প্রধান মেনু

বিশ্ব খাদ্য দিবসে রাষ্ট্রপতির ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী

রাষ্ট্রপতির বাণীঃ রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ১৬ অক্টোবর ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০১৯’ উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন : “বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ১৬ অক্টোবর ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস-২০১৯’ উদ্‌যাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। বিশ্ব খাদ্য দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘আমাদের কর্মই আমাদের ভবিষ্যৎ, পুষ্টিকর খাদ্যেই হবে আকাঙ্ক্ষিত ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী’ অত্যন্ত সময়োপযোগী বলে আমি মনে করি।

সুদীর্ঘকাল থেকে কৃষি আমাদের সামগ্রিক উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। কৃষি শুধু খাদ্যের যোগানই দেয় না বরং সিংহভাগ মানুষের জীবন-জীবিকার প্রধানতম অবলম্বন। তাই কৃষিকে আধুনিকায়নের মাধ্যমেই দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে দ্রুত এগিয়ে নেয়া সম্ভব। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর পরই যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে কৃষি খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। জাতির পিতার প্রদর্শিত পথেই বর্তমান সরকার গত দশ বছরে কৃষির সার্বিক উন্নয়নে নানামুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে। ফলশ্রুতিতে আমরা এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। পাশাপাশি কৃষিপণ্য রপ্তানির মাধ্যমে অর্জিত হচ্ছে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা।

খাদ্য নিরাপত্তা টেকসই করতে আমাদের এ অর্জনকে ধরে রাখতে সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পাশাপাশি পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়ে নজর দেয়া অত্যন্ত জরুরি। সেক্ষেত্রে উৎপাদন থেকে ভোক্তা পর্যায়ে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য সহজলভ্য করতে হবে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় আমাদের জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসে অনেক পরিবর্তন এসেছে। অনেকক্ষেত্রেই নানা অস্বাস্থ্যকর খাদ্য আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অনুষঙ্গ হয়ে পড়েছে। এতে করে কোমলমতি শিশু-কিশোরসহ সকলেরই স্থূলতাজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। অন্যদিকে পুষ্টিহীনতার ফলে সৃষ্টি হচ্ছে নানাবিধ শারীরিক জটিলতা। তাই আমাদের খাদ্য তালিকায় মৌসুমভিত্তিক বিভিন্ন দেশি ফলমূল, শাকসবজি ও পরিমিত প্রাণিজ আমিষকে স্থান দিতে হবে। মনে রাখতে হবে পুষ্টিকর খাদ্যই পারে মেধামননে উৎকর্ষ ও কর্মক্ষম একটি জাতি গঠন করতে।

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকিসহ নানাবিধ চ্যালেঞ্জকে বিবেচনায় নিয়ে পুষ্টিসমৃদ্ধ এবং সাশ্রয়ী প্রযুক্তিতে উৎপাদনক্ষম ফসল ও প্রাণিজ আমিষের উৎপাদন বৃদ্ধির হারকে ত্বরান্বিত করতে আমি বিজ্ঞানী, কৃষি সম্প্রসারণকর্মী, বেসরকারি উদ্যোক্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে সমন্বিত প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানাচ্ছি। সম্মিলিত অংশগ্রহণের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে বঙ্গবন্ধুর ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে সক্ষম হবো – এ প্রত্যাশা করি। আমি ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০১৯’ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি। খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক”।

প্রধানমন্ত্রীর বাণীঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৬ অক্টোবর ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০১৯’ উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন: “প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ১৬ অক্টোবর সারা বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস-২০১৯’। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘আমাদের কর্মই আমাদের ভবিষ্যৎ, পুষ্টিকর খাদ্যেই হবে আকাঙ্ক্ষিত ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী’। বিশ্বব্যাপী বিপুল জনসংখ্যার খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনের প্রচেষ্টায় নিবেদিত এ দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধিশালী করতে কৃষিকেই সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে হবে- এ চেতনাকে অন্তরে ধারণ করেছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সে কারণেই তিনি স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশ পুনর্গঠনে কৃষিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন। ডাক দিয়েছিলেন সবুজ বিপ্লবের। জাতির পিতার দেখানো পথেই বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার সার্বিক কৃষি উন্নয়নের স্বার্থে কৃষিবান্ধব নীতি ও সময়োপযোগী বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং তা বাস্তবায়ন করছে। আমাদের অব্যাহত প্রচেষ্টার ফলে দেশ খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। দেশে দরিদ্র ও অতি দরিদ্র মানুষের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে।

এখন নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিতকল্পে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। পুষ্টি সম্পর্কে সচেতনতাও অনেক বেড়েছে। এ কথা অনস্বীকার্য যে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় মানুষের জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসেও অনেক পরিবর্তন এসেছে। পাশাপাশি সচেতনতার অভাবে বিভিন্ন অপুষ্টিকর খাবার গ্রহণের কারণে নানা শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের দেশীয় মৌসুমি ফলমূল, শাকসবজি ও পরিমাণ মতো প্রাণিজ আমিষ খাবার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। সেজন্য আমাদের পুষ্টিকর খাবারের পাশাপাশি নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে আরো প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।

আমি বিশ্বাস করি, সরকারের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সবার অংশগ্রহণে নিরাপদ খাদ্যের মাধ্যমে পুষ্টি চাহিদা পূরণ ও দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হব। আমি ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০১৯’ এর সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করছি। জয় বাংলা, জয়বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”