জাতীয় আয়কর দিবসে প্রধানমন্ত্রীর ও রাষ্ট্রপতির বাণী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় আয়কর দিবস উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন : “জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের উদ্যোগে ৩০ নভেম্বর ২০১৮ জাতীয় আয়কর দিবস পালিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষে আমি দেশের সকল করদাতা এবং আয়কর বিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। কর আহরণের পাশাপাশি সামাজিক ন্যায়বিচার ও সমতা নিশ্চিত করাই কর বিভাগের প্রধান কাজ। এ লক্ষ্যে, ‘উন্নয়ন ও উত্তরণ, আয়করের অর্জন, স্লোগানকে সামনে রেখে এ বছর জাতীয় আয়কর দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে – ‘আয়কর প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে সামাজিক ন্যায়বিচার ও ধারাবাহিক উন্নয়ন নিশ্চিতকরণ’। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার পাশাপাশি রাষ্ট্রের রাজস্ব ভা-ারকে সমৃদ্ধ করার মাধ্যমে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দেশে রাজস্ববান্ধব সংস্কৃতি গড়ার লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিভিন্ন উদ্ভাবনী কর্মসূচির ছোঁয়া জাতীয় পর্যায় থেকে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। অভূতপূর্ব সাড়া আর করদাতাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী এক ছাদের নীচে করসেবা প্রদানের মাধ্যমে ১৩-১৯ নভেম্বর আয়কর মেলা-২০১৮ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানী ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরে ৭ দিন, ৫৬টি জেলা শহরে ৪ দিন, ৩২টি উপজেলায় ২ দিন এবং ৭০টি উপজেলায় ১ দিনব্যাপী এবছর আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবছর আয়কর মেলায় করদাতাদের অভূতপূর্ব সাড়া কর আহরণে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। ৭ দিনে ২,৪৬৮ কোটি ৯৪ লক্ষ ৪০ হাজার ৮৯৫ টাকার রেকর্ড পরিমাণ আয়কর আহরিত হয়েছে। আয়কর প্রদানকে সামাজিক মর্যাদার প্রতীক হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে এবং করদাতাগণকে স্বপ্রণোদিতভাবে কর প্রদানে আগ্রহী ও অনুপ্রাণিত করতে ‘জেলাভিত্তিক সর্বোচ্চ ও দীর্ঘ সময় করদাতাদের পুরস্কারপ্রদান নীতিমালা-২০০৮, প্রণয়ন করা হয়। এ নীতিমালা অনুযায়ী প্রতিবছর ৩টি ক্যাটাগরিতে ট্যাক্স কার্ড এবং ১৪১ জন করদাতাকে সর্বোচ্চ ও দীর্ঘমেয়াদি কর প্রদানের ভিত্তিতে সম্মাননা সনদ প্রদান করা হচ্ছে। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতির ৭৬ নম্বর আদেশ বলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গঠন করে। অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণে এই বোর্ডকে অধিকতর দক্ষ, কার্যকর, গতিশীল এবং শক্তিশালী করার যাবতীয় উদ্যোগ আমরা গ্রহণ করেছি। আমি আশা করি, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড রাজস্ব আহরণের মাধ্যমে সরকারের রূপকল্প-২০২১ ও রূপকল্প- ২০৪১ বাস্তবায়নে আরো কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে। আমি জাতীয় আয়কর দিবস ২০১৮ এর সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”
রাষ্ট্রপতির বাণীঃ
রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ জাতীয় আয়কর দিবস উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক ৩০ নভেম্বর জাতীয় আয়কর দিবস পালনের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। এ উপলক্ষে আমি সম্মানিত করদাতা এবং কর বিভাগের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আয়কর কেবল রাজস্ব আহরণের প্রধান খাতই নয়, এটি অর্থনৈতিক ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কার্যকরী মাধ্যম। প্রত্যক্ষ কর বা আয়কর পৃথিবীর সকল উন্নত রাষ্ট্রের প্রধান রাজস্ব উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়। রূপকল্প ২০২১ এবং রূপকল্প ২০৪১ এর পথ ধরে সুখী-সমৃদ্ধ ও উন্নতদেশ গড়ার পথে অগ্রসর হচ্ছে বাংলাদেশ। এ লক্ষ্য অর্জনে আয়কর প্রদানকারীর সংখ্যা এবং আয়করখাতে রাজস্ব আহরণ বাড়ানো আবশ্যক। ‘উন্নয়ন ও উত্তরণ, আয়করের অর্জন’- স্লোগানকে সামনে রেখে এ বছর জাতীয় আয়কর দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘আয়কর প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে সামাজিক ন্যায়বিচার ও ধারাবাহিক উন্নয়ন নিশ্চিতকরণ’ যা বর্তমান প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক বলে আমি মনে করি। উন্নয়নের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে অভ্যন্তরীণ সম্পদের পর্যাপ্ত যোগান অপরিহার্য। মুক্তবাজার অর্থনীতির এ যুগে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আহরণের উৎস হিসেবে আয়করের গুরুত্ব প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আয়কর নিয়ে জনগণের মধ্যে একধরনের ভীতি কাজ করে থাকে। তাই সম্মানিত করদাতাদের কাক্সিক্ষত করসেবা প্রদানের লক্ষ্যে বিগত ১৩-১৯ নভেম্বর দেশব্যাপী আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমি জেনে খুশি হয়েছি যে এ বছর আয়কর মেলায় সাত দিনে ২,৪৬৮ কোটি ৯৪ লক্ষ ৪০ হাজার ৮৯৫ টাকার রেকর্ড পরিমাণ আয়কর সংগ্রহ হয়েছে। আয়কর মেলা ও আয়কর দিবস আয়োজনের মধ্য দিয়ে দেশে কর সংস্কৃতির লালন ও বিকাশ ত্বরান্বিত হবে- এ প্রত্যাশা করি। জাতীয় আয়কর দিবস ২০১৮ উদযাপন সফল ও সার্থক হোক।
খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”