প্রধান মেনু

শিল্প নগরী গড়ে তুলতে বিসিক চেয়ারম্যানের নীলফামারী পরিদর্শন

শাহজাহান আলী মনন, নীলফামারী প্রতিনিধি ॥ উত্তরাঞ্চলের নীলফামারীতে নতুন করে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) এর শিল্প নগরী গড়ে তোলা হবে। এজন্য ২৩ নভেম্বর শনিবার দুপুরে জেলা সদর উপজেলায় সম্ভাব্য স্থান পরিদর্শন করেছেন বিসিক চেয়ারম্যান মোসতাক হোসেন এনডিসি। এর আগে সকাল ১০ টায় জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে মতবিনিয়ম সভা করেন বিসিক চেয়ারম্যান।

জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিসিকের উন্নয়ন ও সম্প্রসারন বিভাগের পরিচালক খলিলুর রহমান, বিসিকের রাজশাহী রংপুর বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক তামান্না রহমান, নীলফামারী জেলা পরিষদেও চেয়ারম্যান জয়নাল অবেদীন, স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক আব্দুল মোতালেব হোসেন সরকার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আজাহারুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) খন্দকার নাহিদ হাসান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এলিনা আক্তার, নীলফামারীর বিসিকের ব্যবস্থাপক হোসনে আরা খাতুন, চেম্বার সভাপতি মারুফ জামান কোয়েল, চেম্বারের সাবেক সভাপতি এসএম শফিকুল আলম ডাবলু, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসফিকুল ইসলাম রিন্টু প্রমুখ।

এসময় বিসিক চেয়ারম্যান জানান, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা প্রশাসনের প্রস্তাবনার প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে শিল্প এলাকা গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরীতে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। সেদিকে নজর রেখেই বিসিকের পক্ষে নীলফামারী জেলায় আগ্রহী নতুন উদ্যোক্তাদের নিবন্ধনের মাধ্যমে তালিকা করা হবে। এ জন্য তিনি স্থানীয় চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজ এর সহযোগীতা কামনা করেন। আগামী দুই বছরের মধ্যে নীলফামারীতে বিসিক নগরী গড়ে তোলা হবে। যেখানে এখানকার বিনিয়োগকারীদের জন্য সব সুবিধা থাকবে।

তিনি জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশন (বিসিক) এখন কর্মসংস্থানের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। নামে বিসিক, কিন্তু তার কার্যক্রম এখন অনেক বড় পরিসরে। ইতোমধ্যে আগামী ১০ বছরের জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। অবশ্যই এই সময়ের মধ্যে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা রয়েছে। যে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিসিকের তৈরি শিল্পপার্কে বিনিয়োগের ব্যাপারে আকৃষ্ট হবে। বিসিকের চেয়ারম্যান আশা প্রকাশ করে বলেন, এই বিসিক একদিন জিডিপিতে একটা বড় অবদান রাখবে। একদিন হয়তো জিডিপির মূল চালিকাশক্তি হতে পারে এই বিসিক শিল্পনগরী। এর জন্য আমরা প্রতিনিয়ত মনিটরিং করছি। অনেক সময় লবণ নিয়ে টানাপড়েন শুরু হয়। এই লবণের জন্য আলাদা একটি আইন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বিসিক এখন আর সেই আগের আমলের মতো চলবে না। এখন সময় এসেছে এর পুরোটাই খোলচ পাল্টানোর। আর সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু হয়ে গেছে। তিনি জানান, বিসিকের জুন পর্যন্ত মোট বাস্তবায়িত শিল্পনগরীর সংখ্যা ৭৬টি। এখানে পার্বত্য চট্টগ্রামও বাদ পড়েনি। এসব শিল্পনগরীতে মোট শিল্প প্লটের সংখ্যা ১০ হাজার ৫৯০টি। মোট বরাদ্দ করা প্লটের সংখ্যা ১০ হাজার ১৩৯টি। উৎপাদনরত শিল্প ইউনিটের সংখ্যা ৪ হাজার ৭৩১টি। আগামীতে এসব শিল্পপার্ক হবে একেকটি বড় শিল্পের জোগানদার। যেখান থেকে রফতানির ভলিয়ম প্রতিবছর শুধুই বাড়বে আর বাড়বে। আর রফতানি করা পণ্যের বিপরীতে আসবে বৈদেশিক মুদ্রা। বাংলাদেশে এই শিল্পনগরী হয়ে উঠবে বিনিয়োগের উৎসকেন্দ্র। তিনি বিসিকের কর্মপরিকল্পনা বিষয়ে উল্লেখ করেন, আগামী ১০ বছরে বাণিজিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ২০ হাজার একর জমিতে শিল্পপার্ক স্থাপন করার পরিকল্পনা নিয়েছেন। আর বর্তমানে যে শিল্পনগরী রয়েছে সেগুলো আরও সম্প্রসারণ করবেন। শুধু তাই নয়, এই শিল্পনগরীগুলোতে যুগোপযোগী শিল্প স্থাপন করবেন। আগের সেই বিসিকের ধারণা এখন অনেক পটপরিবর্তন হবে। যে কারণে বিদ্যমান পুরনো আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

মতবিনিময় সভা শেষে দুপুওে জেলা সদরের পলাশবাড়ি ইউনিয়নের নটখানা এলাকা ও সংগলশী ইউনিয়নের বড় সংগলশী এলাকার সম্ভাব স্থান পরিদর্শন করা হয়। জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী জানান, এ জেলার ব্রান্ডিং নাম হলো “উত্তরের শিল্প নগরী- দীপ্তিমান নীলফামারী”। এখানে উত্তরা ইপিজেড রয়েছে। পাশাপাশি জেলা জুড়ে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠান। এবার বিসিক শিল্পনগরী স্থাপিত হলে এ জেলার চিত্র আরো উন্নতির দিকে ধাবিত হবে।