বঙ্গবন্ধু হত্যা ছিলো স্বাধীন বাংলাদশেকে হত্যার ষড়যন্ত্র – তথ্যমন্ত্রী

‘বঙ্গবন্ধু হত্যা শুধু ব্যক্তি শেখ মুজিবুর রহমানকে নয়, স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে হত্যার ষড়যন্ত্র ছিলো’, বলেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। আজ বিকেলে ঢাকার আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের উদ্যোগে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস ২০১৯ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। এর আগে সকালে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তিনি। তথ্যমন্ত্রী বলনে, ‘যারা স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় চায়নি, এ দেশ স্বাধীনতা পাক তা চায়নি – সেই বিদেশি চক্র এবং যারা স্বাধীনতার পরও পাকিস্তানের সাথে কনফেডারেশন করার চক্রান্তে লিপ্ত ছিল, তারাই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে।’
বঙ্গবন্ধুকে চিরঞ্জীব উল্লেখ করে ড. হাছান বলনে, ‘ষড়যন্ত্রকারীরা বঙ্গবন্ধুকে ইতিহাস থেকে মুছে দিতে চেয়েছিল, কিন্তু তারা তা পারেনি। বঙ্গবন্ধু ইতিহাসে অমর হয়ে রয়েছেন আর সেই ষড়যন্ত্রকারীরাই মুছে গেছে। মন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার আমলে দেশের প্রচলিত বিচার পদ্ধতিতেই ন্যায়ের প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে, কোনো জিঘাংসা থেকে নয়। বিচার সম্পূর্ণ হয়নি, কারণ, পলাতক খুনি ও বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যের কুশীলবদের বিচার এখনো হয়নি। এজন্য একটি কমিশন গঠন করে বিচার সম্পন্ন করা উচিত, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছেও বিচার প্রতিষ্ঠার উদাহরণ হয়ে থাকবে’।
সাংবাদিকদের সমসাময়িক বিষয়ে প্রশ্ন ‘কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে সিন্ডিকেট হচ্ছে কি না’- এর জবাবে মন্ত্রী বলনে, শোক দিবসে অন্য বিষয়ে কথা বলতে চাই না, এ সত্ত্বে আপনারা প্রশ্ন করেছেন বিধায় উত্তরে বলছি, লক্ষ্য করলে দেখবেন, দেশে গত দশ বছরের অর্থনৈতিক উন্নয়নে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির কারণে পশু কোরবানি দ্বিগুণের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু সে তুলনায় ট্যানারির সংখ্যা বৃদ্ধি ঘটেনি, যদিও অনেক চামড়া শিল্প প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বেড়েছে। সম্প্রতি চামড়া শিল্প মালিকরা চামড়া রপ্তানির বিরোধিতা করেছেন, সে ক্ষেত্রে যদি তারা নিজেরা সব চামড়া কিনে নেবার ঘোষণা দিতেন, তাহলে চামড়া দরপতন রোধ হতো’।
‘সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হয় শিল্প উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী, ক্রেতা-বিক্রেতা, সর্বোপরি জনগণ ও রাষ্ট্রের কথা বিবেচনা করে’ স্মরণ করিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান বলেন, ‘তবে সরকার এক্ষেত্রে সিন্ডিকেটের বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে’। ফিল্ম আর্কাইভের মহাপরিচালক বিধান চন্দ্র কর্মকারের সভাপতিত্বে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল মালেক, অতিরিক্ত সচিব মো. আজহারুল হক, জাতীয় গণমাধ্যম ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক শাহিন ইসলাম, চলচ্চিত্র গবেষক রফিকুজ্জামান, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু, দৈনিক ইত্তেফাকের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শ্যামল সরকার প্রমুখ সভায় তাদের বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর আলোকপাত করেন।
প্রধান তথ্য অফিসার সুরথ কুমার সরকার, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল করিম, গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. জাকির হোসেন, ফিল্ম সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান নিজামুল কবীর, প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা কাজী আব্দুস সামাদ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানাসহ বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ববর্গ সভায় অংশ
নেন।