাসানুজ্জামান পিপিএম। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহে পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরির জন্য প্রথম দিনে মাঠে উপস্থিত ছিলেন ৩,০৪৮ জন। তার মধ্যে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন ৩৪৮ জন। চুড়ান্ত ভাবে উত্তীর্ণ হন ৫৯ জন। পুলিশ সুপারের ঘোষনা অনুযায়ী স্বচ্ছভাবে নিয়োগের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

ঝিনাইদহ পুলিশের ইতিহাসে ঘুষ বিহীন চাকরি প্রদান করায় বিভিন্ন মহল থেকে অভিনন্দন জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মো: হাসানুজ্জামান পিপিএমকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন গনমাধ্যমে তিনি প্রশংসায় ভাসছেন। উল্লেখ্য এর আগে ঝিনাইদহের অনেক যুবক ভিটেবাড়ি বিক্রি করে চাকরী গ্রহনের ইতিহাস রয়েছে। সাবেক অনেক পুলিশ সুপার এমন অনৈতিক কাজের সাথে জড়িত ছিলেন। আবার কেও দালালদের ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হয়েছেন এমন কথাও শোনা গেছে।