আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসে রাষ্ট্রপতির বাণী

ঢাকা, ২৭ আশ্বিন (১২ অক্টোবর) : রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস’ উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস ২০১৯’ পালিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘Build to Last’ এর ভাবার্থ ‘নিয়ম মেনে অবকাঠামো গড়ি, জীবন ও সম্পদের ঝুঁকি হ্রাস করি’ বর্তমান প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও সময়োপযোগী বলে আমি মনে করি।
প্রতি বছর আমাদের প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট বিভিন্ন ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে হচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বন্ধ করা সম্ভব নয়। কিন্তু দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাস করে তা যথাযথভাবে মোকাবিলা এবং জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব। এজন্য স্বাধীনতার পরপরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উপকূলীয় বনায়নের মাধ্যমে সর্বপ্রথম দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাস কার্যক্রমের সূচনা করেছিলেন। ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের কাজ তখন থেকেই শুরু হয়েছিল।
সে সময়ে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি-কে সরকারের অন্যতম একটি কর্মসূচি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছিল, যা দুর্যোগ প্রস্তুতির ক্ষেত্রে আজও কার্যকর অবদান রাখছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দুর্যোগ ঘটার আগে সম্ভাব্য সকল প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেওয়া, পরবর্তী প্রতিকারের চেয়ে অনেক বেশি সাশ্রয়ী। উন্নয়ন প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং সম্পদের ঝুঁকি কমানোর জন্য দুর্যোগ ও ঝুঁকি সচেতনতার বিষয়টি সকল উন্নয়ন কর্মসূচি ও পরিকল্পনায় সংযুক্ত করা অত্যন্ত জরুরি।
বিল্ডিং কোড মেনে পরিকল্পিতভাবে নগর অবকাঠামো গড়ে তুলতে পারলে যে কোনো দুর্যোগে জানমাল ও স্থাপনার ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে কমে যাবে। আমি আশা করি, বিভিন্ন নগর ও স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষ-সহ সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান নিয়ম মেনে অবকাঠামো গড়ার বিষয়টি স্থানীয় উন্নয়নের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করবে, যা ২০৩০ সালের মধ্যে ‘Sendai Seven’ কর্মপরিকল্পনার সাতটি লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হবে। দুর্যোগকালীন ক্ষয়ক্ষতি প্রশমনে সরকারের পাশাপাশি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, এনজিও, সুশীল সমাজ, জনপ্রতিনিধি-সহ সংশ্লিষ্ট সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে – এ প্রত্যাশা করি। আমি ‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস-২০১৯’ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করি। খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।’’