বিজ্ঞানী পিসি রায়ের ৭৫তম মহাপ্রয়াণ দিবস পালিত অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষ ছিলেন বিজ্ঞানী পিসি রায়….. এমপি বাবু

এস,এম, আলাউদ্দিন সোহাগ, পাইকগাছা (খুলনা) ॥ সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আক্তারুজ্জামান বাবু বলেছেন, নির্বাচনী এলাকা পাইকগাছা-কয়রার মাটি অনেক পবিত্র ও উর্বর। স্বাধীনতা পরবর্তী স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অত্র এলাকা থেকেই সুখী সমৃদ্ধিশালী ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলা গড়ার শুভ সূচনা করেছিলেন।
এই মাটিতেই জন্মগ্রহণ করেছেন, বিশ্ব বরেণ্য বিজ্ঞানী স্যার আচার্য্য প্রফুল্ল চন্দ্র পিসি রায়, উপ-মহাদেশের প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী সন্ধ্যা মুখোপধ্যায়, দানবীর মেহের মুছুল্লী, অসমাপ্ত আব্দুল্লাহ উপন্যাসের রচয়িতা কাজী ইমদাদুল হক, রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু, শহীদ এমএ গফুর সহ অসংখ্য গুণীব্যক্তি। মহাকবি মাইকেল মধুসুদন দত্ত, পীর জাফর আওলিয়া, আলম শাহ ফকির ও সরল খাঁ সহ অসংখ্য বুজর্গ ব্যক্তির স্মৃতি বিজড়িত স্থান অত্র এলাকা। এসব গুণি ব্যক্তিদের মধ্যে বিজ্ঞানী পিসি রায় ছিলেন অন্যতম। তিনি বলেন, বিজ্ঞানী পিসি রায় অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী ছিলেন।
তিনি একাধারে শিল্পপতি, রসায়নবিদ, শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক, রাজনীতিবিদ ও সমবায় আন্দোলনের পুরোধা ছিলেন। এমপি বাবু বলেন, যে জাতি জ্ঞানীর মূল্যায়ন করে না, সে জাতি কখনো উন্নত হতে পারে না।বিজ্ঞানী পিসি রায় অসম্প্রদায়িক চেতনার মানুষ ছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, চিরকুমার এ বিজ্ঞানী জীবনের অর্জিত সকল সম্পত্তি মানবকল্যাণে দান করে মৃত্যুর দেড়’শ বছর পরও অমর হয়ে রয়েছেন। গুণী এ বিজ্ঞানী শুধু পাইকগাছা নয়, গোটা দেশের গর্ব। তার জীবন ও আদর্শ ভবিষ্যত প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে।
বিজ্ঞানীর জীবন আদর্শ সম্পর্কে বেশি বেশি জানতে হবে। এ জন্য তিনি তরুণ প্রজন্মের শিক্ষার্থীদেরকে বিজ্ঞানীর জীবন আদর্শ ধারণ করে ডিজিটাল, তথ্য ও প্রযুক্তি এবং সৃজনশীল বাংলাদেশ গড়তে ভূমিকা রাখার জন্য আহ্বান জানান। তিনি শনিবার বিকালে মহাকবি মধুসূদন জননী জাহ্নবীদেবীর জন্মস্থান পাইকগাছার কাটিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র সাহিত্য পরিষদ আয়োজিত বিজ্ঞানী পিসি রায়ের ৭৫ তম মহাপ্রয়াণ দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র সাহিত্য পরিষদের সভাপতি ও সহকারী অধ্যাপক রণজিৎ কুমার মন্ডলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উদ্বোধক অতিথি ছিলেন, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দ সৈনিক ও মুক্তিযোদ্ধা ড. মনোরঞ্জন ঘোষাল। বিশেষ অতিথি ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী মোহাম্মদ আলী, ওসি (তদন্ত) রহমত আলী। প্রধান আলোচক ছিলেন, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের গীতিকার ও সুরকার শৈবাল মজুমদার। আলোচক ছিলেন, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আরকেবিকে সম্মিলনীর সাধারণ সম্পাদক ও গবেষক পিনাকপাণী দত্ত।
বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগনেতা আনোয়ার ইকবাল মন্টু, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শিয়াবুদ্দীন ফিরোজ বুলু, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লিপিকা ঢালী, ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল মজিদ গোলদার, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, আলহাজ্ব মুনছুর আলী গাজী, আওয়ামী লীগনেতা আনন্দ মোহন বিশ্বাস, ডাঃ শংকর দেবনাথ, আরশাদ আলী বিশ্বাস, ইকবাল হোসেন খোকন, বিভূতি ভূষণ সানা, প্রভাষক ময়নুল ইসলাম, পঞ্চানন সানা, দীপক কুমার মন্ডল, অধ্যাপক সেখ রুহুল কুদ্দুস, ময়না বেগম, ছনিয়া দাশ, মুক্তিযোদ্ধা সরদার মোহাম্মদ নাজিম উদ্দীন, ডাঃ পঞ্চানন চক্রবর্তী, রবীন্দ্রনাথ কর্মকার, যুবলীগনেতা এমএম আজিজুল হাকিম, আব্দুর রাজ্জাক রাজু, রমজান সরদার, অসীম দাশ, অশোক অধিকারী, নির্মল কান্তি বৈদ্য, মঙ্গল মন্ডল, কেডি বাবু, আকরামুল ইসলাম, আরাফাত হোসেন খান, আনিছুর রহমান গাজী, টিএম হাসানুজ্জামান, মৃগাঙ্গ বিশ্বাস, গৌতম রায়, শওকত হোসেন, শেখ জামাল হোসেন, রাজিব গোলদার, শেখ জিয়াদুল ইসলাম জিয়া, উত্তম কুমার দাশ, জেলা ছাত্রলীগনেতা মাসুদুর রহমান মানিক, পার্থ প্রতীম চক্রবর্তী, ছাত্রলীগনেতা রায়হান পারভেজ রনি ও আজমল হোসেন বাবু।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই অতিথিবৃন্দ বিজ্ঞানী পিসি রায়ের প্রতিকৃতিত্বে পুষ্পমাল্য অর্পন এবং মহাপ্রয়ান দিবস উপলক্ষে প্রকাশিত স্মরণিকা “প্রফুল্লকানন” এর মোড়ক উন্মোচন করেন। সবশেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। মহাপ্রয়াণ দিবসে বক্তারা জন্মস্থানে বিজ্ঞানী পিসি রায়ের নামে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবী জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।