শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত- আমসহ উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি কাল বৈশাখীর তান্ডবে লন্ড ভন্ড গাংনী

মজনুর রহমান আকাশ, গাংনী,মেহেরপুরঃ বুধবার সন্ধ্যা রাতে মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কাল বৈশাখী ঝড়ে অন্ততঃ শতাধিক কাঁচা ও আধাপাঁকা ঘরবাড়ি বিধ্বস্তসহ গাছ পালাসহ উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে গাছ ও ঘরের ছাউনি উড়ে যাবার সময় আহত হয়েছেন অন্ততঃ শতাধিক লোকজন। আহতদের মধ্যে ৫ জনকে গুরুতর অবস্থায় গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বামন্দি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা যায়, বুধবার বিকেল থেকেই পশ্চিম- উত্তর কোনে মেঘের ঘনঘটা দেখে অনেকেই আঁঁচ করেন কাল বৈশাখীর। ঠিক সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে শুরু হয় কাল বৈশাখীর তান্ডবলীলা। ৩০ মিনিটে গাংনীর বিভিন্ন অঞ্চলের উপর দিয়ে বয়ে যায় ঝড়। এ ঝড়ে শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়। মাঠের উঠতি ফসল ও আম বাগানের গাছ পালা ভেঙ্গে আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ঘরবাড়ি ধ্বসে ও গাছ চাপা পড়ে শতাধিক আহত হয়।
আহতদের মধ্যে মহেষপুরের রাজ্জাকের স্ত্রী জাহানারা খাতুন (৩০), শিমুলতলা গ্রামের আছিয়া খাতুন (৬৫) কে বামন্দি ক্লিনিক ও কামারখালি গ্রামের খলিল (৩২), উত্তর ভরাট গ্রামের আজগর আলী (২৭) কে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে কাল বৈশাখীর তান্ডবলীলায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বিদ্যুত ব্যবস্থা। বুধবার সন্ধ্যা রাত থেকে গোটা গাংনী উপজেলায় বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। তাছাড়া উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরের একটি মেহগনি গাছউপগেন পাবলিক লাইব্রেরীসহ তিনটি অফিসের টিনের ছাউনী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একই সাথে উড়ে যায় মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের টিনের ছাউনী।
গাংনী পল্লী বিদ্যুত সূত্র জানিয়েছে, বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের তারের উপর গাছ পালা পড়ে তার ছিড়ে যাওয়া ছাড়াও বৈদ্যুতিক পোল উপড়ে গেছে। পোল স্থাপন ও গাছপালা পরিষ্কার করে বিদ্যুত সচল করতে জোর প্রচেষ্ঠা চালানো হচ্ছে। বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যা অব্দী বিদ্যুত সরবরাহ সচল করা সম্ভব হতে পারে। বলে জানিয়েছেন গাংনী পল্লী বিদ্যুত অফিসের ডিজিএম নিরাপদ দাস। গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার কেএস সাহাব উদ্দীন জানান, মাঠের ধান ও সবজি ছাড়াও আমের ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে।
তবে কি পরিমান ক্ষতি হয়েছে তা এ মুহুর্তে বলা সম্ভব হচ্ছে না। উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগন এলাকা জরিপ করছেন। দুয়েক দিনের মধ্যে জানানো সম্ভব হবে। গাংনী উপজেলা নির্বাহি অফিসার বিষ্ণুপদ পাল জানান, গাংনী উপজেলার ৯ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার সকল স্থানেই কাল বৈশাখীর ঝড়ে ছোবল দেয়। তবে গাংনী শহরতলী, বামন্দী ও সাহারবাটি ইউনিয়ন সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বেশী। ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগীতার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।