ডোবরা এতিমখানা নিয়ে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত

মোঃ মাহফুজুর রহমান বিপ্লব, ফরিদপুর: ফরিদপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ডোবরা আল গফুরিয়া হাফিজিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা । সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে স্থানীয় একটি মহল নানা ধরনের ষড়যন্ত্র ও এর অংশ হিসেবে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে নানা অনিয়ম বিষয়ে প্রচারিত সংবাদের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করে । সকাল ১১ টায় প্রেসক্লাবের সম্মেলন কক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে ডোবরা আল গফুরিয়া হাফিজিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার সভাপতি মোঃ নূর ইসলাম মোল্লা।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ডোবরা আল গফুরিয়া হাফিজিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানাটি বোয়ালমারী উপজেলার ডোবরা দরবার শরীফে অবস্থিত। সম্প্রতি এতিমখানা নিয়ে ডোবরা দরবার শরীফের বর্তমান গদ্দীনাসীন পীর সাহেব ও এতিমখনার প্রিন্সিপাল শাহ্ মুহাম্মাদ খালিদ বিন নাছের কে নিয়ে “এতিম সাজিয়ে সরকারি টাকা আত্মসাৎ” সহ নানা শিরনামে মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে যে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে সেই অভিযোগ ও সংবাদের তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাই।
তিনি বলেন, ২০১৯ সালের আগষ্ট মাসে সমাজ সেবা অফিস থেকে এই প্রথম এতিমদের নামের তালিকা চাওয়ার প্রেক্ষিতে গত ০৬ আগষ্ট ২০১৯ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এতিমদের যে তালিকা সমাজ সেবা অফিসে দেওয়া হয়, সেই সময়ে প্রিন্সিপাল শাহ্ মুহাম্মাদ খালিদ বিন নাছের সাহেব সৌদি আরবে হজ্ব পালন রত অবস্থায় ছিলেন। তাই সেই তালিকা চাওয়া এবং দেওয়ার ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না এবং এতিমখানা থেকে যিনি সেই সময়ে তালিকাটা দিয়েছিলেন তিনি না বুঝে কিছু ভুল কয়েকটি নাম দিয়ে ফেলেছিলেন ।
অভিযোগ তদন্তের ভিত্তিতে সরকারীভাবে যে তালিকা হবে সেটাই হবে আমাদের তালিকা। যেহেতু অভিযোগের ভিতরে এবং প্রকাশিত কোন সংবাদে এতিমখানাটিতে যে পরিমান ক্যাপিটেশন গ্রান্ট পায় সেই পরিমাণ ছাত্র বা এতিম নাই তা বলা হয় নাই। তালিকায় কয়েকটি নাম ভুল থাকলেও উল্লেখিত ৪৩ জন এতিমসহ ১৫০ জন ছাত্র প্রতিষ্ঠানটিতে আছে। বাংলাদেশ সরকারের একটা ভাল উদ্যেগ সচ্ছতা, জবাবদিহীতা ও দূর্ণীতি মুক্ত সমাজ ও প্রতিষ্ঠান গড়ার লক্ষে এই প্রথম এতিমখানা থেকে এতিমদের নামের তালিকা চাওয়া হয়েছে।
এর পূর্বে শুধু সংখ্যার ভিত্তিতে অনুদান দেয়া হত। সে নিয়মে গত অর্থ বছরের টাকা সরকারী নিয়ম মেনে ভাউচার জমা দিয়ে জুন মাসে তোলা হয়েছে। আর পত্রিকায় যে তালিকার কথা বলা হয়েছে সেটা আগামী অর্থ বছরের জন্য। তাই যে অনুদান এখন অনুমোদনই হয়নি সেখানে ভূয়া এতিম বা এতিম সাজিয়ে টাকা তোলা বা আত্মসাৎ করা সম্ভব নয়। তিনি জানান, প্রিন্সিপাল শাহ্ মুহাম্মাদ খালিদ বিন নাছের সাহেব দরবার শরীফ এর গদ্দীনাসীন পীর সাহেব বটে গত রমজান মাসে এতিমখানার চিঠিতে এবং ক্যালেন্ডারে ২০১৮ সালের বাৎসরিক ৩৩,৩৮,৫০১/- (তেত্রিশ লক্ষ আটত্রিশ হাজার পাঁচশত এক) টাকার এতিমখানার আয় ও ব্যয়ের হিসাব দিয়েছেন। ১২ জন শিক্ষকের বেতন ও বোডিং এর বাজার খরচ সহ যেখানে এতিমখানাটিতে বাৎসরিক নীট খরচ প্রায় ২২,০০,০০০/- (বাইশ লক্ষ) টাকা, উন্নয়ন সহ সার্বিক খরচ ৩০,০০,০০০/- (ত্রিশ লক্ষ) টাকার উপরে।
সেখানে সরকারী ক্যাপিটেশন থেকে প্রাপ্ত বাৎসরিক ৫,১৬,০০০/- (পাঁচ লক্ষ ষোল হাজার) টাকা তিনি আত্মসাত করবেন এটা অবাস্তব যা সম্পূর্ন উদ্দেশ্য প্রণোদিত। যা হিংসা বিদ্বেষ প্রসুত মনোভাব নিয়ে প্রিন্সিপাল শাহ্ মুহাম্মাদ খালিদ বিন নাছের সাহেবকে হয়রানী ও ক্ষতিগ্রস্থ করার কুমানসে মনগড়া এবং ভিত্তিহীন অমূলক অভিযোগই মাত্র। সার্বিক বিষয় পর্যবেক্ষণ করলে এটা মিথ্যা অভিযোগ সেটা প্রমাণিত হয়ে যায়।
এলাকাবাসী জানায়, প্রিন্সিপাল শাহ্ মুহাম্মাদ খালিদ বিন নাছের সাহেবের বাবা ডোবরার পীর সাহেব আলহাজ্ব হযরত মাওলানা শাহ আবু নাছের ফখরুদ্দীন আহমাদ(রহঃ) এই প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা।বর্তমান প্রিন্সিপাল যিনি গদ্দীনাসীন পীর তার ফুপা মৌঃ মোঃ আঃ সাত্তার এই প্রতিষ্ঠানের দ্বায়িত্বে থাকা কালীন এই প্রতিষ্ঠানের জায়গা তাদের নিজ নামে করে নেন । যার কারনে সেসময় প্রতিষ্ঠাতা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাকে বরখাস্ত করে এবং মামলা রজু করে।
তিনি অত্র প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষকের স্ত্রীকে মারধর করায় নারী নির্যাতন মামলার আসামী আমীর হোসেন গরীব , প্রতিষ্ঠাতা পীর সাহেবের মেঝ ছেলে মোঃ ওবায়েদ বিন নাছের, এলাকার খন্দকার সাজ্জাদসহ পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মিথ্যা অভিযোগ এনে সমাজ সেবায় দরখাস্ত করে। উক্ত মিথ্যা তথ্য সাংবাদিকদের দিয়ে মিথ্যচার করে প্রতিষ্ঠান ও এর প্রধানের চরিত্র হননের চেষ্টা চালাচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রিন্সিপাল শাহ্ মুহাম্মাদ খালিদ বিন নাছের , প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক হাসানুজ্জামান,প্রথম আলোর সাংবাদিক পান্না বালা,জাহিদুর রহমান ইবু,জাহিদ রিপন,সুজাউজ্জামান জুয়েল, রুহুল, প্রতিষ্ঠাতার দুই ছেলে যুবায়ের বিন নাছের, জুনায়েদ বিন নাছের, প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দ, এলাকাবাসী প্রমূখ।