প্রধান মেনু

সৈয়দপুর সরকারী কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ — অফিস কক্ষে তালা

 নীলফামারী প্রতিনিধি ॥ নীলফামারীর সৈয়দপুর সরকারী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাখাওয়াৎ হোসেন খোকন সহকর্মী অধ্যাপিকাসহ জনতার হাতে আটক হওয়ার প্রেক্ষিতে তাদের বহিস্কার ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে আওয়াামী লীগ নেতৃবৃন্দ, শিক্ষার্থী ও জমিদাতারা। ২৮ সেপ্টেম্বর শনিবার সকালে ১১ টায় তারা কলেজ চত্ত্বরে মিছিল শেষে সমাবেশ করেছে। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাবু।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মোজাম্মেল হক, যুবলীগের আহবায়ক আসাদুজ্জামান আসাদ, জমিদাতার ছেলে শফিউর রহমান বাবু, শাহ আলম, কলেজ ছাত্র পাপ্পু প্রমূখ। বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে তদন্তের জন্য ৫ কার্য দিবস সময় নিলেও ১৩ দিন পেরিয়ে গেলেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়নি। তারা দাবি করেন প্রশাসন ও আওয়ামী লীগ নেতাদের ম্যানেজ করতে টাকার খেলা চলছে।

আগামী দুই দিনের মধ্যে দোষী অধ্যক্ষ সাখাওয়াৎ হোসেন খোকন ও অধ্যাপিকা সুলতানা নওরোজ রুমির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে বিক্ষোভ চলবে। শিক্ষকতার আড়ালে তিনি নারী নিয়ে ফুর্তি করার সময় জনতার হাতে আটক হয়েছেন। যারা কলেজে চাকরী করেন, তারা অন্যায়কারীর পক্ষ অবলম্বন করবেন না। কলেজের জমি দাতাদের ওয়ারিশরা অধ্যক্ষের কক্ষে তালা লাগিয়েছেন। সরকারী প্রতিষ্ঠানে নারী ঘটিত কেলেংকারীর কারনে প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়েছেন।

বহিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে। সাখাওয়াৎ হোসেন খোকন ঘটনা ভিন্ন খ্যাতে প্রবাহিত করার জন্য নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে নিজের অপকর্ম ঢাকতে নারীসহ আটকের ঘটনাকে মিডিয়ার সৃষ্টি বা ষড়যন্ত্র বলে দাবি করছেন। কিন্তু আসলে এটা জামায়াত বিএনপি’র ষড়যন্ত্র নয়, খোকন ও নওরোজের সৃষ্ট ঘটনা। যা ঐতিহ্যবাহী এ কলেজের সম্মানহানীসহ সৈয়দপুরবাসীর সম্মান ধুলায় লুটিয়ে দিয়েছে। অথচ এই ঘটনার সাথে তিনি জড়িত এটা স্বীকার করেন না।

তদন্ত কমিটির কাছে জোর দাবী জানাই অধ্যক্ষের কক্ষে তল্লাশি করলে মদের বোতল ও ১০ লক্ষ টাকা উদ্ধার হবে। রিপোর্ট যদি বিপক্ষে যায় তাহলে তদন্ত কমিটির বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা ও আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। এদিকে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল প্রদর্শন করেছে কলেজ ক্যাম্পাসে। তারা এ সময় বিভিন্ন শ্লোগান দেয় এর মধ্যে অন্যতম ছিল- ৫ কার্য দিবস অতিবাহিত হলেও তদন্ত দেয়া হচ্ছেনা কেন? দ্রুত তদন্ত রিপোর্ট দিতে হবে। প্রতিবেদন ধীর গতি কেন প্রশাসন জবাব চাই, আমাদের দাবি মানতে হবে, প্রিন্সিপালকে বহিস্কার করতে হবে।

এ সময় প্রায় ৫ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী, জমিদাতা ও এলাকাবাসী শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ করেন। এ সময় তারা আরও অভিযোগ করেন যে, অধ্যক্ষ খোকন কলেজের কর্মচারীদের নিজের বাসায় ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করেন। এই অন্যায়েরও বিচার চাই। তারা অধ্যক্ষ ও অধ্যাপিকার বহিস্কার দাবি করেন এবং তার দেয়া নিয়োগপ্রাপ্তদের কাছ থেকে আদায়কৃত টাকার হিসেব নেওয়ার দাবি জানান।

এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানের উপার্জিত টাকা কেন অধ্যক্ষের কক্ষে রাখা হয় তারও জবাব চান তারা। কোনভাবে যদি অধ্যক্ষ ও অধ্যাপিকা কলেজে প্রবেশ করে তাহলে এ জন্য সৃষ্ট পরিস্থিতির জন্য প্রশাসন দায়ী থাকবে এবং যদি কোন কারণে দোষীদের কে আড়াল করে তদন্ত রিপোর্ট প্রদান করা হয় তাহলে কলেজসহ গোটা সৈয়দপুরকে অচল করে দেয়া হবে।

উল্লেখ যে, গত ১৫ সেপ্টেম্বর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাখাওয়াৎ হোসেন খোকন ও অধ্যাপিতা সুলতানা নওরোজ রুমিকে আপত্তিকর অবস্থায় শহরের শহীদ ক্যাপ্টেন সামসুল হক মৃধা সড়কের শহীদ স্মৃতি সৌধ পরিষদের অফিস কক্ষে এলাকাবাসী আটক করে। তার পর থেকেই তাদের বহিস্কারসহ বিচারের দাবিতে কলেজে আন্দোলন করে চলেছে শিক্ষার্থীরা।