প্রানী সম্পদ অধিদপ্তরের প্রধান কর্মকর্তার অবহেলায় ঝিনাইদহের একটি হনুমানের মৃত্যুর আশংক্সক্ষায় এলাকাবাসী উদ্বিগ্ন

শামীমুল ইসলাম শামীম, ঝিনাইদহ: কয়েকদিন ধরেই পানাহার বন্দ। বাশঁবাগানে দুই মাস অবস্থান। গোটা মহল্লাবাসী উদ্দীক। কি, ভাবছেন কে মরতে বসেছে আবার? ঠিকই ভেবেছেন, মরতে বসেছে। তবে কোন মানুষের মৃত্যুর আশংঙ্কা নয়! মৃত্যুর কাছে যে কোন সময় হার মানতে হবে এক হনুমানকে। আর এ হনুমানকে ঘিরেই গোটা এলাকাবাসী উদ্বিগ্ন। ঝিনাইদহ ওয়াজির আলী স্কুল এন্ড কলেজের পূর্ব পাশের ডিসি অফিসের সাবেক ট্রেজারি একাউন্টেন্ট খলিলুর রহমানের বাশঁবাগানে প্রায় ২ মাস যাবত অবস্থান করছে একটি হনুমান।
তিনি কলা, পেয়ারা, ক্ষিরা, আম, আলু খাদ্য পরিবেশন এর মাধ্যমে হনুমানটিকে বাঁচিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে পানি পান না করায় উক্ত খলিলুর রহমান চিন্তিত হয়ে স্থানীয় প্রাণী সম্পদ ও বনবিভাগ কর্তৃপক্ষের স্মরণাপন্য হয়েও কোন সহযোগীতা না পেয়ে নিরুপায় হয়ে পড়েছেন। অবিলম্বে হনুমানটিকে সু-চিকিৎসা দেওয়া না হলে যে কোন মুহূর্তে চিরবিদায় নিতে পারে বলে আশঙ্খা প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে এই হনুমানটি ওই এলাকার গাছে গাছে ঘুরে বেড়ায়। এই দৃশ্য স্থানীয় বাসীদের কাছে খুবই পরিচিত। কিন্তু খেলতে খেলতে একটি হনুমান বাশঁঝাড়ে এসে দুই মাস অবস্থান করছে । প্রায় হনুমানটিকে এলাকার মানুষ দলে দলে ছুটে আসে দেখতে। মাঝে মধ্যে ভিড় জমে যায়। কিন্তু কখনই এই হনুমানটি এলাকার মানুষের ওপর তেমনভাবে কোনও অত্যাচার করেনি। ফলে বাশঁবাগানের মালিকের পরিবার ও এলাকার মানুষের সঙ্গে হনুমানদের একটা সহজ সম্পর্ক তৈরি হয়ে গিয়েছে।
সেকারণে পশুসম্পদ কর্মকর্তাদের অবহেলায় ওই হনুমানের মৃত্যুর আশংক্সক্ষায় ঝিনাইদহের বনবিভাগের কর্মকর্তা হাফিজুর রহমানের উপর স্থানীয়রা ক্ষুব্দ এবং অত্যন্ত দুঃখজনক বলেই মনে করেছেন।বার বার জানানোর পরও পশু অধিদপ্তরের কোন লোক একবারও খোজ নেওয়ার প্রয়োজন মনে করলেন না তারা। এলাকার মানুষ একত্রিত হয়ে ঠিক করেছেন হনুমানটির মৃত্যু হলে বনবিভাগের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে হনুমানটিসহ মিছিল করে বন অধিদ্ধসঢ়;প্তর ঘেরাও করবেন তাদের বিচারের দাবিতে।
হনুমান হলেন হিন্দু ধর্মের একজন দেবতা যিনি রামের একনিষ্ঠ ভক্ত। হিন্দু পুরাণে হনুমানকে বিশেষ স্থান দেওয়া হয়েছে। রামায়ণ বর্ণিত হনুমান পবননন্দন হিসেবে হিন্দুদের নিকট পূজনীয়। রামায়ণের মূল চরিত্র রাম যাকে হিন্দুরা ভগবান বিষ্ণুর অবতার হিসেবে দাবি করে তার অনুগত চরিত্র হিসেবে পাওয়া যায় এই হনুমানকে। হনুমান নাকি চির শাশ্বত। তাঁর বিনাশ নেই। কিংবদন্তি বলে, তিনি আশীর্বাদ পেয়েছিলেন, যতদিন পৃথিবীতে রামের মহিমা থাকবে, ততদিন হনুমানও থাকবেন।
আর রামচন্দ্রের মহিমা তো আবহমান কাল জুড়েই থাকবে। অর্থাৎ পবনপুত্র ও থাকবেন পৃথিবীতে। কোথাও না কোথাও কোনও অবতারে। ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ মহোদ্বয়সহ জেলা বন বিভাগ অধিদপ্তরের কর্মকর্তদের নিকট স্থানীয় বাসিদের আকুতি দ্রুত হনুমানটিকে উদ্ধার করে জেলা পশুসম্পদ অধিদপ্তরে নিয়ে সুচিকিৎসার মাধ্যমে হনুমানটির জীবন রক্ষার জন্য জেলা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট আকুল আবেদন জানিয়েছেন।