প্রধান মেনু

সুবীর নন্দীর স্মরণ সভায় তথ্যমন্ত্রী জঙ্গিমুক্ত সমাজের জন্য প্রয়োজন সংস্কৃতিচর্চা

জঙ্গিমুক্ত সুস্থ মননশীল সমাজ গড়তে সংস্কৃতিচর্চাকে দেশের সর্বত্র আরো বিস্তৃত আকারে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। আজ দুপুরে রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে প্রয়াত সংগীত শিল্পী সুবীর নন্দীর স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এ আহ্বান জানান। তিনি এ সময় বরেণ্য সংগীত শিল্পী সুবীর নন্দীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, ‘সুবীর নন্দী তার সুললিত কণ্ঠঝরা সংগীতের মধ্যেই বেঁচে থাকবেন।

এ দেশের মানুষ তার সহ- সহস্র গান কখনো ভুলবে না।’ড. হাছান বলেন, ‘আমাদের দেশে তরুণ সমাজ নানাভাবে বিপথগামী হচ্ছে এবং অনেকেই নানাভাবে জঙ্গি মতাদর্শে প্ররোচিত হচ্ছে। তরুণ সমাজকে সঠিক পথে পরিচালিত করার জন্য সংগীত ও সাংস্কৃতিক চর্চা একান্ত প্রয়োজন। আমাদের দেশে আগে পাড়ায় পাড়ায় সাংস্কৃতিক চর্চা হতো, নানা সাংস্কৃতিক সংগঠন ছিল, কিন্তু এখন সেগুলো নেই। বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট দীর্ঘদিন ধরে আমাদের সংস্কৃতিকে লালন করার চেষ্টা করছে। সকল সাংস্কৃতিক সংগঠনকে সমগ্র দেশে সাংস্কৃতিক চর্চাকে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য আমি অনুরোধ জানাই।’

মন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অত্যন্ত সংগীতপ্রিয় একজন মানুষ ছিলেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রীও অত্যন্ত সংস্কৃতিমনা একজন মানুষ। তিনি তার পরিবারে সংস্কৃতিচর্চা করেন। কামাল ভাই সেতার বাজাতেন। এমন একজন প্রধানমন্ত্রী আমাদের আছেন বলেই আমরা নির্বিঘে বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক চর্চা, সংগীত চর্চা করতে পারি। সেটি আমাদের তরুণ সমাজকে পরিশোধিত করতে, জঙ্গিত্বের বিপথগামিতা থেকে ফিরিয়ে আনতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’

শিল্পী সহায়তায় শেখ হাসিনার সরকার অগ্রণী উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার দুস্থ শিল্পীদের সহায়তা করার জন্য তহবিল গঠন করেছে এবং যখনই কোনো বরেণ্য শিল্পী অসুস্থ হয়েছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাদের সাহায্যার্থে এগিয়ে এসেছেন। আমাদের সুবীর নন্দী, এটিএম শামসুজ্জামানসহ সবার জন্যই এগিয়ে এসেছেন।’ মন্ত্রী এ সময় উন্নয়ন কাজের প্রশংসা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত থাকার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজকে অদম্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।

কিন্তু বাংলাদেশকে নিয়ে সব সময় ষড়যন্ত্র হয়। বঙ্গবন্ধু যখন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠিত করে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে চেয়েছেন, তখন বঙ্গবন্ধুকে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে। তখন কিছু পত্রপত্রিকায় অসত্য সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছিল সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য। ছবি জাল করে সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছিল কাপড়ের অভাবে জাল পরেছে অথচ জালের দাম কাপড়ের চেয়ে বেশি।’সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন,‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আনএডিটেড বা অসম্পাদিত প্লাটফরম। সংবাদ মাধ্যমে তো এডিটর আছে, সাধারণত কয়েক দফা এডিট করা হয়।

কিন্তু সামাজিক মাধ্যমে যে কেউ যেভাবে ইচ্ছা, সেভাবে তার মতামত-বক্তব্য দিচ্ছে এবং সেগুলো কখনো সমাজে অস্থিরতা তৈরি করছে, মানুষকে ভুল তথ্য দিচ্ছে এবং সে কারণে অনেক সময় সরকারও অহেতুক সমালোচনার সম্মুখীন হচ্ছে।’ ‘কৃষক শস্যের ন্যায্যমূল্য পেতে শুরু করেছে’ উল্লেখ করে মন্ত্রী ড. হাছান বলেন, ‘সরকার ইতোমধ্যেই চাল রপ্তানি করার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। যারা রপ্তানি করতে চায় তাদেরকে আহ্বান করা হয়েছে এবং আমদানির ওপর শুল্ক আরোপ করেছে। কৃষকও ধানের ন্যায্যমূল্য পেতে শুরু করেছে। এক সপ্তাহের অস্থিরতা ছিল, সেটি নিয়েই বিশেষজ্ঞরা বক্তব্য রাখেন।

আর যারা স্লোগান দিতেন শ্রমিকের মজুরি হতে হবে সাড়ে ৩ কেজি চালের সমান, সেই মজুরি শেখ হাসিনা ১২ থেকে ১৫ কেজিতে নিয়ে যাবার পরও তারা প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে, সমালোচনাও করে। আমরা সমালোচনা চাই, কিন্তু তা যেন অন্ধ না হয় এবং রাষ্ট্র যে অনেক দূর এগিয়ে গেছে সেটির জন্য প্রশংসা করবেন। যে কাজগুলো অন্য সরকার এমনকি অন্য দেশও করতে পারেনি,

সেগুলো শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই সরকার করতে সক্ষম হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিন, প্রশংসা করুন, বিভ্রান্তিকর কোনো তথ্য সংবাদ আকারে ছড়ানো থেকে বিরত থাকুন।’ আয়োজক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও প্রখ্যাত অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরীর সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের মধ্যে সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, এমপি, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া, এডভোকেট বলরাম পোদ্দার ও প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী মোঃ রফিকুল আলম সভায় বক্তব্য রাখেন।