বাংলাদেশ ও তুরস্ক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত

আঙ্কারা, তুরস্ক (২৮ নভেম্বর) : বাংলাদেশ ও তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক গতকাল তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় সে দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের ১০ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং তুরস্কের পক্ষে নেতৃত্ব দেন তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী Suleyman soylu। উভয় মন্ত্রী অনিয়মিত অভিবাসন, নিরাপত্তা, সন্ত্রাসদমন, আইন- শৃঙ্খলাবাহিনীর দক্ষতা বৃদ্ধি এবং রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা করেন।
তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে অতীতে তুরস্কের সংকটকালে বাংলাদেশের সমর্থনের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন। তিনি দুই দেশের মধ্যে ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক সামঞ্জস্যতার কথা উল্লেখ করে দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে মর্মে আশা প্রকাশ করেন। তুরস্কে অবস্থিত সিরিয় শরনার্থীদের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরে তিনি বিভিন্ন দেশ থেকে আগত বিপুল সংখ্যক অভিবাসীর বিষয়ে তুরস্কের আর্থিক ও অন্যান্য সমস্যার কথা উল্লেখ করেন।
এছাড়া তিনি তুরস্কে বাংলাদেশি অনিয়মিত অভিবাসীর কথা উল্লেখ করে তাদের বাংলাদেশে ফেরত নেয়ার বিষয়ে অনুরোধ করেন। তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ অঞ্চলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে উভয় দেশের সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ সহযোগিতা প্রদান সহ বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের প্রতি মানবিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে উল্লেখ করেন।
আসাদুজ্জামান খান তাঁর বক্তব্যের শুরুতে তুরস্কের সরকার ও জনগণের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শুভেচ্ছা পৌঁছে দেন। তিনি বাংলাদেশ এবং তুরস্কের মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন এবং সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতির কথা দৃঢ়ভাবে ব্যক্ত করেন।
মন্ত্রী বলেন, যেহেতু রেমিটেন্স বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের দ্বিতীয় বৃহত্তম খাত, সেহেতু বাংলাদেশ সরকার নিরাপদ এবং আইনানুগ অভিবাসন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি এ বিষয়ে উভয় দেশের মধ্যে সহযোগিতামূলক উদ্যোগ গ্রহণের প্রস্তাব করেন। সন্ত্রাসদমন, মাদক নির্মূল এবং অন্যান্য অপরাধমূলক কাজের বিরুদ্ধে দু’দেশের আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা শরনার্থীদের প্রতি তুরস্ক সরকারের চলমান মানবিক সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের বিষয়ে তুরস্ক সরকারের রাজনৈতিক, নৈতিক ও মানবিক সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন এবং তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম. আল্লামা সিদ্দীকীসহ সফররত অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ এসময় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।