প্রধান মেনু

শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের ৫৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির বাণী

প্রধানমন্ত্রীর বাণী: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৭ এপ্রিল শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের ৫৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন : ‘‘অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এবং বাংলার কৃষক ও মেহনতী মানুষের অকৃত্রিম বন্ধু শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হক-এর ৫৭তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর স্মৃতির প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। শেরে বাংলা এ দেশের কৃষক সমাজের অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করতে আজীবন কাজ করে গেছেন। কৃষকদের অধিকার আদায়ে তিনি সব সময় ছিলেন সোচ্চার। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে আবুল কাশেম ফজলুল হক দরিদ্র কৃষক এবং প্রজাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য কৃষিঋণ আইন, প্রজাসত্ব (সংশোধন) আইনসহ বিভিন্ন আইন প্রণয়ন করেন। তিনি ছিলেন উপমহাদেশের এক অনন্য সাধারণ প্রজ্ঞাবান ও বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ। রায়তদের ওপর জমিদারগণ যে আবওয়াব ও সেলামি ধার্য করতেন, তিনি তার বিলোপ সাধন করেন। তাঁর সাহসী নেতৃত্ব, উদার ও পরোপকারী স্বভাবের জন্য জনগণ তাঁকে ‘শেরে বাংলা’ বা ‘বাংলার বাঘ’ খেতাবে ভূষিত করেন। বাংলার গরিব-দুঃখী মানুষের জন্য তাঁর অসীম মমত্ববোধ ও ভালোবাসা এ দেশের মানুষকে চিরদিন অনুপ্রাণিত করবে। আমি মহান আল্লাহর দরবারে তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।’’

রাষ্ট্রপতির বাণী: রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ২৭ এপ্রিল শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের ৫৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন : ‘‘উপমহাদেশের বরেণ্য রাজনীতিবিদ শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের ৫৭তম মৃত্যুবার্ষিকীতে আমি এই মহান নেতার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক ছিলেন উপমহাদেশের এক অনন্য সাধারণ প্রজ্ঞাবান ও বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ। ১৮৭৩ সালের ২৬ অক্টোবর তৎকালীন বাকেরগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া গ্রামে মাতুলালয়ে তাঁর জন্ম। শৈশব থেকেই তিনি ছিলেন অসাধারণ মেধার অধিকারী। নবাব স্যার সলিমুল্লাহ ও নবাব নওয়াব আলী চৌধুরীর কাছে রাজনীতিতে তাঁর হাতেখড়ি। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে তিনি বঙ্গীয় আইন পরিষদের সদস্য, সর্বভারতীয় মুসলিম লীগের সভাপতি (১৯১৬-১৯২১), কলকাতার মেয়র (১৯৩৫), অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী (১৯৩৭-১৯৪৩), পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী (১৯৫৪), পূর্ব বাংলার গভর্নরের (১৯৫৬-১৯৫৮) পদসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি ছিলেন অসাধারণ মেধাবী ও বাগ্মী। তিনি একাধারে বাংলা, ইংরেজি ও উর্দু ভাষায় অনর্গল বক্তৃতা করতে পারতেন। দক্ষ রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবক হিসেবে প্রায় অর্ধ-শতাব্দীর অধিককাল তিনি গণমানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন। হক সাহেব ছিলেন গণমানুষের নেতা। তিনি কৃষক ও শ্রমিকদের স্বার্থে ১৯৩৬ সালে কৃষক প্রজা পার্টি (কেপিপি) এবং ১৯৫৩ সালে শ্রমিক-কৃষক দল প্রতিষ্ঠা করেন। অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শেরে বাংলা এ অঞ্চলের মানুষের শিক্ষা, রাজনীতি, সমাজ সংস্কারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের উজ্জল দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। বাংলার শোষিত ও নির্যাতিত কৃষক সমাজকে ঋণের বেড়াজাল থেকে মুক্তির লক্ষ্যে তাঁর উদ্যোগে গঠিত ‘ঋণ সালিশী বোর্ড’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বঙ্গীয় চাকুরি নিয়োগ বিধি, প্রজাস্বত্ব আইন, মহাজনী আইন, দোকান কর্মচারী আইন প্রণয়নের ফলে এ অঞ্চলের অবহেলিত কৃষক-শ্রমিক উপকৃত হন। এই বরেণ্য রাজনীতিবিদ ১৯৬২ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। কৃষক-শ্রমিক তথা মেহনতি মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে তাঁর অবদান জাতি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে। এ কে ফজলুল হকের অসাধারণ ব্যক্তিত্ব, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতা আগামী প্রজন্মের জন্য অনুসরণীয় হয়ে থাকবে। আমি এ মহান নেতার ৫৭তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।’’