প্রধান মেনু

পেঁয়াজের দাম দ্রুত কমে যাবে —তথ্যমন্ত্রী

ঢাকা, ২ অগ্রহায়ণ (১৭ নভেম্বর) : তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহ্‌মুদ বলেছেন, ‘বিএনপি’কে ধন্যবাদ জানাই যে, তারা তাদের রাজনীতিকে বেগম জিয়ার অসুস্থতা থেকে বের করে পেঁয়াজের মধ্যে নিয়ে এসেছেন।’ ‘তবে  পেঁয়াজের এই উচ্চমূল্য থাকবে না, কারণ বিদেশ থেকে বিমানে করে পেঁয়াজ আসছে, দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজও বাজারে আসা শুরু করেছে; সুতরাং খুব সহসা এই পেঁয়াজের দাম কমে যাবে’, বলেন ড. হাছান। আজ ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ভাসানী ঐক্যজোট আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সমসাময়িক রাজনীতি প্রসঙ্গে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিএনপি’কে বলবো, আপনারা অবশ্যই সরকারের সমালোচনা করুন। সরকার কোথায় ব্যর্থ হচ্ছে, সেটি তুলে ধরুন।

কিন্তু সরকার যে আজকে নানাক্ষেত্রে সফল, এটি বিশ্ব নেতৃবৃন্দ বলছে, বিশ্বব্যাংক বলছে, অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা বলছে, সেটিই আপনারা দয়া করে বলবেন, তাহলেই সেটি দায়িত্বশীল বিরোধী দলের কাজ হয়।’  মন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব গতকাল বলেছেন, তারা আগামীকাল সারাদেশে পেঁয়াজ নিয়ে বিক্ষোভ করবেন। তবে পেঁয়াজের এই উচ্চমূল্য থাকবে না। আপনারা জানেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গতকাল বলেছেন, বিদেশ থেকে বিমানে করে পেঁয়াজ আসছে, দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজও বাজারে আসা শুরু করেছে; সুতরাং খুব সহসা এই পেঁয়াজের দাম কমে যাবে।’ পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি খতিয়ে দেখার জন্য সরকারের ব্যবস্থার কথা জানিয়ে বলেন, ‘কারা এই পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির সাথে যুক্ত, সেটা বের করার জন্য গোয়েন্দারা মাঠে নেমেছে। যারা এই পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি ঘটিয়েছে, যারা দায়ী হবে, দায়ী হিসেবে যাদেরকে চিহ্নিত করা হবে, তাদের বিরুদ্ধে সরকার অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে।

’তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষকে জিম্মি করে এইভাবে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ানো কোনোভাবেই ব্যবসার নীতি হতে পারে না। সরকার টিসিবি’র মাধ্যমে ঢাকা শহরে এবং বিভিন্ন জায়গায় ন্যায্যমূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি করছে। খুব সহসাই ইনশাল্লাহ দাম কমে যাবে, স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে।’  মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন,‘মওলানা ভাসানী কখনো ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করেননি। তিনি রাজনীতিকে একটি ব্রত হিসেবে নিয়েছিলেন। তিনি যদি ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করতেন, তাহলে পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী এবং পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও হতে পারতেন। তাঁর হাত ধরেই আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে সভাপতি, শামসুল হককে সাধারণ সম্পাদক এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ গঠিত হয়েছে।

পরের বছর ১৯৫০ সালে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে সভাপতি করে নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ গঠিত হয়। অর্থাৎ এই আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বেই।’ মন্ত্রী বলেন, ‘মওলানা ভাসানী বলতেন, শেখ মুজিবের যে সাংগঠনিক দক্ষতা, সেটি আর কারো মধ্যে নেই। এবং বঙ্গবন্ধু মুজিব যতদিন বেঁচে ছিলেন, মওলানা ভাসানীকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করতেন এবং তার দেখভালও করতেন। এবং মওলানা ভাসানী যেভাবে রাজনীতিকে ব্রত হিসেবে নিয়েছিলেন, আমি মনে করি যুগ যুগ ধরে তাঁর কাছ থেকে রাজনীতিক শেখার অনেক কিছুই আছে। কারণ রাজনীতি হচ্ছে একটি ব্রত, জনসেবা।’

  ড. হাছান বলেন, ‘বিএনপি’র অনেকে বড় বড় নেতা যারা কয়েক দফা মন্ত্রী ছিলেন, আজকে স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান, তাদেরকে অনেকেই মওলানা ভাসানীর দল করতেন। অর্থাৎ, তারা ক্ষমতার জন্য জিয়াউর রহমানের ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট গ্রহণ করার জন্য দল ত্যাগ করে বিএনপিতে যোগ দিয়েছিলেন। অনেকে জাতীয় পার্টিতেও যোগ দিয়েছেন। অর্থাৎ তারা ক্ষমতার জন্য দল ত্যাগ করেছেন।’ আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম মুরাদ, আওয়ামী লীগ নেতা এডভোকেট বলরাম পোদ্দার, এম এ করিম, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা প্রমুখ সভায় বক্তব্য রাখেন।